ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতির সমালোচনা কীভাবে করা হয়? |
ভূমিকা
ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতির সমালোচনা
কেরানি তৈরির শিক্ষা: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে ভারতে ঔপনিবেশিক শিক্ষা প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল সস্তার কেরানি তৈরি করা। কারণ স্বল্প বেতনে কেরানির চাকরি করার জন্য ব্রিটেন থেকে লোক পাওয়া সম্ভব ছিল না। এই কারণে অনেকে এই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যঙ্গ করে ‘গোলদীঘির গোলামখানা’ বলত।
উচ্চশ্রেণির শিক্ষা: ঔপনিবেশিক শিক্ষা ছিল সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তারা ব্যাবসা ও পেশাগত কারণে ঔপনিবেশিক শিক্ষাকে গ্রহণ করেছিল। আর ভারতের অধিকাংশ মানুষ ছিল এই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।
ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা: ঔপনিবেশিক শিক্ষা ছিল মূলত ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদান। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় দেশের অধিকাংশ মানুষ এই শিক্ষাগ্রহণে বঞ্চিত ছিল।
শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে ব্যবধান : ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার বড়ো ত্রুটি ছিল শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে বিরাট ব্যবধান সৃষ্টি। শিক্ষিত ইংরেজি-জানা মানুষেরা গ্রামের অশিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে একাত্ম হতে পারেনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একেই কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “ইংরেজি শিখে যারা বিশিষ্টতা পেয়েছিল তাদের মনের মিল হয় না সর্বসাধারণের সঙ্গে। দেশে সবচেয়ে বড়ো জাতিভেদ এখানেই।” তাই গ্রামের মানুষ শিক্ষিত মানুষকে ভক্তি করল, শ্রদ্ধা করল, ভয়ও করল কিন্তু আপন বলে মনে করল না।