টীকা লেখো: লাইপজিগের যুদ্ধ |
ভূমিকা
জার্মানির একটি অঞ্চলের নাম লাইপজিগ। এখানেই মিত্রশক্তির সঙ্গে নেপোলিয়ানের টানা তিন দিনের যুদ্ধ হয়েছিল।
পটভূমি
রাশিয়া অভিযানে ব্যর্থ হওয়ার পর ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে প্রাশিয়া, রাশিয়া, সুইডেন, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশগুলি 1813 খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ শক্তিজোট গড়ে তোলে।
জার্মানিতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন
নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে 1812 খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ার জনগণের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু হয় এবং ক্রমশ এই আন্দোলন সমগ্র জার্মানিতে বিস্তারলাভ করে।
চতুর্থ শক্তিজোটের আক্রমণ
এই আন্দোলন চলাকালে প্রাশিয়া, রাশিয়া, সুইডেন, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি চতুর্থ শক্তিজোটবদ্ধ দেশগুলি ফ্রান্সকে চতুর্দিক থেকে আক্রমণ করলে নেপোলিয়ান ড্রেসডেনের যুদ্ধে (1813 খ্রিস্টাব্দে) অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করতে সক্ষম হন।
লাইপজিগের যুদ্ধ
মিত্রশক্তি দ্রুততার সঙ্গে ফ্রান্সকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে, জার্মানির লাইপজিগ নামক অঞ্চলে ফ্রান্সের সঙ্গে চতুর্থ শক্তিজোটের যুদ্ধ বাঁধলে এই শক্তিজোটের অগ্রগতি রোধ করার জন্য ফরাসি সেনাপতি ইউজিন এবং সেনাপতি নেওম্যাগডেবার্গ যুদ্ধ চালিয়ে যান। প্রথমদিকে ফরাসি সৈন্যবাহিনী সফল হতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত চতুর্থ শক্তিজোট বা মিত্রবাহিনীর হাতে তারা পরাজিত হয়। এই যুদ্ধ ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ নামেও পরিচিত। নেপোলিয়ানের সেনাবাহিনীর মধ্যে এই যুদ্ধে প্রায় চল্লিশ হাজার সেনা নিহত ও তিরিশ হাজার সেনা বন্দি হয়। অবশেষে জার্মানি নেপোলিয়ানের শাসনমুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
ফ্রান্সের যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থা
লাইপজিগের যুদ্ধে পরাজয়ের কারণে নেপোলিয়ানের সাম্রাজ্যেরও ভাঙন শুরু হয়। ফরাসি সাম্রাজ্য থেকে একে একে ওয়েস্টফেলিয়া, কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন প্রভৃতি অঞ্চল বেরিয়ে আসে। হল্যান্ডও ফরাসি সাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীনতা লাভ করে। ফলে উইলিয়াম অফ অরেঞ্জ হল্যান্ডের রাজা হিসেবে আবার ফিরে আসেন। সেই সঙ্গে অস্ট্রিয়াও তার হারানো রাজ্যকে পুনরায় ফিরে পায়।