১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ফলাফল আলোচনা করো

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ফলাফল আলোচনা করো
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ফলাফল আলোচনা করো।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। লেপেল গ্রিফিন-এর মতে, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ভারতের আকাশ থেকে বহু মেঘ দূর করেছিল (The Revolt of 1857 swept the Indian Sky clear of many clouds) |

ফলাফলসমূহ

কোম্পানি শাসনের অবসান

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর ভারতে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে। কোম্পানির বদলে ইংল্যান্ডের মহারানি ভিক্টোরিয়া ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। ভারত শাসনের জন্য রাজপ্রতিনিধি বা ভাইসরয় নিযুক্ত হন। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন পাস হয়।

ক্ষয়ক্ষতি

বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহী ও শাসক- উভয়পক্ষই নিষ্ঠুরতা দেখায়। ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসের ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

শাসনকাঠামোর পরিবর্তন

ইংল্যান্ডের যে সংস্থাগুলির মাধ্যমে ভারতের শাসনকার্য পরিচালিত হত সেগুলির পরিবর্তন ঘটে। ১৫ সদস্যের ইন্ডিয়া কাউন্সিল গঠিত হয়। এই কাউন্সিলের সভাপতি হন ভারত-সচিব (Secretary of the State for India)। তিনি ছিলেন ভারত বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার একজন মন্ত্রী।

সামরিক সংস্কার

সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার জন্য এই বিভাগে ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়। যেসব জাতির সৈন্যরা বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিল তাদের ‘অসামরিক’ আর যেসব জাতির সৈন্যরা বিদ্রোহ দমনে সরকারকে সাহায্য করেছিল তারা ‘সামরিক’ জাতি হিসেবে আখ্যা পায়। পাঠান, শিখ, গোর্খাদের বেশি সংখ্যায় সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হয়। গোলন্দাজ বাহিনীতে কেবল ইংরেজদের নিয়োগ করা হয়। ইউরোপীয় সৈন্যের অনুপাত বৃদ্ধি করে বিভেদনীতি প্রয়োগ করা হয়।

নতুন আদর্শ

বিদ্রোহ দমন করে এলাহাবাদের এক দরবারে মহারানির ঘোষণাপত্র জারি করা হয়। সম-অধিকার, রাজাদের দত্তকপুত্র গ্রহণ করা, রাজ্যজয় না করা, প্রজাস্বাধীনতার কথা ঘোষণা করা হয়। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে Indian Council Act পাস করে বড়োলাটের কাউন্সিলে ভারতীয় সদস্য নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। প্রদেশেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এভাবে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ভারতে এক নবযুগের সূচনা করে।

Leave a Comment