কার্লাইল সার্কুলার কী

কার্লাইল সার্কুলার কী
কার্লাইল সার্কুলার কী

ভূমিকা

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের বড়োলাট লর্ড কার্জন বাংলা দ্বিখণ্ডিত করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে সংঘটিত বঙ্গভঙ্গবিরোধী স্বদেশি আন্দোলনে বাংলার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। তবে বাংলার ছাত্রসমাজ ছিল এই আন্দোলনের প্রধান চালিকাশক্তি।

স্বদেশি আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা

বাংলার ছাত্রসমাজ স্বদেশি আন্দোলনে নির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে যোগদান করে। বিদেশি পণ্যদ্রব্য বর্জন, সরকারি স্কুল-কলেজ বয়কট, রাজনৈতিক সভায় অংশগ্রহণ প্রভৃতির মাধ্যমে বাংলার জনসমাজকে তারা উজ্জীবিত করে তোলে।

কার্লাইল সার্কুলার ঘোষণা

ছাত্রসমাজের এই একনিষ্ঠ ভূমিকা ব্রিটিশ সরকারকে বিব্রত করে তোলে। স্বদেশি আন্দোলনের মূল প্রাণশক্তি যেহেতু বাংলার ছাত্রসমাজ, তাই আন্দোলন থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রেখে আন্দোলনকে দুর্বল করাই ছিল ব্রিটিশ সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য। সরকার এসময় দমননীতির আশ্রয় গ্রহণ করে। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর ছাত্রদের বিরুদ্ধে দমনমূলক কার্লাইল সার্কুলার জারি করা হয়।

কার্লাইল সার্কুলারের বক্তব্য

এই সার্কুলারে বলা হয়-

[1] সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে বা ছাত্ররা যদি স্কুল বা কলেজ পরিত্যাগ করে তাহলে তার সরকারি অনুমোদন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

[2] এসময় বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল করে বহু ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয় ইত্যাদি।

অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি গঠন

কার্লাইল সার্কুলারের প্রতিবাদে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ নভেম্বর বিশিষ্ট ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু-র নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রদের শিক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা করা এবং স্বদেশি আন্দোলনের প্রচার ও প্রসার ছিল এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য।

Leave a Comment