নবম শ্রেণি ইতিহাস ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর

সূচিপত্র

নবম শ্রেণি ইতিহাস ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর
নবম শ্রেণি ইতিহাস ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর

ইনটেনডেন্ট নামে কারা পরিচিত ছিলেন?

উত্তর: ফ্রান্সের প্রাদেশিক শাসনকর্তাগণ ইনটেনডেন্ট নামে পরিচিত ছিলেন। প্রাক্-বিপ্লব ফ্রান্সে এঁদের অপ্রতিহত ক্ষমতা ছিল। এঁদের অত্যাচার ও শোষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে ফরাসি জনগণ এঁদের ‘অর্থলোলুপ নেকড়ে’ বলে অভিহিত করেছিল।

কে, কেন প্রাক্-বিপ্লব ফরাসি অর্থনীতিকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’ বলে অভিহিত করেন?

উত্তর: ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ ‘ওয়েলথ অব নেশনস্’ গ্রন্থে প্রাক্-বিপ্লব ফরাসি অর্থনীতিকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’ বলে অভিহিত করেন। কারণ ফ্রান্সের অর্থনৈতিক নীতি, শুল্ক নীতি ও শিল্প নিয়ন্ত্রণ নীতি ছিল বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ও অবাধ বাণিজ্য নীতির পক্ষে বাধাস্বরূপ।

ফিজিওক্র্যাটস্ কাদের বলা হয়?

উত্তর: ফ্রান্সের ফিজিওক্র্যাটস্ নামক দার্শনিকগণ ছিলেন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথের অনুগামী। তাঁরা মার্কেন্টাইল মতবাদের বিরোধী ছিলেন। তাঁরা অবাধ বাণিজ্য ও সার্বজনীন শিক্ষার সমর্থক ছিলেন। তাঁদের মতে, ভূমি কর ছাড়া অন্য কোনো কর থাকবে না। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন কুইজেন ও তুর্গো।

প্রাক্-ফরাসি বিপ্লবকালে ফরাসি সমাজে ‘সুবিধাভোগী’ সম্প্রদায় বলতে কী বোঝ?

পরে প্রাক্-বিপ্লব যুগে ফরাসি সমাজে ‘অধিকারভোগী’ শ্রেণি তাদেরকেই বোঝাতো যারা সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রতি কোনো দায়িত্ব পালন করত না। তারা কেবল সুযোগসুবিধা ভোগ করত। তাদেরকে কোনো কর দিতে হত না। এইসব কারণেই এদেরকে ‘সুবিধাভোগী শ্রেণি’ বলা হত। যাজক ও অভিজাতরা ছিল এই শ্রেণিভুক্ত।

জ্যাকোবিন দল কী?

উত্তর: এস্টেট জেনারেলের অধিবেশনকালে জ্যাকোবিন ক্লাবকে কেন্দ্র করে এই দল গঠিত হয়েছিল। এই দলের সমর্থকদের অধিকাংশ ছিল মধ্য বুর্জোয়া ও সাঁ কুলোৎ এবং এই দলের একজন বিখ্যাত নেতা ছিলেন রোেবসপিয়ার। এই দল জাতীয় কনভেনশনে জিরন্ডিস্টদের ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল।

রুশো (১৭১২-১৭৭৮ খ্রি.) কে ছিলেন?

উত্তর: অষ্টাদশ শতকের চিন্তা ও মননের ক্ষেত্রে পরিবর্তন সূচনাকারী দার্শনিকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় ছিলেন রুশো। তাঁকে ফরাসি বিপ্লবের ‘ঝড়ের পাখি’ বলা হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য একটি গ্রন্থ ছিল ‘সোশ্যাল কন্ট্র্যাক্ট’।

ভেনিস দিদেরো কে ছিলেন?

উত্তর: ভেনিস দিদেরো ছিলেন একজন ফরাসি দার্শনিক। তিনি জড়বাদী দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় বিশ্বকোশ রচনা করেন। এই বিশ্বকোশে তৎকালীন ফরাসি স্বৈরাচার, দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারব্যবস্থা এবং অসম রাজস্ব ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করা হয়।

মন্তেস্কু রচিত দুটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর: ফরাসি দার্শনিক মন্তেস্ক রচিত দুটি বইয়ের নাম হল ‘স্পিরিট অফ দি লজ’ এবং ‘দি পার্সিয়ান লেটার্স’।

‘স্পিরিট অফ দি লজ’ গ্রন্থের লেখক ও তার বিষয়বস্তু কী ছিল?

উত্তর: ‘স্পিরিট অফ দি লজ’ গ্রন্থের লেখক ছিলেন মন্তেস্কু। তিনি ফ্রান্সের একজন চিন্তাবিদ ও দার্শনিক। ওই গ্রন্থে তিনি আইন, শাসন ও বিচারব্যবস্থার বিভাজনের মাধ্যমে ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষার পরামর্শ দেন।

টেনিস কোর্টের শপথ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৫ মে ফ্রান্সে জাতীয় সভার অধিবেশন শুরু হলে জাতীয় সভার ভোটদানের পদ্ধতি নিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির বিরোধ শুরু হয়। তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিগণ মাথাপিছু ভোটের দাবি জানালে রাজা সভার অধিবেশন বন্ধ করে দেন। তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিগণ সভাগৃহ বন্ধ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং জিয়াত্যর নেতৃত্বে পার্শ্ববর্তী টেনিস খেলার মাঠে এই মর্মে শপথ গ্রহণ করেন যে, যতদিন না ফ্রান্সের জন্য একটি কার্যকরী সংবিধান রচিত হচ্ছে ততদিন তারা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। একেই টেনিস কোর্টের শপথ (২০ জুন ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দ) বলে।

‘ক্যাহিয়ে’ বা কেহিয়ার্স কী?

উত্তর: কেহিয়ার্স কথাটির অর্থ অভিযোগের তালিকা। ফ্রান্সের স্টেটস্ জেনারেলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাঁদের নির্বাচনি এলাকা থেকে নির্বাচকদের অভিযোগ ও দাবিদাওয়ার তালিকা নিয়ে আসেন। এগুলিতে শাসনব্যবস্থার ত্রুটিবিচ্যুতি ও দাবিদাওয়ার কথা ছিল। এই কেহিয়ার্স রচনার সময় বুর্জোয়া বুদ্ধিজীবীরাই প্রধান ভূমিকা নেয়।

রোবসপিয়ার কে ছিলেন?

উত্তর ফরাসি বিপ্লবের সময় উগ্রপন্থী জ্যাকোবিন দলের নেতা ছিলেন রোবসপিয়ার। তাঁর নেতৃত্বে ফ্রান্সে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। তিনি ফরাসি বিপ্লবকে অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ও বহিরাক্রমণ থেকে রক্ষা করেছিলেন।

ব্রান্সউইক ঘোষণাপত্রের বিষয়বস্তু কী ছিল?

উত্তর: প্রাশিয়ার সেনা প্রধান ব্রান্সউইক ফরাসি রাজতন্ত্র রক্ষার লক্ষে ২৫ জুলাই, ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে এক ঘোষণাপত্র জারি করেন। এর নাম ‘ব্রান্সউইক ঘোষণাপত্র’। এই ঘোষণাপত্রের দ্বারা তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ফরাসি রাজপরিবারের ওপর আঘাত আসলে তিনি প্যারিস শহর ধ্বংস করে দেবেন।

সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড কী?

উত্তর: প্যারিসের উগ্র প্রজাতান্ত্রিক বিপ্লবীগণ রাজতন্ত্রকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দের ২- ৫ সেপ্টেম্বর বন্দিশালায় প্রবেশ করে ১১০০ রাজতন্ত্রের সমর্থককে নির্বিচারে হত্যা করে। এই ঘটনাই ‘সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড’ নামে খ্যাত। এই হত্যাকাণ্ডের নায়ক ছিলেন জাঁ পল মারা।

জন নিরাপত্তা কমিটি (Committee of Public Safety) কেন গঠিত হয়েছিল?

উত্তর: সন্ত্রাসের রাজত্বের সময় ১২ জন সদস্যকে নিয়ে জন নিরাপত্তা কমিটি গঠিত হয়। এই সমিতি ১৭৯৩-৯৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় মূল ক্ষমতার অধিকারী হয় এবং জাতির নিরাপত্তার জন্য যে-কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব পায়। এই সংগঠনের মুখ্য পরিচালক রোবসপিয়ার বিপ্লব-বিরোধী ব্যক্তিদের নির্মূল করেন।

শ্বেত সন্ত্রাস (White Terror) কারা সৃষ্টি করেছিল এবং কেন?

উত্তর: রোবসপিয়ারের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে লাল সন্ত্রাসের অবসান ঘটে (২৮ জুলাই ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দ)। এরপর রোবসপিয়ার বিরোধীরা একজোট হয়ে যে সন্ত্রাস শুরু করেন তাকে ‘শ্বেত সন্ত্রাস’ বলা হয়। এর নেতৃত্ব ছিল বুর্জোয়াদের হাতে।

ব্যক্তি ও নাগরিক অধিকার ঘোষণায় কী বলা হয়েছিল?

উত্তর: ব্যক্তি ও নাগরিক অধিকার ঘোষণায় বলা হয় যে, (১) স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার (২) আইন জনগণের ইচ্ছার প্রতিফল এবং আইনের চোখে সকল মানুষই সমান, (৩) বাক্‌স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় মানুষের সার্বজনীন অধিকার। (৪) জনগণই রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। (৫) আইনের সাহায্য ছাড়া এ কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার বা কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না।

ডাইরেক্টরি শাসন কী?

উত্তর ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফ্রান্সে যে শাসনব্যবস্থা প্রচলিত ছিল তা ডাইরেক্টরি শাসন নামে পরিচিত। পাঁচজন ডিরেক্টরি বা পরিচালক এই সময় ফ্রান্সের রাজনীতিতে সর্বশক্তিমান হয়ে ওঠেন। এঁরা ছিলেন-বারাস (Baras), লা র‍্যভেলিয়ার (La Ravelliere), ল্যতুনিয়ে (Letourner), রউবেল (Raubel) ও কারনট (Carnot)।

অঁসিয়া রেজিম বলতে কী বোঝ?

উত্তর: অঁসিয়া রেজিম-এর অর্থ হল পূর্বতন সমাজ। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তীকালে ফ্রান্স তথা ইউরোপের অধিকাংশ দেশে যে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল তাকে ‘অঁসিয়া রেজিম’ বা পুরাতনতন্ত্র বা old regime বলা হয়।

ক্যাপিটেশন’ কী?

উত্তর: ফ্রান্সের তিনটি প্রত্যক্ষ করের মধ্যে ক্যাপিটেশন বা উৎপাদন কর অন্যতম। ১৭০১ খ্রিস্টাব্দে যখন এই কর ধার্য করা হয় তখন বলা হয়েছিল এই কর প্রত্যেক ফরাসিবাসীর উপর সমভাবে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু পরবর্তীতে যাজক ও অভিজাত শ্রেণি এই কর থেকে অব্যাহতি পায় এবং একমাত্র সাধারণ শ্রেণিকে এই করভার বহন করতে হয়।

করভি’ কী?

উত্তর: প্রাক্-বিপ্লব যুগে ফ্রান্সে প্রচলিত বাধ্যতামূলক শ্রমকরের নাম ছিল ‘করভি’। সামন্তপ্রভুর সেবায় সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েকদিনের পারিশ্রমিকহীন বাধ্যতামূলক শ্রমদান করতে হত। আর এই পারিশ্রমিকহীন শ্রমদানকে করভি বা শ্রমকর বলা হত।

ফ্রান্সে ‘প্রথম শ্রেণি’ কাদের বলা হত?

উত্তর: প্রাক্-বিপ্লব যুগে ফরাসি সমাজে যাজকদের প্রথম শ্রেণি বলা হত। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে তাদের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার। উচ্চ যাজক ও নিম্ন যাজক এই দুই ভাগে যাজকশ্রেণি বিভক্ত ছিল। মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ না হয়েও সমাজ ও রাষ্ট্রে তারা ছিল অত্যন্ত সুবিধাভোগী। রাষ্ট্রীয় আইনের ঊর্ধ্বে ছিলেন তারা। কনট্র্যাক্ট অব পোইসি নামে এক চুক্তি অনুসারে তারা কেবল ফরাসি রাজাকে এক স্বেচ্ছাকর দিত। আর কোনো প্রকার কর প্রদান করতে হত না।

ফ্রান্সে দ্বিতীয় শ্রেণি কাদের বলা হত?

উত্তর: প্রাক্-বিপ্লব যুগে ফরাসি সমাজে, অভিজাতদের ‘দ্বিতীয় শ্রেণি’ বলা হত। ফরাসি বিপ্লবকালে এদের সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ৫০ হাজার-যা ছিল দেশের মোট জনসংখ্যার ১১/২ শতাংশ। তারা ছিল সমাজের সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী অংশ। সরকারি চাকরি, বিচারবিভাগের উচ্চপদ, প্রশাসন ব্যবস্থা-সব ছিল তাদের অধিকারে।

ফ্রান্সে বুর্জোয়া শ্রেণি’ বলতে কাদের বোঝাত?

উত্তর: বুর্জোয়া শ্রেণি ছিল তৃতীয় সম্প্রদায়ের একটি অংশ। তৃতীয় শ্রেণির এই বুর্জোয়ারাই ছিল বিপ্লবের অগ্রদূত। বড়ো ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও ব্যাংকারদের বলা হত উচ্চ বুর্জোয়া। আইনজীবী, অধ্যাপক, চিকিৎসকদের বলা হত মধ্য বুর্জোয়া। কারিগর, দোকানদার, কৃষক, শ্রমিক প্রভৃতিদের বলা হত নিম্ন বুর্জোয়া। বিদ্যা, বুদ্ধি ও ধনবলে বলীয়ান হয়েও কেবল বংশ কৌলীন্যের অভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রে তারা ছিল অপাঙ্ক্তেয়।

বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সকে রাজনৈতিক কারাগার বলা হত কেন?

বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি জনগণের কোনো ব্যক্তি স্বাধীনতা ছিল না। ‘লেতর দ্য ক্যাশে’ নামক এক পরোয়ানার জোরে যে-কোনো ব্যক্তিকে বিনা বিচারে আটকে রাখা যেত। এভাবে বাস্তিল দুর্গ নিরাপরাধ বন্দিতে ভরে গিয়েছিল। রাজতন্ত্রের সমালোচনা করার কারণে দার্শনিক ভলতেয়ারকেও এই দুর্গে বন্দি থাকতে হয়েছে। বিচারব্যবস্থা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এইসব দিক উপলব্ধি করে ভলতেয়ার’ ফ্রান্সকে ‘রাজনৈতিক কারাগার’ বলেছেন।

‘লেতর দ্য ক্যাশে’ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ‘লেতর দ্য ক্যাশে’ হল ফ্রান্সে প্রচলিত একপ্রকার রাজকীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এই আইন প্রয়োগ করে দেশের যে-কোনো ব্যক্তিকে বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা যেত।

‘লেত্র দ্য গ্রেস’ কী?

উত্তর: অষ্টাদশ শতকে (প্রাক্-বিপ্লব কালে) ফরাসি বিচার ব্যবস্থার ‘লেত্র দ্য গ্রেস’ দ্বারা নাগরিকদের বিচারের ক্ষেত্রে রাজা হস্তক্ষেপ করতে পারতেন। এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে তিনি আদালত দ্বারা প্রদত্ত শাস্তি মুকুব করতে পারতেন। ফলে যে-কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া যেত।

কনট্র্যাক্ট অব পোইসি’ কী?

উত্তর: ফ্রান্সের মোট কৃষি জমির পাঁচভাগের ১ ভাগ ছিল ফরাসি গির্জার অধীনে। এজন্য যাজকদের কোনো কর দিতে হত না। রাজা ও যাজকের মধ্যে ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুসারে রাজাকে তারা একটি স্বেচ্ছাকর দিত। এই চুক্তিকে ‘কনট্র্যাক্ট অব পোইসি’ বলা হত।

প্যাট্রিশিয়ান (Patricians) ও প্লিবিয়ান (Plebeians) কারা?

উত্তর: প্রাক্-বিপ্লব যুগে ফরাসি সমাজে অভিজাতদের ‘প্যাট্রিশিয়ান’ এবং সাধারণ মানুষকে ‘প্লিবিয়ান’ বলা হত।

কাদের ‘পোশাকি অভিজাত’ ও কাদের ‘দরবারি অভিজাত’ বলা হত?

বুরবোঁ রাজারা এক সময় আর্থিক সমস্যার সমাধান করার আশায় খুব উচ্চমূল্যে কিছু প্রশাসনিক পদ বিক্রি করেন। যারা অর্থের বিনিময়ে ওই প্রশাসনিক পদ লাভ করতেন, তাঁরা অভিজাত বলে গণ্য হতেন। এদের বলা হত ‘পোশাকি অভিজাত’। দরবারি অভিজাতরা পোশাকি অভিজাতদের মোটেই গুরুত্ব বা সম্মান দিতেন না।

জন্মসূত্রে যাঁরা অভিজাত ছিলেন তাঁদের ‘দরবারি অভিজাত’ বলা হত। এঁরা তাদের বংশ কৌলীন্য নিয়ে খুব গর্বিত ছিলেন। এদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ হাজার।

মেরি আঁতোয়ানিয়েত কে ছিলেন?

উত্তর: ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই-এর রানি ছিলেন মেরি আঁতোয়ানিয়েত। তিনি ছিলেন অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় লিওপোল্ডের ভগ্নী। মেরি আঁতোয়ানিয়েত অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। তাঁর ব্যক্তিগত ভৃত্যের সংখ্যা ছিল ৫০০।

বিশ্বকোশ সংকলক কারা?

উত্তর: বিশ্বকোশ (Encyclopaedia) সংকলকগণ হলেন- ডেনিস দিদেরো, ডি-এলেমবার্ট, হেলভেটিয়াম প্রমুখ। এদের নেতা ছিলেন দিদেরো। এদের উদ্যোগে ৩৫ খণ্ডের বিশ্বকোশ সংকলিত হয়।

সাঁ কুলোৎ কাদের বলা হত?

উত্তর: ফ্রান্সের ভিটেমাটিহীন ভবঘুরে শ্রেণিকে সাঁ কুলোৎ বলা হত। ‘কুলোৎ’ কথার অর্থ হল যারা ব্রিচেস বা লম্বা মোজা পরে না। এই মোজা পরার ক্ষমতা ফ্রান্সের শহরগুলির দরিদ্র বাসিন্দাদের ছিল না। তাই তারা ব্যঙ্গ করে নিজেদেরকে ‘কুলোৎ’ ছাড়া বা সাঁ কুলোৎ বলত। গৃহভৃত্য, রাজমিস্ত্রি প্রমুখ ছিল সাঁ কুলোৎ শ্রেণিভুক্ত। সাঁ কুলোৎত্রা ছিল ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার ১/৫ অংশ।

মার্কেন্টাইলবাদ কী?

উত্তর: মার্কেন্টাইলবাদের মূলকথা হল অর্থই একমাত্র সম্পদ এবং সেটা সীমিত। সুতরাং বিদেশি মাল অবাধে আমদানি বা খাদ্যশস্য অবাধে রপ্তানি করা যাবে না। শিল্পদ্রব্যের রপ্তানি বাড়িয়ে আমদানি কমাতে হবে। বিদেশি দ্রব্যের ওপর আমদানি শুল্ক বসাতে হবে। কারণ রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হলে দেশের সম্পদ বাইরে বেরিয়ে যাবে। মান্থাস ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য মার্কেন্টাইলবাদী অর্থনীতিবিদ।

কয়েকজন ফিজিওক্র্যাটস-এর নাম লেখো।

উত্তর: কয়েকজন ফিজিওক্র্যাটস হলেন-কুইজনে, তুর্গো, মিরাব্যু, কেনে, নেমুর, গুর্ণে প্রমুখ।

কবে, কার নেতৃত্বে ‘টেনিস কোর্টের শপথ’ অনুষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ‘টেনিস কোর্টের শপথ’ মিরাব্যু ও অ্যাবে সিয়েসের নেতৃত্বে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন অনুষ্ঠিত হয়।

বুর্জোয়া বিপ্লব’ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: টেনিস কোর্টের শপথ অনুষ্ঠান চলাকালীন যাজকদের ১৩৯ জন এবং অভিজাতদের ৪৭ জন প্রতিনিধি তৃতীয় শ্রেণিতে যোগদান করে। এইরূপ পরিস্থিতিতে ২৭ জুন ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ভীত ও হতাশাগ্রস্ত রাজা তৃতীয় শ্রেণির মাথাপিছু ভোটদান ও একই কক্ষে বসার দাবি মেনে নেয়। এই ঘটনা ‘বুর্জোয়া বিপ্লব’ নামে পরিচিত। বুর্জোয়া বিপ্লবের মধ্য দিয়েই ফরাসি বিপ্লবের জয়যাত্রা শুরু হয়।

কোন ঘটনাকে ফরাসি বিপ্লবের ‘ক্ষুদ্র সংস্করণ’ বলা হয়?

উত্তর: ১৭ জুন, ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় শ্রেণি অ্যাবে সিয়েসের প্রস্তাব অনুযায়ী নিজেদের জাতীয় সভা বলে ঘোষণা করে। তাই এই ঘোষণা বিপ্লবকে নবরূপ দান করে। এক আদেশনামায় তারা বলেন যে, যদি এই সভা ভেঙে দেওয়া হয় বা কোনো সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়, তবে রাজাকে কোনো কর দেওয়া হবে না। এই ঘটনাকে ঐতিহাসিক গ্রান্ট ও টেম্পারলি ফরাসি বিপ্লবের ‘ক্ষুদ্র সংস্করণ’ বলেছেন।

‘রাজতন্ত্রের শবযাত্রা’ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৫ অক্টোবর কয়েক হাজার মহিলা খাদ্যের দাবিতে ভার্সাই শহরে উপস্থিত হয় এবং সমগ্র রাজপরিবারকে সাধারণ ঘোড়ার গাড়িতে করে প্যারিসে আসতে বাধ্য করে। কার্যত এই সময় থেকেই রাজা তৃতীয় সম্প্রদায়ের হাতে বন্দি হন। এই ঘটনাকেই ঐতিহাসিক রাইকার ‘রাজতন্ত্রের শবযাত্রা’ বলে অভিহিত করেছেন।

‘পাদুয়ার ঘোষণা’ কী?

উত্তর: ৬ জুলাই ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার সম্রাট লিওপোল্ড পাদুয়া নামক স্থান থেকে এক ঘোষণাপত্র জারি করে ইউরোপীয় শক্তিবর্গকে ফরাসি বিপ্লবের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। এই ঘোষণাই ‘পাদুয়ার ঘোষণা’ নামে পরিচিত।

পিলনিৎসের ঘোষণা কী?

উত্তর: ২৭ আগস্ট ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার লিওপোল্ড ও প্রাশিয়ার উইলিয়াম ফ্রেডারিক পিলনিৎস নামক এক স্থান থেকে এক ঘোষণাপত্র দ্বারা ইউরোপীয় রাজাদের কাছে ফরাসি রাজতন্ত্র রক্ষার আবেদন রাখেন। এই ঘোষণাকে পিলনিৎসের ঘোষণা বলা হয়।

‘মহা আতঙ্ক’ বা ‘মহাভয়’ কী?

উত্তর: বাস্তিল দুর্গের পতনের মধ্যে দিয়ে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক কৃষক বিদ্রোহ শুরু হয়। তারা সামন্তপ্রভু ও জমিদারদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটায়। সেসময় গুজব রটে যায় যে, কৃষকদের শায়েস্তা করার জন্য সামন্তপ্রভু ও জমিদারদের ভাড়াটে গুন্ডা এগিয়ে আসছে। লেফেভরেন্ত-এর মতে, এই গুজব কৃষকদের আতঙ্কিত করে তোলে। একেই ‘মহা আতঙ্ক’ বা ‘মহাভয়’ (Great Fear) বলা হয়।

অ্যাসাইনেট কী?

উত্তর: ফরাসি সংবিধান সভা আর্থিক সংকট মোচনের জন্য ফ্রান্সের গির্জার সকল ভূ-সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে (১৭৯০ খ্রিস্টাব্দ) এবং তা আমানত রেখে তার পরিবর্তে এক ধরনের কাগজের নোট প্রচলন করে। এই কাগজের নোটকে অ্যাসাইনেট বলা হয়।

প্যারিকমিউন কী?

উত্তর: বাস্তিল দুর্গ পতনের মধ্য দিয়ে প্যারিসের নিয়ন্ত্রণ বুর্জোয়াদের হাতে চলে যায়। তারা পৌরপরিষদ গঠন করে প্যারিসের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করতে থাকে। এই পৌর পরিষদকে ‘প্যারি কমিউন’ বলা হয়।

সক্রিয়’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’ নাগরিক বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ফরাসি সংবিধান সভা সম্পত্তির ভিত্তিতে জনগণকে ‘সক্রিয়’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’-এই দুভাগে ভাগ করে। যারা নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পত্তির অধিকারী বা কমপক্ষে ৩ দিনের আয়কর দিতে সক্ষম এবং বয়স ২৫ বছর, তারাই ‘সক্রিয়’ নাগরিক। সম্পত্তিহীনরা হলেন ‘নিষ্ক্রিয়’ নাগরিক। সক্রিয় নাগরিকরাই আইনসভার নির্বাচনে ভোটাধিকার পায়। নিষ্ক্রিয় নাগরিকদের ভোটাধিকার ছিল না।

‘লিট দ্য জাস্টিস’ (Lit de Justice) কী?

উত্তর: প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী ফ্রান্সে রাজকীয় দেশগুলি প্যারিস পার্লামেন্টে নথিভুক্ত করতে হত। পার্লামেন্ট নথিভুক্ত করতে অস্বীকার করলে রাজা যে বিশেষ অধিকার বলে বিশেষ সভা ডেকে রাজাদেশ অনুমোদন করে দিতেন, তাকে ‘লিট দ্য জাস্টিস’ বলা হত।

‘সাসপেনসিভ ভেটো’ (Suspensive Veto) বা ‘সাময়িক নাকচ ক্ষমতা’ বলতে কী বোঝ?

ফরাসি সংবিধান সভা রাজাকে এই ক্ষমতা দিয়েছিল। এতে স্থির হয় যে, রাজা আইন বাতিল করতে পারবেন না। তবে ‘সাসপেনসিভ ভেটো’ প্রয়োগ করে কোনো আইন সাময়িক স্থগিত করতে পারবেন। তবে কোনো আইন তিনবার আইনসভা কর্তৃক গৃহীত হলে রাজা তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন।

গিলোটিন কী? কে আবিষ্কার করেন?

উত্তর: গিলোটিন হল শিরশ্ছেদ করার একটি যন্ত্র। এই যন্ত্রে দুটি কাঠের লাঠির মাঝে ঝুলন্ত অবস্থায় ভারী লোহার কাটারি থাকত। ওপরে দিক থেকে নেমে এটি শায়িত মানুষের শিরশ্ছেদ করত।

এই যন্ত্রের আবিষ্কারক ছিলেন ডঃ গিলোটিন নামে ফরাসি চিকিৎসক।

তুর্গো কে ছিলেন?

উত্তর: তুর্গো ছিলেন ফরাসি অর্থনীতিবিদ। ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সংকট মোচনের জন্য ফরাসি সম্রাট ষোড়শ লুই তুর্গোকে অর্থমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেন (১৭৭৪-‘৭৬ খ্রি.)। ফিজিওক্র্যাট্স মতবাদ অনুযায়ী তিনি রাজস্ব সংস্কার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিজাত সম্প্রদায়ের প্রবল বিরোধিতায় সংস্কারকার্য ব্যর্থ হয়।

নেকার কে ছিলেন?

উত্তর: নেকার ছিলেন জেনিভার একজন ব্যাংক মালিক।

রাজা ষোড়শ লুই তুর্গোর পর নেকারকে অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত করেন (১৭৭৬-১৭৮১ খ্রি.)। তিনি অনাবশ্যক ব্যয় বন্ধ করে রাজকোশে অর্থ সঞ্চয়ের চেষ্টা করেন। নেকারও অভিজাত শ্রেণির বিরাগভাজন হওয়ায় তাঁকে পদচ্যুত হতে হয়।

কারা, কবে ফ্রান্সে প্রথম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে?

উত্তর: ফ্রান্সের জাতীয় মহাসভা (ন্যাশনাল কনভেনশন) ২২ সেপ্টেম্বর, ১৭৩২ খ্রিস্টাব্দে রাজতন্ত্রের উচ্ছেদ ঘটিয়ে ফ্রান্সে প্রথম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।

জাতীয় মহাসভা (ন্যাশনাল কনভেনশন) কী?

উত্তর: আইনসভা রাজতন্ত্র মুলতুবি করে ষোড়শ লুই বন্দি করলে ফ্রান্সের জন্য একটি নতুন সংবিধানের প্রয়োজন হয়। অতঃপর গণভোটের মাধ্যমে ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে যে নতুন আইনসভা গঠিত হয় তার নাম জাতীয় মহাসভা বা ন্যাশনাল কনভেনশন। এই সভার ওপর ফ্রান্সের নতুন সংবিধান রচনার দায়িত্ব অর্পিত হয়।

জিরন্ডিস্ট কাদের বলা হয়?

উত্তর: জ্যাকোবিনদের একটি গোষ্ঠী ব্রিসার নেতৃত্বে একটি দল গঠন করে, প্রথমে তারা ‘ব্রিসোপন্থী’ নামে পরিচিত ছিল। পরে তারা জিরন্ডিন নামে পরিচিতি লাভ করে, কারণ এই দলের সদস্যরা জিরন্ত প্রদেশ থেকে নির্বাচিত হয়েছিল। জিরন্ডিস্টরা ছিল রাজতন্ত্রবিরোধী বা প্রজাতন্ত্রবাদী।

সন্ত্রাসের রাজত্ব বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ফ্রান্সের অভ্যন্তরে বিপ্লব বিরোধী শক্তির তৎপরতা এবং বিদেশি আক্রমণ সমগ্র ফ্রান্সের ভেতরে ও বাইরে এক সংকটময় অবস্থান সৃষ্টি করে। এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করতে জাতীয় প্রতিনিধি সভা এক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে এবং ফ্রান্সে এক কঠোর দমনমূলক শাসন প্রবর্তন করেন। এই শাসনব্যবস্থাকে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ বলা হয়েছে। যার স্থায়িত্বকাল ছিল ২জুন, ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ-২৭ জুলাই ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।

সন্ত্রাসের রাজত্ব কেন প্রবর্তন করা হয়েছিল?

উত্তর: একদিকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ এবং অপরদিকে অভ্যন্তরীণ প্রতিবিপ্লবী আন্দোলনের ফলে ফ্রান্স এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। এই পরিস্থিতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে বিপ্লবকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ নামক নৃশংস অধ্যায়ের সূচনা করা হয়েছিল। এ ছাড়াও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ফরাসি সেনাপতি ডুমারিজ এর বিশ্বাসঘাতকতা প্রভৃতি এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।

সন্ত্রাসের শাসনকালের চারজন নেতার নাম লেখো।

উত্তর : সন্ত্রাসের শাসনকালে চারজন নেতা ছিলেন- সেন্টজাস্ট, দাঁতো, কারনট্, রোবসপিয়ার।

লাল সন্ত্রাস বলতে কী বোঝ?

উত্তর: জ্যাকোবিন দলের পরিচালনায় এবং রোবসপিয়ারের নেতৃত্বে ২ জুন ১৭৯৩-২৭ জুলাই, ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফ্রান্সে যে নৃশংস সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল, তাকে লাল সন্ত্রাস বলা হত।

দাঁতো কে ছিলেন?

উত্তর: দাঁতো ছিলেন ফ্রান্সে সন্ত্রাসের রাজত্বের একজন সংগঠক এবং রোবসপিয়ারের সহযোগী। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ফ্রান্সে কর্ডেলিয়ের ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। সন্ত্রাসের রাজত্বের সময় রোবসপিয়রের সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে গিলোটিনে তাঁকে প্রাণ দিতে হয়।

Leave a Comment