‘ইলিয়াস’ গল্পে ইলিয়াসের স্ত্রীর চরিত্র বিশ্লেষণ করো

'ইলিয়াস' গল্পে ইলিয়াসের স্ত্রীর চরিত্র বিশ্লেষণ করো
‘ইলিয়াস’ গল্পে ইলিয়াসের স্ত্রীর চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

ভূমিকা

চরিত্ররূপায়ণ ছোটোগল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। লিও তলস্তয়ের ‘ইলিয়াস’ গল্পে এক অনন্যসাধারণ নারী চরিত্র হল ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগি। নিম্নলিখিত গুণাবলির সমাহারে শাম-শেমাগির চরিত্রটি প্রস্ফুটিত হয়েছে।

পরিশ্রমী

প্রথম জীবনে ইলিয়াস অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তার সঙ্গ দিয়েছে তার স্ত্রী। এ প্রসঙ্গে বলা হল- “সে আর তার স্ত্রী সকলের আগে ঘুম থেকে ওঠে আর সকলের পরে ঘুমোতে যায়।”

বড়োলোক হবার পরও তার এই চরিত্রের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। শেষজীবনে যখন মহম্মদ শা-র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে তখনও তার পরিশ্রমের ঘাটতি দেখা যায়নি। জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে একই পরিশ্রম সেও করে গেছে।

কর্তব্যপরায়ণ স্ত্রী

ইলিয়াসের জীবনে সুখের সময় যেমন তার স্ত্রী পাশে ছিল, দুঃখের সময়েও কিন্তু সে পাশেই ছিল; সঙ্গ ছাড়েনি। একজন যোগ্যতম স্ত্রী হিসেবে সমস্ত গুণাবলি তার মধ্যে ছিল। অতিথি আপ্যায়নে সে কোনো কার্পণ্য করেনি। নির্দ্বিধায় সে সমস্ত দায়িত্ব পালন করে গেছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা

একসময় অত্যন্ত সম্পন্ন হলেও পরে যখন মহম্মদ শা-র বাড়িতে কাজ করতে গিয়েছে তখনও পিছ-পা হয়নি সে বরং সেই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সে সক্ষম হতে পেরেছে।

গভীর জীবনবোধ

জীবনের শেষপর্যায়ে পৌঁছে জীবনের স্বরূপটি উদ্‌ঘাটনে সক্ষম হয়েছে সে। সঙ্গী হয়েছে তার স্বামীও। এই সময় সে অনায়াসেই বলতে পেরেছে- “যখন ধনী ছিলাম, বুড়োর বা আমার এক মুহূর্তের জন্যও শান্তি ছিল না,—কথা বলবার সময় নেই। অন্তরের কথা ভাববার সময় নেই, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবার সময় নেই। দুশ্চিন্তারও অন্ত ছিল না।” ইলিয়াসের স্ত্রী পরবর্তীকালে বুঝতে পেরেছে সেগুলি সবই মোহ। এই কারণেই সবসময় বিষয়সম্পত্তির হিসেব এসব নিয়েই ভাবত, কিন্তু আজ তার জীবনবোধ আলাদা। আর এই জীবনবোধের ফলেই সে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে।

Leave a Comment