বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কেন
|
ভূমিকা
বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনে অগ্নিযুগের তিন বিখ্যাত বিপ্লবী হলেন- বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত। এঁরা বিনয়-বাদল-দীনেশ বা সংক্ষেপে ‘বি-বা-দী’ নামেও পরিচিত। এঁদের উল্লেখযোগ্য বিপ্লবী কার্যাবলি ছিল মহাকরণ বা রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান।
পরিচয়
বিনয়কৃষ্ণ বসু: বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সদস্য ও মেডিক্যাল ছাত্র বিনয়কৃষ্ণ বসু ঢাকায় পুলিশের ইনস্পেকটর জেনারেল লোম্যানকে হত্যা (১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৩১ আগস্ট) করার পর ছদ্মবেশে কলকাতায় পালিয়ে আসেন।
বাদল গুপ্ত: ছাত্রাবস্থায় রাজনীতিতে যোগদান করেছিলেন। তিনি ‘বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স’ (বি ভি)-এর লেফটেন্যান্ট পদপ্রাপ্ত ছিলেন।
দীনেশ গুপ্ত: বাংলার অন্যতম বিপ্লবী বিনয় ও বাদলের সহযোগী বিপ্লবী ছিলেন দীনেশ গুপ্ত।
রাইটার্স বিল্ডিং (মহাকরণ) অভিযান ও অলিন্দ যুদ্ধ
বিনয়-বাদল-দীনেশ মিলিতভাবে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ডিসেম্বর বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের মূল কেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করেন। এখানে তাঁদের আক্রমণে কারা বিভাগের ইনস্পেকটর জেনারেল কর্নেল সিম্পসন নিহত হন। বিচার বিভাগের সচিব নেলসন গুলিবিদ্ধ ও চিফ সেক্রেটারি টাউনসেন্ট-সহ অনেকে আহত হন।
এরপর তাঁরা রাইটার্স বিল্ডিং-এর অলিন্দে এসে গুলি চালাতে থাকেন। এর মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরাও তাঁদের ঘিরে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এই ঘটনা ইতিহাসে অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত।
অলিন্দ যুদ্ধে বিপ্লবীদের পরিণতি
এই ঘটনার পর তাঁরা ইংরেজদের হাতে ধরা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিনয় ও দীনেশ নিজেদের গুলি করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে আহত হন। বাদল পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। বিনয় হাসপাতালে মারা যান। দীনেশ গুপ্ত বেঁচে ওঠেন এবং বিচারে তাঁর ফাঁসি হয় (১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৭ জুলাই)।
মূল্যায়ন
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিনয়-বাদল-দীনেশ স্মরণীয় হয়ে আছেন। বাংলার এই বিপ্লবী ত্রয়ীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম বদলে বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (বি-বা-দী বাগ) রাখা হয়েছে।