সম্পদ সম্পর্কে তোমার ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো

সম্পদ সম্পর্কে তোমার ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো
সম্পদ সম্পর্কে তোমার ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।

সম্পদ সম্পর্কে ধারণা

প্রাকৃতিক উপাদান

আগে আকরিক লোহা, কয়লা, খনিজ তেল প্রভৃতি প্রাকৃতিক উপাদানকেই কেবল সম্পদ বলা হত।

বস্তুর কার্যকারিতা

বিশিষ্ট সম্পদ বিশেষজ্ঞ জিমারম্যান বলেছেন, ‘সম্পদ বলতে কোনো বস্তু বা পদার্থকে বোঝায় না, বোঝায় ওই বস্তু বা পদার্থের কার্যকারিতা বা ক্রিয়াপ্রণালী, যা মানুষের চাহিদা পূরণ করে।’

বস্তুর অভাবপূরণের ক্ষমতা

কোনো বস্তু বা পদার্থ সম্পদ নয়, সম্পদ হল বস্তুনিরপেক্ষ। বরং ওই বস্তু বা পদার্থের কার্যকারিতা (functional ability) এবং উপযোগিতা (utility) বা অভাবপূরণের ক্ষমতাই হল সম্পদ।

উদাহরণ হিসেবে কয়লার কথা বলা যায়। কয়লা যখন মাটির নীচে থাকে তখন তাকে সম্পদ বলা যায় না। কিন্তু কয়লা পুড়ে যখন তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তখন তাকে সম্পদ বলা হয়। এটা কয়লার কার্যকারিতা এবং এই তাপশক্তি মানুষের নানান উপকারে আসে বা বহু অভাব পূরণ করে—এটা কয়লার উপযোগিতা। সুতরাং, কয়লা, খনিজ তেল হল সম্পদের উদাহরণ।

আবার, পতিত জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকলে তাকে সম্পদ বলা যায় না। কারণ তার কার্যকারিতা এবং উপযোগিতা নেই। কিন্তু ওই জমিতে যখন বিভিন্ন ধরনের ফসল যেমন-ধান, গম প্রভৃতি শস্য চাষ করা হয় (অর্থাৎ তার কার্যকারিতা ও উপযোগিতা পাওয়া যায়); তখন ওই জমি সম্পদ হয়ে ওঠে।

অবস্তুগত রূপ

কয়লা বা জমির বস্তুগত রূপ (tangible things) আছে-এগুলি দেখা যায়। কিন্তু মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, সামাজিক আইন-এগুলিকে চোখে দেখা যায় না, ধরাছোঁয়াও যায় না তাই এগুলি অবস্তুগত রূপ (intangible things)। যেহেতু এসবের কার্যকারিতা আছে এবং ওই কার্যকারিতা মানুষের ব্যক্তিগত বা সামাজিক চাহিদা পূরণ করে (উপযোগিতা আছে)-তাই এগুলিও গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। অর্থাৎ, বস্তুগত রূপ না থাকলেও অবস্তুও সম্পদ হতে পারে।

মনুষ্যসৃষ্ট

যেহেতু সম্পদ আপনা-আপনি সৃষ্টি হয় না, মানুষই তাকে সৃষ্টি করে, তাই স্থানকালপাত্র নির্বিশেষে সম্পদের হ্রাসবৃদ্ধি হয়।

সুতরাং, সম্পদ সম্পর্কে আমাদের ধারণা হল, মানুষের ব্যক্তিগত অথবা সামাজিক চাহিদাপূরণের উদ্দেশ্যে কোনো বিশেষ কালে বা স্থানে, কোনো বস্তু বা অবস্তু যে কার্য (function) সম্পাদন করে, তাকেই সম্পদ (resource) বলে।

Leave a Comment