রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন কেন গঠিত হয়? |
ভূমিকা
ভারতে বহু ভাষাভাষী মানুষ পাশাপাশি বসবাস করে। তাই প্রশাসনিক ও অন্যান্য কারণে রাজ্য পুনর্গঠন প্রয়োজনীয় ছিল। ভাষা-সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে অন্ধ্র, পাঞ্জাব প্রভৃতি রাজ্যে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করে।
রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করার কারণ
বিভিন্ন কারণে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গড়ে ওঠে। যেমন–
[1] রাজ্যসীমা: ইংরেজ আমলে রাজ্যগুলির সীমা গড়ে উঠেছিল প্রশাসনিক সুবিধা অনুসারে। স্বাধীন ভারতে তাই তার পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল।
[2] দেশীয় রাজ্যের সংযুক্তি: ভারতের বহু দেশীয় রাজ্য পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়। ফলে রাজ্যসীমা বিন্যাসের দরকার হয়।
[3] অন্ধ্র আন্দোলন: তামিল অধ্যুষিত মাদ্রাজ অঞ্চল থেকে তেলুগু অধ্যুষিত অন্ধ্রের পৃথকীকরণের দাবি ওঠে। স্বাধীনতা সংগ্রামী পাত্তি শ্রীরামালু এই দাবিতে ৫৮ দিন অনশন করে প্রাণত্যাগ করেন। এর ফলে ব্যাপক গণ আন্দোলন সংগঠিত হয়।
‘রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন’ গঠন
পাত্তি শ্রীরামালুর আন্দোলনের ফলে সরকার ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করে। সৈয়দ ফজল আলি (সভাপতি), হৃদয়নাথ কুঞ্জরু, কে এম পানিক্কর এই কমিশনের সদস্য হন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে তদন্ত শেষে কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভারত সরকার ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাস করে।
মূল্যায়ন
এই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ভারতের রাজ্যসীমার পরিবর্তন হয়। ফলে অনেক নতুন রাজ্যের সৃষ্টি হয়। ক্ষোভ-বিদ্বেষ থাকলেও বলা যায়, তৎকালীন পরিস্থিতিতে এই কাজ ছিল যথাযথ।