বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সের কর ব্যবস্থা কিরূপ ছিল

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সের কর ব্যবস্থা কিরূপ ছিল
বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সের কর ব্যবস্থা কিরূপ ছিল

প্রাক্-বিপ্লব যুগে ফ্রান্সের করব্যবস্থা ছিল বৈষম্যমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ। কর ধার্যের ব্যাপারে কোনো ন্যায় ও নীতিসংহত নিয়ম ছিল না। কর আদায়ের ব্যবস্থাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এইসব দিক বিবেচনা করে ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ তাঁর ‘Wealth of Nation’ গ্রন্থে ফ্রান্সকে ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর বলেছেন।

করপ্রদানে নিষ্কৃতি

অভিজাত ও যাজক শ্রেণি ফ্রান্সের মোট কৃষিজমির ৫০ ভাগ ভোগ করত। তাদের কর দেওয়ার সামর্থ্য থাকলেও রাষ্ট্রের মোট রাজস্বের মাত্র ৪ শতাংশ তাদের কাছ থেকে আদায় করা হত। সমাজ ও রাষ্ট্রে এরা ছিল বিশেষ সুবিধাভোগী শ্রেণি।

করপ্রদানকারী

ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ যারা তৃতীয় সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত ছিল তাদের কর দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলেও রাষ্ট্রের মোট রাজস্বের ৯৬ শতাংশ তাদেরকেই মেটাতে হত। বিভিন্ন কর দেওয়ার পর আয়ের মাত্র ২০ ভাগ অর্থ তাদের হাতে থাকত। এদের সুবিধাহীন শ্রেণি বলা হত।

কর আদায়ে ত্রুটি

কর আদায়ের ব্যবস্থাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কর আদায়কারীরা জোরজবরদস্তি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কর আদায় করত। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের ওপর নানারূপ নির্যাতন চালাত। অথচ যাজক ও অভিজাত শ্রেণির প্রতি এরা নীরবতা পালন করত।

বিভিন্ন ধরনের কর

টেইলি (সম্পত্তি কর), ক্যাপিটেশন (উৎপাদন কর), ভিংটিয়েম (আয়কর)-এগুলি ছিল প্রত্যক্ষ কর। অপরদিকে টাইথ (ধর্ম কর), এইস্ (নিত্য ব্যবহার্য জিনিসের ওপর কর) গ্যাবেল (লবণ কর), সঁস (নগদ কর), শ্যাম্পার্ত (পণ্য কর), করভি (শ্রমকর), বানালিতে (শস্য ভানার কর) প্রভৃতি ছিল পরোক্ষকর।

এই বৈষম্যমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ কর ব্যবস্থা ফ্রান্সের অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই কর ব্যবস্থাই ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সংকটের জন্য অনেকাংশে দায়ী ছিল।

Leave a Comment