ট্রাফালগারের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো। |
ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ ২১ অক্টোবর ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে হয়েছিল। এই যুদ্ধে ইংরেজ নৌ সেনাপতি নেলসন ফরাসি নৌবহরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়।
ট্রাফালগারের যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
অ্যামিয়েন্সের সন্ধির শর্ত লঙ্ঘন
অ্যামিয়েন্সের শর্তানুসারে ইংরেজরা ‘মাল্টা’ ফ্রান্সের কাছে ছাড়তে রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে অসহিষ্কৃতা বাড়তে থাকে।
সংবাদ মাধ্যমের অপপ্রচার
ইংল্যান্ডের সংবাদপত্রগুলিতে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে লাগাতার অপপ্রচার চালানো হলে তিনি ইংরেজ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও ব্যর্থ হন।
ফরাসি বাণিজ্যপোত আক্রমণ
১৮০৩ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে ব্রিটিশ নৌবহর ফরাসি বাণিজ্যপোেত আক্রমণ করলে নেপোলিয়নের অসহিষুতা আরও বেড়ে যায়।
ইংরেজ ভ্রমণকারীকে বন্দি
এই প্রতিবাদে ফ্রান্সে ভ্রমণ করতে আসা প্রায় এক হাজার ভ্রমণকারীকে ফ্রান্সের তরফ থেকে বন্দি করা হয় এবং নেপোলিয়ন হ্যানোভার ও নেপল্স দখল করে নেন।
যুদ্ধের প্রস্তুতি
এইরূপ পরিস্থিতিতে নেপোলিয়ন ইংলিশ চ্যানেল ও উত্তর সমুদ্রের তীরে ২ লক্ষ ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করলেন এবং অপরদিকে ইংল্যান্ডের উদ্যোগে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও সুইডেনকে নিয়ে ফ্রান্স বিরোধী তৃতীয় শক্তিজোট গঠিত হয়। অতঃপর নেপোলিয়ন তৃতীয় শক্তিজোটের বিরুদ্ধে অগ্রসর হলেন। ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধে ইংরেজ নৌ সেনাপতি নেলসনের কাছে ফরাসি নৌ সেনাপতি ভিলেন্যত্যু শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন।
ট্রাফালগারের যুদ্ধের গুরুত্ব
(ক) ইংরেজ নৌশক্তির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ হয়, (খ) শক্তিশালী নৌবহর ছাড়া ইংরেজদের দমন করা অসম্ভব-একথা প্রমাণিত হয়, (গ) ইংলিশ চ্যানেল ও সমুদ্রপথের ওপর নেপোলিয়ন চিরদিনের মতো তাঁর নিয়ন্ত্রণ হারান, (ঘ) ট্রাফালগারের যুদ্ধে পরাজয়ের অনিবার্য ফলশ্রুতি হিসেবে নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ জারি করেন।