অসহযোগ আন্দোলনের সময় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও

অসহযোগ আন্দোলনের সময় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও
অসহযোগ আন্দোলনের সময় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও।

ভূমিকা

মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে পরিচালিত প্রথম সর্বভারতীয় গণ আন্দোলন ছিল অসহযোগ আন্দোলন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দেয়। সামাজিক শ্রেণি হিসেবে কৃষকশ্রেণির যোগদান এই আন্দোলনকে একটি বিশেষ মাত্রা দান করে।

কর্মসূচি ও প্রসার

এই আন্দোলনের কর্মসূচিতে সালিশি বোর্ড গঠন, চরকা ও খাদির প্রসার, খাজনা বন্ধের কথা ছিল। এগুলি কৃষকদের আকৃষ্ট করে। ফলে আন্দোলন বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

যুক্তপ্রদেশ

মদনমোহন মালব্য যুক্তপ্রদেশ কিষানসভা (১৯১৮ খ্রি.) এবং বাবা রামচন্দ্র অযোধ্যা কিষানসভা (১৯২০ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে প্রতাপগড়, রায়বেরিলি, ফৈজাবাদ, সুলতানপুর ও অন্যান্য জেলার কৃষকেরা সংগঠিত হয়। তারা তালুকদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে।

বিহার

স্বামী বিদ্যানন্দের নেতৃত্বে বিহারের দ্বারভাঙা, মুজফ্ফরপুর, পূর্ণিয়া ও ভাগলপুরে প্রবল কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে। আন্দোলনের চাপে জমিদাররা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় বন্ধ করে।

রাজস্থান

বিজয় সিং পথিক, মানিকলাল ভার্মা, মোতিলাল তেজওয়াত রাজস্থানের কৃষকদের সংগঠিত করে বিজোলিয়া সত্যাগ্রহ করেন। ভিল কৃষকরা খাজনা বন্ধ আন্দোলন করে।

বাংলা

বাংলার চট্টগ্রামের কৃষকেরা উগ্র আন্দোলন শুরু করে। পূর্ব বাংলার বিভিন্ন জেলায় খাজনা বন্ধ আন্দোলন হয়। চিত্তরঞ্জন দাশ কৃষকদের সংগঠিত করার চেষ্টা করেন। মেদিনীপুরে বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন।

অন্যান্য স্থান

আলি মুসালিয়র ও ইয়াকুব হাসানের নেতৃত্বে মোপালা কৃষকেরা, আল্লুরি সীতারাম রাজুর নেতৃত্বে অন্ধ্রের কৃষকেরা, গুন্টুর-পালনাদ ও কুদাপ্পার কৃষকেরাও আন্দোলন করে।

মূল্যায়ন

মহাত্মা গান্ধি বিহারের চম্পারণে এবং গুজরাটের খেদায় সত্যাগ্রহ আদর্শের যে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন তার সাফল্য এই আন্দোলনে দেখতে পাওয়া যায়। চৌরিচৌরার বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া অধিকাংশ স্থানেই কৃষকেরা সংগঠিত আন্দোলন করে দাবি আদায়ে সমর্থ হয়।

Leave a Comment