পুন্নাপ্রা-ভায়ালার সংগ্রাম টীকা লেখো |
পুন্নাপ্রা-ভায়ালার সংগ্রাম
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্রের দ্বারা যে-সমস্ত দেশীয় রাজ্যকে স্বাধীন রাখা হয়, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যটি। ১৯৪০-এর দশকে সেখানে রাজতন্ত্রের আড়ালে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান চালু করতে সচেষ্ট হন রামস্বামী আইয়ার। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ত্রিবাঙ্কুরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ চরম খাদ্যাভাব দেখা দেয়। এই রাজ্যের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি ছিল নারকেল-ছোবড়া শিল্প। কিন্তু ১৯৪৬-এর দশকে এই শিল্পেও অবনতি হতে থাকে। কৃষকরা ক্রমশ চরম নির্যাতনের শিকার হয়। এই পরিস্থিতিতে কমিউনিস্ট নেতারা ত্রিবাঙ্কুরের বিভিন্ন অঞ্চলে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলেছিলেন। তারা অনুভব করেছিলেন সংবিধান পরিবর্তন থেকেও বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতির মোকাবিলা জরুরি। মূলত তাদের নেতৃত্বে কৃষক ও শ্রমিকরা দেওয়ান-শাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে। কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলিতে পুলিশি নির্যাতন চরমে ওঠে। কৃষক-শ্রমিকরা আলেপ্পিতে ধর্মঘট করে এবং পুন্নাপ্রার পুলিশচৌকিতে সফল আক্রমণ চালায়। এই লড়াইয়ে বহু পুলিশও প্রাণ হারায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ত্রিবাঙ্কুরে সামরিক আইন জারি করা হয়।
মূল্যায়ন
পুন্নাপ্রা-ভায়ালার সংগ্রামের অন্যতম নেতা কে সি জর্জ এই আন্দোলনকে ‘অমর’ আখ্যা দিয়েছেন। ব্যর্থ হলেও এই আন্দোলন আজও মানুষের কাছে পবিত্র ক্ষেত্র বলে চিহ্নিত। কংগ্রেসের অনবরত চাপে স্বাধীনোত্তর ভারতে দেশীয় রাজ্য ত্রিবাঙ্কুরকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করতে তৎপর ও সফল হয়।