থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কী
|
জ্যাকোবিন শাসনপর্বে সন্ত্রাসের রাজত্ব তীব্র হয়ে উঠলে রোবসপিয়র ও তাঁর অনুগামীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় (২৮ জুলাই ১৭৯৪ খ্রি.) নতুন বিপ্লবী বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ৯ থার্মিডর (২৭ জুলাই) রোবসপিয়র ক্ষমতা হারান। থার্মিডর মাসে এই ঘটনা ঘটে বলে একে ‘থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া’ বলা হয়।
থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কাল
রোবসপিয়রের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে জাতীয় মহাসভার ১৪ মাসের (জুলাই ১৭৯৪-অক্টোবর ১৭৯৫ খ্রি.) শাসনকাল ‘থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া’ কাল নামে পরিচিত।
শ্বেত সন্ত্রাস
থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া সময়কালে মধ্যবিত্ত বুর্জোয়াদের নেতৃত্বে জ্যাকোবিনদের ধ্বংস করার লক্ষ্যে শুরু হয় পালটা সন্ত্রাস, যা শ্বেত সন্ত্রাস নামে পরিচিত। জ্যাকোবিন পরিচালিত লাল সন্ত্রাসের প্রতিবিপ্লবী ছিল এই শ্বেত সন্ত্রাস। যদিও কিছুকাল পরে শ্বেত সন্ত্রাস থেমে যায়।
বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ
(ক) জ্যাকোবিন ক্লাব বন্ধ করে দেওয়া হয়। (খ) বিপ্লবী কার্যালয়ের ক্ষমতা রদ করা হয়। (গ) প্যারিস কমিউন ও সাধারণ নিরাপত্তা সমিতি ভেঙে দেওয়া হয়। (ঘ) সব গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করে ৮০ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। (ঙ) দ্রব্যমূল্য আইনের কঠোরতা শিথিল করা হয়। (চ) দেশত্যাগী অভিজাতদের দেশে প্রত্যাবর্তনে উৎসাহ দেওয়া হয়। (ছ) জিরন্ডিন ও জ্যাকোবিন সংবিধান বাতিল করে একটি সংবিধান প্রবর্তন করা হয় যা ‘তৃতীয় বর্ষের সংবিধান’ নামে পরিচিত। (জ) অর্থনৈতিক সংস্কারগুলি লোপ করা হয়। (ঝ) অবাধ বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করা হয়। (ঞ) ধর্মবিশ্বাসী ক্যাথলিকরা রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য জানাবার পর তাদের ধর্মপ্রচারের { অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কেবল প্রতিবিপ্লব ছিল না, তা ছিল কনভেনশনের বিজয়লাভ। কারণ প্যারিস কমিউনের দাপট ও নিয়ন্ত্রণ থেকে কনভেনশন মুক্তি লাভ করেছিল।