কেরালার মালাবার অঞ্চলের ‘মোপােলা বিদ্রোহ’ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো। |
ভূমিকা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে। এইসব কৃষক আন্দোলনগুলি কৃষকদের স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি জাতীয় আন্দোলনকেও শক্তিশালী করেছিল। এরূপ একটি কৃষক আন্দোলন হল মালাবার অঞ্চলে সংগঠিত মোপালা বিদ্রোহ।
মোপালা বিদ্রোহের কারণ
[1] মালাবার অঞ্চলের মুসলিম কৃষক সম্প্রদায় ‘মোপালারা’ ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে জমিদার শ্রেণির শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
[2] দীর্ঘদিনের অন্যায় ও সামন্ততান্ত্রিক শোষণ তো ছিলই, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল খলিফাকে তাঁর হৃতরাজ্যে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার ধর্মীয় উন্মাদনা এবং ইংরেজবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনের ঢেউ।
বিদ্রোহের নেতৃত্ব ও চরিত্র
[1] মাধবন নায়ার, গোপাল মেনন, ইয়াকুব হাসান প্রমুখ নেতারা মোপালা বিদ্রোহকে সংগঠিত করেন।
[2] ‘মোপালা বিদ্রোহ’ মূলত একটি কৃষক বিদ্রোহ হলেও কিছুদিনের মধ্যেই তা কার্যত সাম্প্রদায়িক চরিত্র ধারণ করে। বিদ্রোহীরা প্রায় ৬০০ হিন্দুকে হত্যা এবং ২৫০০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করে।
[3] বিদ্রোহীরা জমিদারদের বাড়ি, কাছারি, থানা ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরের উপর আক্রমণ চালায়। মালাবারের প্রধান শহরগুলি ব্রিটিশদের হাতে থাকলেও তিন মাস ধরে গ্রামাঞ্চলের পূর্ণ অধিকার ছিল বিদ্রোহীদের হাতে।
পরিণতি
মোপালা বিদ্রোহে প্রায় ১০,০০০ মোপালার মৃত্যুতে গান্ধিজি মর্মাহত হয়েছিলেন। এই আন্দোলন ধীরে ধীরে হিংসাত্মক হয়ে উঠলে ব্রিটিশ সরকার কঠোরভাবে এই আন্দোলনকে দমন করে।