‘আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি।’-কালি তৈরি সম্পর্কে প্রাচীনদের বলা কঠিন পদ্ধতিটি ব্যবহার না করার কারণ কী? কোন সহজ পদ্ধতি ব্যবহার করে বক্তারা কখন, কীভাবে কালি তৈরি করতেন ? |
কালি তৈরি সম্পর্কে প্রাচীনরা বলতেন ‘তিল ত্রিফলা সিমূল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায়। ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।’ এই পদ্ধতিটা অবশ্য যথেষ্ট কঠিন ছিল এবং লেখক শ্রীপান্থদের ক্ষেত্রে ছেলেবেলায় সবকিছু আয়োজন করাও ছিল কষ্টকর। সেকারণে তাঁরা কালি তৈরির কঠিন পদ্ধতি ব্যবহার করতেন না।
লেখক শ্রীপান্থরা প্রাচীনদের বলা কালি তৈরি পদ্ধতি অনুযায়ী সমস্ত আয়োজন করতে না পেরে সহজ পদ্ধতিই গ্রহণ করতেন। সেক্ষেত্রে-
কালির উপাদান সংগ্রহ
কালির প্রদান উপাদান সংগ্রহ করা হত কাঠের উনুনে রান্না করা কড়াইয়ের তলায়। যে কালি জমত, তা লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে।
কালি তৈরি পদ্ধতি
কড়াইয়ের তলার কালি জোগাড় করার পর তা পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নিতেন শ্রীপান্থরা।
কালির উন্নতকরণ
কালিকে উন্নত করতে গোলানো কালো জলে অনেকেই হরীতকী ঘষে, কখনও বা আতপচাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেঁটে মেশাত।
কালি তৈরির পরবর্তী পদ্ধতি
পাথরের বাটির জলে সবকিছু ভালো করে মেশাবার পর একটা খুন্তির গোড়ার দিকটা পুড়িয়ে লাল টকটক করিয়ে নিয়ে তা দিয়ে সেই জলে ছ্যাঁকা দেওয়া হত।
কালির পরিশুদ্ধিকরণ
কালির জল অল্প হওয়ায় খুস্তির তাপে তা অনেকক্ষণ টকবগ করে ফুটত। তারপর। সেই জল ন্যাকড়ায় ছেঁকে দোয়াতে ঢেলে নিলেই হয়ে যেত ব্যবহারযোগ্য কালি। তবে সে দোয়াত ছিল মাটির দোয়াত।
-এমনটাই ছিল সেই কালি তৈরির পদ্ধতি।