অহিংস-অসহযোগ আন্দোলন পর্বে (১৯২০-২২ খ্রিস্টাব্দ) বাংলায় কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও

অহিংস-অসহযোগ আন্দোলন পর্বে (১৯২০-২২ খ্রিস্টাব্দ) বাংলায় কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও
অহিংস-অসহযোগ আন্দোলন পর্বে (১৯২০-২২ খ্রিস্টাব্দ) বাংলায় কৃষক আন্দোলনের পরিচয় দাও।

ভূমিকা

ভারতের জাতীয় আন্দোলনের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলন এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে লালা লাজপত রায়ের সভাপতিত্বে কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে (কলকাতায়) মহাত্মা গান্ধি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের পরিকল্পনা পেশ করেন।

অহিংস-অসহযোগ আন্দোলন পর্বে বাংলায় কৃষক আন্দোলন

অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর গান্ধিজির নেতৃত্বে সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক শ্রেণি হিসেবে কৃষক সমাজের যোগদান আন্দোলনকে বিশেষ মাত্রা দান করে।

আন্দোলনের প্রসার

অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচিতে সালিশি বোর্ড গঠন, খাজনা বন্ধ, চরকা ও খাদির প্রসার প্রভৃতির কথা বলা হয়। কৃষকরা এগুলির দ্বারা বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়।

পূর্ববঙ্গের কৃষকদের আন্দোলন

পূর্ববঙ্গের পাবনা, বগুড়া, চট্টগ্রাম, রাজশাহি, রংপুর, কুমিল্লা জেলায় কৃষক আন্দোলনের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। এখানকার মুসলিম কৃষকরা যারা খিলাফৎ আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল তারা সক্রিয়ভাবে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেয়।

বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রামে কৃষকদের আন্দোলন

বীরভূম, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামের সাঁওতালদের ভেতর তীব্র উন্মাদনা দেখা দেয়। ঝাড়গ্রামের সাঁওতালরা কংগ্রেস নেতা শৈলজানন্দ সেনের নেতৃত্বে খাজনা প্রদান বন্ধ করে।

মেদিনীপুরে কৃষকদের আন্দোলন

মেদিনীপুরে কৃষক সম্প্রদায় সক্রিয়ভাবে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের নেতৃত্বে কাঁথি ও তমলুক মহকুমায় ইউনিয়ন বোর্ডবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।

উপসংহার

অসহযোগ আন্দোলন পর্বে সংঘটিত কৃষক আন্দোলন ব্রিটিশবিরোধী জাতীয় আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে, যেখানে বাংলার কৃষকদের ভূমিকা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment