নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন – নেপোলিয়ন যখন স্বাধীনতা বা গণতন্ত্রকে পদানত করে স্বৈরতন্ত্র ও কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠা করেন তখন তিনি ছিলেন বিপ্লবের ধবংসকারী। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে পদানত করে স্বৈরতন্ত্র স্থাপনের মাধ্যমে তিনি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছিলেন।
তো চলুন আজকের মূল বিষয় নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন পড়ে নেওয়া যাক।
নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন
নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন |
নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন
নেপোলিয়ন যখন স্বাধীনতা বা গণতন্ত্রকে পদানত করে স্বৈরতন্ত্র ও কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠা করেন তখন তিনি ছিলেন বিপ্লবের ধবংসকারী। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে পদানত করে স্বৈরতন্ত্র স্থাপনের মাধ্যমে তিনি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছিলেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজেই স্বীকার করেছিলেন ‘আমি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি’ (I destroyed the Revolution)।
স্বাধীনতার আদর্শ বিচ্যুত
তিনি ফ্রান্সে প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানকে তুলে দিয়ে গণতন্ত্রের মুখোশে ‘পুলিশি রাষ্ট্র’ স্থাপন করেন। রাজনৈতিক দলগুলির স্বাধীন কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ করে দেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেন এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করেন-যা ফরাসি বিপ্লবের স্বাধীনতা আদর্শের পরিপন্থী ছিল।
শিক্ষাক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ
নেপোলিয়নের শিক্ষানীতির আসল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষিত সমাজকে অনুগত শ্রেণিতে পরিণত করা। তিনি জ্যাকোবিনদের সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা নীতি বাতিল করে বিপ্লবের আদর্শকে ধ্বংস করেন। নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা
তিনি বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও বিপ্লব রাজতন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন ও জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব অনুষ্ঠান প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে বিপ্লবের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছিলেন।
ধর্মীয় ক্ষেত্রে বিচ্যুতি
নেপোলিয়ন ফরাসি বিপ্লবকালের ধর্মীয় নীতির বেশ কিছু ভাবধারা বর্জন করেছিলেন। তিনি ১৮০১-এর ধর্ম মীমাংসার দ্বারা ক্যাথলিক চার্চের ক্ষমতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
বিপ্লবের ধ্বংসকারী
ট্রটস্কি বলেছেন সামরিক শক্তির দ্বারাই নেপোলিয়ন বিপ্লবকে ধ্বংস করেছেন। জার প্রথম আলেকজান্ডারের বোন পাললোভনা নেপোলিয়নকে ‘বিপ্লবের দানব’ হত্যাকারী ও শয়তান বলেছেন। এইচ. জি. ওয়েলস বলেছেন, ‘তিনি গোবরের স্তূপে খাদ্য সন্ধানী মুরগির বাচ্চার মতোই ইতিহাসে র আস্তাকুঁড়ে স্বৈরক্ষমতার সন্ধান করেন’।আসলে তিনি বিপ্লবকে নিজের প্রয়োজনমত ব্যবহার করেছিলেন। তিনি জীবনে আত্মপ্রতিষ্ঠা চেয়েছিলেন। এ কারণে বিপ্লবের যে কোনো আদর্শ গ্রহণ করতে বা ত্যাগ করতে তাঁর আপত্তি ছিল না। তাই লেফেভর, মাঁতিয়ে, গুডউইন প্রমুখ ঐতিহাসিকদের মতে, নেপোলিয়ন ‘বিপ্লবের ধ্বংসকারী’ ছিলেন।
আপনি আমাদের একজন মূল্যবান পাঠক। নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন -এই বিষয়ে আমাদের লেখনী সম্পূর্ণ পড়ার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।