ভারতে অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন? |
ভারতে অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদনে গুরুত্ব আরোপের কারণ
বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বা জ্বালানি হিসেবে যেসব শক্তি কম ব্যবহৃত হয়, কিন্তু ভবিষ্যতে অধিক ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলিকে অচিরাচরিত বা অপ্রচলিত শক্তি বলে। যেমন-① সৌরশক্তি, ② বায়ুশক্তি, ও জোয়ারভাটা শক্তি, ④ সামুদ্রিক ঢেউয়ের শক্তি, ⑤ ভূতাপ শক্তি, জৈবশক্তি প্রভৃতি অচিরাচরিত শক্তির উদাহরণ। সাম্প্রতিককালে ভারতে এইসব অচিরাচরিত শক্তি ব্যবহারের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণগুলি হল-
ক্রমবর্ধমান শক্তির চাহিদা
ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে শক্তির চাহিদা অত্যন্ত দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে। কিন্তু ভারতে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সঞ্চয়ের পরিমাণ খুবই কম। তাই অচিরাচরিত শক্তির চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। (আন্তর্জাতিক বাজারে এইসব পণ্যের মূল্য এতটাই বেশি যে তা আমদানি করতে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডারের অধিকাংশই ব্যয় করতে হয়।)
কয়লার সীমিত ভাণ্ডার
ভারতে সঞ্চিত কয়লার পরিমাণ সীমিত এবং তা কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ।
জলবিদ্যুতের সীমিত উৎপাদন
সম্ভাব্য জলবিদ্যুৎশক্তির পরিমাণ বেশি হলেও অর্থনৈতিক সামর্থ্যের অভাবে তার উন্নতি ও ব্যবহার সীমিত। তাই অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদনের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অচিরাচরিত শক্তির প্রাচুর্য
সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জোয়ারভাটা শক্তি প্রভৃতি অচিরাচরিত শক্তির ভাণ্ডার সীমাহীন অর্থাৎ এগুলি ব্যবহারের ফলেও নিঃশেষিত হয় না।
শক্তির অন্যান্য উৎস ব্যয়বহুল
পেট্রোলিয়াম, কয়লা প্রভৃতির আহরণ এবং সেগুলির ব্যবহার যথেষ্ট ব্যয়সাধ্য। তাই অচিরাচরিত শক্তির চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বল্প মূলধনে উৎপাদন সম্ভব
অচিরাচরিত শক্তি ক্ষুদ্রাকারে ব্যবহার করা যায়। সুতরাং, এগুলির আহরণ ও ব্যবহারে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয় না।
পরিবেশবান্ধব
খনিজ তেল, কয়লা প্রভৃতি চিরাচরিত শক্তি ব্যবহারে পরিবেশ দূষিত হয়, কিন্তু অচিরাচরিত শক্তিগুলির ব্যবহার কোনোভাবে পরিবেশের দূষণ ঘটায় না।
এইসব সুবিধার জন্যই বর্তমানে আর্থিকভাবে দুর্বল ভারতেও অচিরাচরিত শক্তির উৎপাদন উৎপাদন। ও ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।