অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। |
ভূমিকা
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ নভেম্বর শচীন্দ্রপ্রসাদ বসুর নেতৃত্বে অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটির সম্পাদক ছিলেন শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু ও সভাপতি ছিলেন কৃষ্ণকুমার মিত্র।
অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠার পটভূমি
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ভাইসরয় লর্ড কার্জনের আমলে বাংলা ভাগ (বঙ্গভঙ্গ) করা হয়। এর প্রতিবাদে সারা বাংলা জুড়ে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন গড়ে ওঠে। বাংলার স্কুল-কলেজের ছাত্ররা ব্যাপকভাবে এই আন্দোলনে যোগদান করে। সরকার ছাত্রদের আন্দোলন থেকে দূরে রাখার জন্য ছাত্রবিরোধী বিভিন্ন সার্কুলার জারি করে। যেমন-
[1] কার্লাইল সার্কুলার (১০ অক্টোবর, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ)।
[2] লিয়ন সার্কুলার (১৬ অক্টোবর, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ)।
[3] পেডলার সার্কুলার (২১ অক্টোবর, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ) প্রভৃতি।
সার্কুলারগুলির মূল কথা
ছাত্রবিরোধী এইসব সার্কুলারের মূল বক্তব্য ছিল যেসব ছাত্ররা বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে যোগদান করবে তাদের স্কুল-কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হবে। ছাত্রদের ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি দেওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠা
ছাত্রবিরোধী সার্কুলারগুলি প্রয়োগ করে আন্দোলনে যোগদানকারী অনেক ছাত্রকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু ‘অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেন ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ নভেম্বর।
অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি
অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও কর্মসূচিগুলি হল-
[1] বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রদের শিক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা করা।
[2] অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে স্বদেশি দ্রব্য বিক্রির ব্যবস্থা করা।
[3] স্বদেশি আন্দোলনের প্রচার ও প্রসার এবং বিদেশি দ্রব্য বয়কট করা।
মূল্যায়ন
বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটির গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ছিল সরকারের ছাত্রবিরোধী বিভিন্ন সার্কুলারের যোগ্য জবাব। অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটির মাধ্যমে স্বদেশি আন্দোলন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে।