‘গর্ত ছাড়ি ভুজঙ্গ ভাসিয়া বুলে জলে।’-কার লেখা, কোন্ রচনার অংশ? ‘ভুজঙ্গ’ গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল কেন? |
ভুজঙ্গ বেরিয়ে আসার কারণ
দৈবাদেশে কলিঙ্গদেশের উপর অকাল প্রাকৃতিক দুর্যোগের করাল ছায়াপাত ঘটেছিল। ঈশান কোণ থেকে ঘন কালো মেঘ উত্থিত হয়ে ক্রমে সমগ্র কলিঙ্গের আকাশকে ছেয়ে ফেলেছিল। মেঘকর্ষণে বিদ্যুৎপ্রবাহ আতঙ্ক সৃষ্টি তো করেছিলই, সেইসঙ্গে ঘন ঘন বজ্রপাতে দশদিক প্রকম্পিত হয়েছিল। শুরু হয়েছিল অকালবর্ষণ, ঝড়। একটানা সাতদিন নিরন্তর বৃষ্টি হয়ে চলেছিল। দিনরাত্রির প্রভেদ যেমন ঘুচে গিয়েছিল, তেমনি জলস্থলের পার্থক্যও মুছে গিয়েছিল। এতটুকু রৌদ্রকিরণ দৃষ্ট হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল দিকহস্তিরা অর্থাৎ অষ্ট-গজরাজ চারি মেঘে তাদের শুণ্ড থেকে সমানে বারিবর্ষণ করে চলেছে। জলের স্রোত ক্রমে হয়ে ওঠে পর্বতপ্রমাণ, যার দোলায় দুলতে থাকে মানুষের ঘরবাড়ি। ভুজঙ্গ অর্থাৎ সর্প বিবরবাসী। এত জলের সমাগমে তাদের বাসা ডুবে গিয়েছিল, বাসাহারা এই সরীসৃপ তাই গর্ত ত্যাগ করে উঠে আসতে বাধ্য হয়েছিল জলের উপরিভাগে। তারাও ভয়ার্ত এবং দিশাহারা। জীবন তাদের বিপন্ন। কবি বলছেন, ‘জলে মহী একাকার’। তাই মাটি ডুবে থাকার কারণেই ভুজঙ্গ বা সাপ গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল।