জ্যাকোবিন শাসনের পরিচয় দাও
|
জিরন্ডির দলের পতনের মধ্য দিয়ে জ্যাকোবিন দল ফ্রান্সের শাসন ও যুদ্ধনীতি পরিচালনায় অপ্রতিহত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠে। এই দলের কর্মসূচি ছিল উগ্র, সংগঠন ছিল শক্তিশালী এবং নেতৃত্ব ছিল সুসংহত। এই দলের সর্বাধিনায়ক ছিলেন রোবসপিয়র।
ক্ষমতা লাভ
রাজার মৃত্যুদণ্ড ও রাজতন্ত্রের পতনের পর ন্যাশনাল কনভেনশনে ক্ষমতাসীন জিরন্ডিস্টদের হঠিয়ে ২ জুন ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে সাঁ কুলোৎ সমর্থনপুষ্ট জ্যাকোবিন দলের নিরঙ্কুশ একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জ্যাকোবিন দলের নেতৃত্বে স্বৈরতান্ত্রিক ও একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রবর্তিত হয়।
সন্ত্রাসের শাসন কায়েম
রাজার প্রাণদণ্ডের পর অভ্যন্তরীণ প্রতিবিপ্লবী আন্দোলন ও বৈদেশিক আক্রমণে যখন ফ্রান্স জেরবার তখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত ফরাসি প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য সবরকম দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় জ্যাকোবিন দল। অতঃপর দেশের নিরাপত্তা, বিপ্লবের স্থায়িত্ব ও প্রতিবিপ্লবী শক্তির ধ্বংস-সাধনের লক্ষ্যে জ্যাকোবিন পরিচালিত ন্যাশনাল কনভেনশন দেশজুড়ে এক কঠোর শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। প্রবল ভীতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে এই বিপ্লবী সরকার ফ্রান্সে যে শাসন জারি রাখে তা ইতিহাসে সন্ত্রাসের শাসন (Region of Terror) নামে পরিচিত।
জনকল্যাণমূলক কাজ
সন্ত্রাসের রাজত্বকালে জ্যাকোবিন দল মজুতদারি ও কালোবাজারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, নতুন মাপ ও ওজন পদ্ধতির ব্যবহার দশমিক পদ্ধতির প্রচলন, সর্বনিম্ন মজুরি আইন, সর্বোচ্চ মূল্যের আইন প্রয়োগ ইত্যাদির মাধ্যমে ফ্রান্সে নবজীবনের সূচনা করে।