‘শুনে অতিথিরা ভাবতে বসল।” -কোন্ কথা শুনে অতিথিরা ভাবতে বসল? সেকথা ভাবার মতো কেন?

'শুনে অতিথিরা ভাবতে বসল।" -কোন্ কথা শুনে অতিথিরা ভাবতে বসল? সেকথা ভাবার মতো কেন
‘শুনে অতিথিরা ভাবতে বসল।” -কোন্ কথা শুনে অতিথিরা ভাবতে বসল? সেকথা ভাবার মতো কেন?

লিও তলস্তয়ের ‘ইলিয়াস’ গল্পের একেবারে শেষ অংশ এটি, যেখানে গল্পকার জানিয়েছেন সাধারণ এক বাস্কি ইলিয়াসের জীবনের রোমাঞ্চকর উত্থানপতনের কাহিনি এবং শেষে সুখ প্রাপ্তিতে তাদের অন্তরে উদ্বোধিত অবিশ্বাস্য গল্পকথা।

অতিথিদের ভাবনার কারণ

বিত্তশালী ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগি সর্বহারা হয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রিত থেকে, দিনমজুরের মতো জীবন কাটিয়ে প্রকৃত সুখের পরশ পায়। প্রভূত বৈভবের মাঝে থেকেও যে সুখ মেলেনি, ভাগ্যবিড়ম্বিত হয়ে সর্বহারা দম্পতি সে বহুকাঙ্ক্ষিত সুখের দেখা পেল-সেই আপাত অবিশ্বাস্য কাহিনিকে যথার্থ বলে নিদান দিলেন জনৈক মোল্লা।

মহম্মদ শা-র বাড়িতে দূরাগত অতিথিদল এলে বৃদ্ধ দম্পতি তাদের আপ্যায়ন করে তুষ্ট করে। অতিথিদের কৌতূহল চরিতার্থ করতে বৃদ্ধা শাম-শেমাগি তাদের বৈভবে পূর্ণ জীবন এবং সেই বিত্তশালী অবস্থা থেকে সর্বহারা হবার কাহিনি তুলে ধরে। কিন্তু আপাত অবিশ্বাস্য হলেও মিতভাষী শাস্ত্রজ্ঞ মোল্লা যখন সেই অশ্রুতপূর্ব ঘটনাকে সরবে সমর্থন করে, তখন সমাগত অতিথিরা তাদের সাময়িক বিস্ময় কাটিয়ে ইলিয়াসের জীবনকাহিনিকে সত্য বলে মেনে নিল।

ভাবনার বিষয় হওয়ার কারণ

অতিথিরা মহম্মদ শা-র বাড়িতে এসেছিল সাময়িক বিনোদনের মাধ্যমে সময় কাটাতে। তাদের সেই অগভীর ভাবনায় প্রথমে সমর্থন পায়নি ইলিয়াসের অবিশ্বাস্য জীবনকাহিনি। কিন্তু জীবন অভিজ্ঞতায় পুষ্ট শাস্ত্রজ্ঞ মোল্লা যখন সে কাহিনির সঙ্গে পবিত্র গ্রন্থের সাদৃশ্য খুঁজে পায় এবং সে কাহিনিকে সরবে সমর্থন করে, তখন অতিথিদল সকল দ্বিধামুক্ত হয়ে বিশ্বাস করতে থাকে ইলিয়াস-শাম-শেমাগির জীবনকথাকে। প্রাচুর্য-বৈভব যে জীবন থেকে সুখ কেড়ে নেয়, সর্বহারা হলেও পাওয়া যায় মহার্ঘ সুখের ঠিকানা-সেই সত্যের দ্বারে পৌঁছে অভিভূত হয় অতিথিদল।

Leave a Comment