১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ধর্মীয় কারণ কী ছিল?

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ধর্মীয় কারণ কী ছিল
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ধর্মীয় কারণ কী ছিল?
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বড়োেলাট লর্ড ক্যানিং-এর শাসনকালে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ সংঘটিত হয়েছিল। ওই বিদ্রোহের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ভারতীয়দের ধর্মীয় অসন্তোষ।

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ধর্মীয় কারণসমূহ

খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রচেষ্টা

ভারতে আগত খ্রিস্টান মিশনারিদের কার্যকলাপ ভারতীয়দের শঙ্কিত করেছিল। খ্রিস্টান মিশনারিরা দরিদ্র ভারতীয়দের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের জন্য প্রলুব্ধ করত। তারা হিন্দু ও ইসলামধর্মের নিন্দা করত এবং তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করত।

সরকারের ভূমিকা

ভারতের ইংরেজ সরকার ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে ‘২১নং রেগুলেশন’ জারি করে ধর্মান্তরিতদের পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার দান করেছিল বলে ভারতীয়রা ক্ষুব্ধ হয়েছিল। তা ছাড়া খ্রিস্টান মিশনারিরা স্বাধীনভাবে জেলখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল প্রভৃতি স্থানে প্রবেশ করে ধর্মপ্রচার করতে পারত যা ভারতীয়দের অসন্তুষ্ট করেছিল।

সংস্কারমূলক কার্যাবলি

ইংরেজি শিক্ষা, নারীশিক্ষা, বিধবাবিবাহ প্রবর্তন এবং সতীদাহ, গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন প্রভৃতি নিবারণ আইন পাস হলে ভারতীয়দের মনে ইংরেজদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল। তা ছাড়া গঙ্গানদীতে সেচব্যবস্থা প্রবর্তন ও রেলওয়ে প্রতিষ্ঠা রক্ষণশীল ভারতীয়দের ক্ষুব্ধ করেছিল।

সরকারি ঘোষণা

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পূর্বে কোম্পানির চেয়ারম্যান আর ডি ম্যাঙ্গেলস ঘোষণা করেছিলেন, খ্রিস্টধর্মের বিজয় পতাকা ভারতের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত উড্ডীন রাখার জন্য ঈশ্বর (God) হিন্দুস্তানের শাসনভার ইংরেজদের হাতে তুলে দিয়েছেন। তাই ভারতীয়দের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করা প্রতিটি ইংরেজদের পবিত্র কর্তব্য।
বিদ্রোহের শেষে বিচারের সময় অনেক বিদ্রোহী স্বীকার করেছিল যে, তারা ধর্মরক্ষার জন্য ইংরেজদের ধ্বংস করতে চেয়েছিল।

Leave a Comment