‘ইলিয়াস প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ দিল।”-প্রতিবেশী কে? তাকে ধন্যবাদ দেবার কারণ কী? |
ইলিয়াসের প্রতিবেশী
‘ইলিয়াস’ গল্পে ইলিয়াস মুখ্য চরিত্র হলেও কিছু পার্শ্বচরিত্র ইলিয়াসের জীবনকে বেশ প্রভাবিত করেছিল, এমনই এক চরিত্র মহম্মদ শা-যে সমগ্র গল্পে ইলিয়াসের প্রতিবেশী রূপেই পরিচিত। ইলিয়াসের দ্বিতীয় পর্যায়ের জীবনের পর্বান্তর ঘটে এই প্রতিবেশীর সাহায্যের জন্যই। প্রশ্নাংশে ‘প্রতিবেশী’ বলতে মহম্মদ শা কেই বোঝানো হয়েছে।
প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ দেওয়ার কারণ
প্রথম জীবনে ইলিয়াস দরিদ্র থাকা সত্ত্বেও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ৩৫ বছর পরে প্রভূত সম্পত্তি গড়ে তোলে। এই সময় তার খুব ‘বোলবোলাও’। কিন্তু ইলিয়াসের এই পরিস্থিতিকে হিংসা করতে থাকে পাড়া প্রতিবেশীর বেশ কিছু অংশ। তাদের কুনজরের কারণেই হোক অথবা ইলিয়াসের দুর্ভাগ্যের জন্যই হোক ইলিয়াসের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে। সকলেরই বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু ইলিয়াস বড়োলোক হবার পর থেকে তার ছেলেরা আয়েশি হয়ে উঠল। বড়োটি মারা গেল, আর ছোটোটিকে বিবাহের পর অশান্তির কারণে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল। এই সময় ইলিয়াস তাকে একটা বাড়ি দিল কিছু ঘোড়া গোরুও দিল। ফলে তার সম্পত্তিতে টান পড়ল। এর উপর আবার কিরবিজরা তার ঘোড়া চুরি করে নিয়ে গেল।
ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ল। তার উপর বার্ধক্যও তাকে পীড়া দিল। এহেন পরিস্থিতি সামলে ওঠা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ল। সম্বলের মধ্যে রইল একটা বোঁচকা-যাতে কোট, টুপি, জুতো, বুট ছিল আর তার সঙ্গী হল তার স্ত্রী। ইতিমধ্যে ইলিয়াসের বিতাড়িত পুত্রটি চলে গেছে অনেক দূর, মেয়েটিও মারা গেছে-সে এই সময় একেবারে একা হয়ে পড়ল। এই সময় ইলিয়াসের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ ছিল না-কারণ তারা সকলেই একসময় ইলিয়াসকে হিংসা করত, তাই তাদের দুঃখে ওদের কারো প্রতিক্রিয়া হল না, কেবল মহম্মদ শা নামে এক প্রতিবেশী ছাড়া। সে ইলিয়াসকে পছন্দ করত। তাই তাদের দুঃখের অংশীদারি হবার জন্য সে বলল–
“ইলিয়াস, তুমি আমার বাড়ি এসে আমার সঙ্গে থাকো। বুড়িকেও নিয়ে এসো। আমি তোমাদের দুজনেরই খাওয়া-পরা দেবো।”