বৌদ্ধ দর্শনের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি কী
বৌদ্ধ দর্শনের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি কী |
বৌদ্ধ দর্শনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য
বৌদ্ধ দর্শনের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
[1] প্রবক্তা: বৌদ্ধ দর্শনের মুখ্য প্রবক্তা হলেন গৌতম বুদ্ধ।
[2] ধর্ম ও নৈতিকতা থেকে দর্শন: বৌদ্ধ দর্শন প্রথমদিকে ধর্ম ও নৈতিকতার বিষয়রূপে গণ্য ছিল। পরবর্তী পর্বে তা দর্শনের স্বীকৃতি লাভ করেছে।
[3] দুঃখের নিবৃত্তি: বুদ্ধদেব নিছক দার্শনিক তত্ত্ব আলোচনায় আগ্রহী ছিলেন না। মানুষকে দুঃখ থেকে মুক্তি দেওয়াই ছিল তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য।
[4] ত্রিপিটক: বুদ্ধদেবের নৈতিক ও ধর্মীয় উপদেশাবলি তিনটি পিটকে দেখা যায়। এই তিনটি পিটককে একসঙ্গে বলা হয় ত্রিপিটক।
[5] পালি ভাষার ব্যবহার: বুদ্ধদেবের উপদেশাবলির পিটকগুলি পালি ভাষায় লিখিত।
[6] সম্প্রদায়: বৌদ্ধরা দুটি ব্যাপক সম্প্রদায়ে বিভক্ত। এই দুটি ব্যাপক সম্প্রদায় হল হীনযান সম্প্রদায় ও মহাযান সম্প্রদায়।
[7] বস্তুবাদ ও ভাববাদ: হীনযানীরা হলেন বস্তুবাদী, কিন্তু মহাযানীরা হলেন ভাববাদী।
[৪] উপসম্প্রদায়: হীনযানীরা দুটি উপসম্প্রদায়ে বিভক্ত- সৌত্রান্তিক ও বৈভাষিক। মহাযানীরাও আবার দুটি উপসম্প্রদায়ে বিভক্ত- মাধ্যমিক এবং যোগাচার।
[9] চারটি আর্যসত্য: বৌদ্ধ দর্শনের মূলভিত্তি হল চারটি আর্যসত্য। এগুলি হল- দুঃখ আছে, দুঃখের কারণ আছে, দুঃখের নিবৃত্তি আছে এবং দুঃখ নিবৃত্তির পথ বা মার্গ আছে।
[10] কার্যকারণ তত্ত্ব: বৌদ্ধ দর্শনে কার্যকারণ নিয়মকে মানা হয়েছে। বৌদ্ধ দর্শনের কার্যকারণ তত্ত্বটির নাম হল প্রতীত্যসমুৎপাদ তত্ত্ব।
[11] ক্ষণিকত্ববাদ: বৌদ্ধ দর্শনে বস্তুর অস্তিত্বকে ক্ষণিক বলা হয়েছে। এজন্যই তাঁরা ক্ষণিকত্ববাদ প্রচার করেছেন।
[12] কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদ: নাস্তিক সম্প্রদায় রূপে গণ্য হলেও বৌদ্ধ দর্শনে কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদকে স্বীকার করা হয়েছে।
[13] নৈরাত্মবাদ: বৌদ্ধ দর্শনে চিরন্তন ও শাশ্বত আত্মাকে স্বীকার করা হয়নি। আত্মা সম্পর্কিত তাঁদের মতবাদ তাই নৈরাত্মবাদ নামে খ্যাত।
[14] নির্বাণ: বৌদ্ধ দর্শনে দুঃখ থেকে মুক্তিকেই বলা হয়েছে নির্বাণ। এই নির্বাণ লাভই হল প্রত্যেকটি মানুষের চরম লক্ষ্য।