পৃথিবীর আহ্নিক গতির সপক্ষে প্রমাণগুলি লেখো। |
পৃথিবীর আহ্নিক গতির সপক্ষে প্রমাণসমূহ
যে গতির দ্বারা পৃথিবী নিজ অক্ষ বা মেরুদণ্ডের ওপর পশ্চিম থেকে পূর্বে (ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে) 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ডে বা প্রায় 24 ঘণ্টায় একবার আবর্তন করে, সেই গতিকেই আবর্তন বা আহ্নিক গতি (Rota- tional movement) বলা হয়।
পৃথিবীর যে আহ্নিক গতি আছে তা বিভিন্নভাবে প্রমাণ করা যায়, যেমন-
দিন ও রাতের পর্যায়ক্রমিক সংঘটন
আবর্তন গতি আছে বলেই মোটামুটি প্রতি 24 ঘণ্টায় পৃথিবীর যে-কোনো স্থান পর্যায়ক্রমে একবার সূর্যের সামনে আসে। যদি পৃথিবীর আবর্তন গতি না থাকত, তাহলে পৃথিবীর যে অংশ সূর্যের সামনে থাকত সেখানে সবসময়েই দিন ও বিপরীত অংশে চির-অন্ধকার বা রাত বিরাজ করত।
পৃথিবীর অভিগত গোলীয় আকৃতি
কোনো নমনীয় বস্তু তার অক্ষরেখার চারিদিকে অনবরত আবর্তন করলে মাঝখানে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তির উদ্ভব হয় এবং এর ফলে বস্তুর মধ্যভাগ কিছুটা স্ফীত হয় এবং প্রান্তদ্বয় কিছুটা চাপা হয়ে যায়। পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যই নমনীয় অবস্থা থেকে কঠিন অবস্থায় পৌঁছানোর সময় নিরক্ষীয় অঞ্চল কিছুটা স্ফীত ও মেরুদ্বয় চাপা হয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীর অভিগত গোলাকৃতির জন্য আবর্তন গতিই দায়ী।
খুব উঁচু স্থান থেকে পতনশীল প্রস্তরখণ্ডের আপাত সঞ্চালন পর্যবেক্ষণ
খুব উঁচু স্থান থেকে একটি প্রস্তরখণ্ড নিশ্চল বায়ুর মধ্য দিয়ে নীচে ফেলে দিলে দেখা যায় পাথরটি সোজাসুজি না পড়ে একটু পূর্বদিকে এগিয়ে গিয়ে পড়ে। পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যেই এই ঘটনা ঘটে।
কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি
মহাকাশে পাঠানো বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে যে ছবি তোলা হয়েছে তা থেকে পৃথিবীর আবর্তন গতির নির্ভুল ও সর্বাধুনিক প্রমাণ পাওয়া যায়।
অন্যান্য গ্রহের আবর্তন গতি
সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ, যেমন-বুধ, শুরু প্রভৃতি নিজের মেরুদন্ডের চারদিকে আবর্তন করে চলেছে। পৃথিবী যেহেতু একটি গ্রহ, তাই সেও সূর্যকে কেন্দ্র করে নিজ অক্ষের চারদিকে আবর্তন করছে।
ফুকোর পরীক্ষা
ফরাসি বিজ্ঞানী ফুকো (1851 সাল) দোলকের পরীক্ষার সাহায্যেও প্রমাণ করেন যে, পৃথিবীর আবর্তন গতি রয়েছে।