‘নামলে আবার ছুটে আসে সান্ধ্য নদীর হাওয়া।’-নদীর হাওয়া কোথায় ছুটে আসে? নদীর হাওয়া ছুটে আসার তাৎপর্য নির্দেশ করো

'নামলে আবার ছুটে আসে সান্ধ্য নদীর হাওয়া।'-নদীর হাওয়া কোথায় ছুটে আসে? নদীর হাওয়া ছুটে আসার তাৎপর্য নির্দেশ করো
‘নামলে আবার ছুটে আসে সান্ধ্য নদীর হাওয়া।’-নদীর হাওয়া কোথায় ছুটে আসে? নদীর হাওয়া ছুটে আসার তাৎপর্য নির্দেশ করো।
উদ্ধৃতিটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা ‘অন্ধকার বারান্দা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আবহমান’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। গ্রামবাংলার সৌন্দর্যের আবহমানতার কথা কবির অনুভবে ধরা পড়েছে আলোচ্য কবিতায়। নদীমাতৃক এই বাংলার গ্রামজীবনে পুনরায় চলে আসা প্রবাসী বাঙালির কাছে ফিরে আসে তার অতি পরিচিত প্রাকৃতিক অনুষঙ্গ-নদীর সান্ধ্য বাতাস।

তাৎপর্য

আলোচ্য কবিতায় কবি বঙ্গপ্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন কয়েকটি প্রাকৃতিক অনুষঙ্গের ব্যবহারে। নদীমাতৃক এই বাংলার সঙ্গে বঙ্গবাসীর আত্মীয়তার কথা বলতে গিয়ে কবি নদীতীরের স্নিগ্ধ-শীতল হাওয়ার প্রসঙ্গ এনেছেন। যে হাওয়ার সঙ্গে বাংলার মানুষের পরিচয় বহুকালের। আসলে বঙ্গপ্রকৃতির সঙ্গে বাঙালির আত্মীয়তা তাকে বাধ্য করে বারে বারে প্রকৃতিলগ্ন বাংলার গ্রামজীবনে ফিরে আসতে। আলোচ্য কবিতায় কবির যে সত্য অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে তা মানুষের ঘরে ফেরার গল্প, যে গল্প ফুরোয়নি। অতীতের চাঁদ সদাগরের চম্পক নগরীতে ফিরে আসার কথা যেমন ভিন্ন অনুভবে ধরে রেখেছেন জীবনানন্দ ‘রূপসী বাংলায়’, অরুণ মিত্র যেমন ‘জনমদুখিনির ঘর’-এ ফেরার গল্প বলেছেন, তেমনই নীরেন্দ্রনাথ তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় ঘরছাড়া মানুষকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছেন। নদীর ছুটে আসা হাওয়া যেন আপ্যায়ন করেছে প্রবাসী মানুষটিকে। গ্রামজীবনের সঙ্গে তথা প্রকৃতির সঙ্গে লগ্ন হয়ে বেঁচে থাকার স্বাদ এবং সাধ তাই ফুরিয়ে যায়নি মানুষের, ফুরিয়ে যায় না। তাই কবির অনুভবে লাউমাচাটার পাশে ছোট্ট একটা ফুল দুলতেই থাকে ‘এখনও’।

Leave a Comment