বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের অবদান কী? |
ভূমিকা
ব্রিটিশ সরকারবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে পাহাড়তলি ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ ও দখল তাঁর অন্যতম প্রধান কীর্তি। তিনি হলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রথম নারী শহিদ।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্ম
প্রীতিলতা ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ৫ মে চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের শিক্ষা
চট্টগ্রামের খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয় থেকে পাস করার পর তিনি ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ ও কলকাতার বেথুন কলেজে পড়াশোনা করেন।
বিপ্লবী দলে যোগদান
ঢাকায় পড়ার সময় তিনি লীলা নাগের দীপালি সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন। দীপালি সংঘে যোগ দিয়ে তিনি লাঠিখেলা, ছোরাখেলার প্রশিক্ষণ নেন। তিনি ছাত্রী সংঘের সদস্যা হন। তারপর মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী দলের প্রথম মহিলা সদস্যা হন তিনি।
বিপ্লবী কার্যকলাপ
প্রীতিলতা মাস্টারদার নেতৃত্বে বিপ্লবী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করেন।
ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ : চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকে পাহাড়তলি স্টেশনের কাছের এই ইউরোপিয়ান ক্লাবটি ছিল ব্রিটিশদের প্রধান প্রমোদকেন্দ্র। এই ক্লাবের সামনেই লেখা থাকত ‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ’।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা আনুমানিক রাত ১০টা ৪৫ মিনিট নাগাদ এই ক্লাব আক্রমণ করে।
এই ক্লাবঘরে তখন প্রায় ৪০ জন ইউরোপিয়ান ছিল। বিপ্লবীদের আক্রমণে ১ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মৃত্যু
ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণকালে প্রীতিলতা গুলিবিদ্ধ হন। তিনি তাঁর সঙ্গীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে বিপ্লবী পরিকল্পনা অনুসারে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
মূল্যায়ন
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রথম নারী শহিদ হিসেবে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। তাঁর আত্মবলিদান স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেছিল।