আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো

আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো
আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকা

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গান্ধিজি ৭৮ জন অনুগামী নিয়ে সবরমতী আশ্রম থেকে ২৪ দিনে ২৪১ মাইল পথ অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল গুজরাটের ডান্ডিতে পৌঁছোন। ৬ এপ্রিল ডান্ডির সমুদ্রতটে গান্ধিজি নিজের হাতে লবণ তৈরি করে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন। এরপর সারা দেশে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়। এই আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা

ছাত্ররা বিভিন্নভাবে আইন অমান্য আন্দোলনে শামিল হয়।

  • আইন অমান্য আন্দোলনেও ছাত্ররা স্কুল-কলেজ বয়কট করে।
  • বিদেশি দ্রব্যের দোকানের সামনে পিকেটিং করে।
  • বিদেশি দ্রব্যে অগ্নিসংযোগ করে।

আন্দোলনের বিস্তার

ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্ররা আইন অমান্য আন্দোলনে শামিল হয়। বাংলা, গুজরাট, আসাম, যুক্তপ্রদেশ ইত্যাদি অঞ্চলে এই আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা যায়।

গুজরাটে:
গুজরাটের সুরাট, আহমেদাবাদ, খেদা জেলার স্কুল-কলেজের ছাত্ররা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নেয়।

বাংলায়: কলকাতার ছাত্র ও শিক্ষক সম্প্রদায় আইন অমান্য আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। আন্দোলনের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়।

বরিশালে ছাত্রীরা কলেজের প্রবেশপথে ছাত্র-শিক্ষকদের পথ আটকান। পুলিশ ব্রিটিশ পতাকা (ইউনিয়ন জ্যাক) লাগানো গাড়িতে করে এলে ছাত্রীরা স্লোগান দেয়- ‘up up national flag, down down the Union Jack’

মধ্যপ্রদেশে:
মধ্যপ্রদেশে স্কুল ও কলেজগুলিতে বয়কট আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। এখানের সব সরকারি কলেজ, ১৮টি উচ্চ সরকারি বিদ্যালয় এবং ৪টি অ্যাংলো-ভার্নাকুলার বিদ্যালয় আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকে।

আসামে : 
আসামের ছাত্র আন্দোলনের চাপে সরকার বিচলিত হয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে প্রায় ৩ হাজার ছাত্র স্কুল ছেড়ে ধর্মঘট পালন করে। আসামে সরকারি স্কুল-কলেজে আক্রমণ করা হয়েছিল। সাতটি স্কুলে আগুনও লাগানো হয়েছিল। আসাম থেকে মোট ২৩৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

সরকারি দমননীতি

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত একটানা দমনপীড়ন চলতে থাকে। ছাত্র-যুব সংগঠনগুলি বেআইনি বলে ঘোষিত হয়। নির্দেশ জারি করা হয় যে, ছাত্রদের রাতে বাইরে থাকা যাবে না, তাদের সঙ্গে পরিচয়পত্র রাখতে হবে ইত্যাদি। বিভিন্ন কারণে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীদের স্কুল-কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মূল্যায়ন

ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আইন অমান্য আন্দোলন ছাত্রদের অংশগ্রহণে ব্যাপক আকার ধারণ করে। ছাত্র আন্দোলন দমন করার জন্য শিক্ষা বিভাগের অধিকর্তা কানিংহাম একটি নির্দেশিকা জারি করে ছাত্রদের আন্দোলনে যোগদানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

Leave a Comment