১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ঘটনাকে কি ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বলা যায়

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ঘটনাকে কি 'সিপাহি বিদ্রোহ' বলা যায়
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ঘটনাকে কি ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বলা যায়?

ভূমিকা

ভারত ইতিহাসে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ঘটনাকে কেউ কেউ সিপাহি বিদ্রোহ বলেছেন।

‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বলার কারণ

সূচনা: ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবাসীর বহু ক্ষোভ জমা থাকলেও এই বিদ্রোহের মতো এত বড়ো বিদ্রোহ এর আগে কখনও হয়নি। ভারতীয় সিপাহিরাই এই বিদ্রোহের সূচনা করে।

অংশগ্রহণ:
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ঘটনায় যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল দেশীয় সিপাহিরা।

নেতৃত্ব: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রধান নেতা-নেত্রীরা বেসামরিক ব্যক্তি হলেও তারা সিপাহিদের দ্বারা সমর্থিত ছিল। এই বিদ্রোহের প্রকৃত নেতৃত্বে ছিল সিপাহিরাই। সেনাছাউনি থেকে বিদ্রোহকে জনগণের মধ্যে তারাই ছড়িয়ে দেয়। সরকারি সৈন্যদের সঙ্গে সম্মুখসমরে তারাই লড়াই করে।

বিস্তার: ব্রিটিশ ভারতের যেসব সেনাছাউনিতে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছিল সেই অঞ্চলের জনগণের মধ্যে বিদ্রোহ ছড়িয়েছিল। যেসব সেনাছাউনিতে বিদ্রোহ হয়নি সেখানকার অবস্থা স্বাভাবিক ছিল।

শাস্তিভোগ: বিদ্রোহের সূচনায়, অংশগ্রহণে, নেতৃত্বে যেহেতু সিপাহিদের প্রধান ভূমিকা ছিল তাই বিদ্রোহ শেষে সিপাহিদেরই বেশি শাস্তিভোগ করতে হয়। কামানের গোলা, বন্দুকের গুলি বা ফাঁসির দড়িতে তাদের প্রাণ দিতে হয়।

বিরুদ্ধ মত

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে দেশীয় সিপাহিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল- এ কথা অনস্বীকার্য। কিন্তু এ কথাও সত্য যে, সব দেশীয় সিপাহি বিদ্রোহে যোগদান করেনি। নামুদ্রিপাদ দেখিয়েছেন, যত সংখ্যক সিপাহি বিদ্রোহ করেছিল ততোধিক সিপাহি বিদ্রোহ দমনে অংশ নিয়েছিল।

মূল্যায়ন

যুক্তি, তথ্য ও বিরুদ্ধ মত বিশ্লেষণ করে এ কথা স্বীকার করতেই হয় যে, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ঘটনা ছিল অনেকাংশে সিপাহি – বিদ্রোহ। কোথাও কোথাও এর পিছনে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় জনসমর্থন ছিল। চার্লস রেক্স, কে ম্যালেসন এবং দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় একই মত ব্যক্ত করেছেন।

Leave a Comment