জ্ঞানচক্ষু গল্পের তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।
চরিত্র হল যে-কোনো কাহিনির চালিকা-শক্তি বা চালক-শক্তি। কেননা, যে-কোনো ঘটনা বা তার অন্তর্গত ভাবকে আমাদের চোখের সামনে জীবন্ত করে তোলে চরিত্রই। ছোটোগল্পের ক্ষেত্রে লেখক তাঁর অনন্য দক্ষতায় মূর্ত করে তোলেন কাহিনির চরিত্রকে। আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রধান চরিত্র ‘তপন’ সেরকমই লেখকসৃষ্ট একটি সার্থক চরিত্র। চরিত্রটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়-

প্রাথমিক পরিচয়

তপন স্কুলে পড়া একটি ছেলে। মামার বাড়িতে সবার সঙ্গে, বিশেষত ছোটোমাসির সঙ্গে তার সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল।

সাহিত্যানুরাগী

ছেলেবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি তপনের অনুরাগ ছিল। সে গল্প শুনতে ভালোবাসত।

নতুন মেসো লেখক জেনে তাই সে খুশিই হয়। নিজে গল্প লিখতেও শুরু করেছিল।

কৌতূহলী

তপন ছিল কৌতূহলী স্বভাবের ছেলে। বিশেষত লেখার প্রতি এবং লেখকদের প্রতি ছিল তার অপার কৌতূহল। তার নতুন মেসো লেখক জেনে প্রবল কৌতূহলে তাঁকে খুঁটিয়ে দেখে সে বুঝতে পেরেছিল লেখকরাও সাধারণ মানুষ।

ভাবপ্রবণ

স্বভাবে তপন ছিল একটু ভাবপ্রবণ। নতুন মেসো লেখক জেনে তাই সে অবাক হয়েছিল। তার

গল্প নতুন মেসো ছেপে দেবেন শুনে খুশি হয়েছিল। আবার গল্পটা আগাগোড়া কারেকশান করে ছেপে দেওয়ায় দুঃখও পেয়েছিল। 

কৃতজ্ঞতাবোধ

নতুন মেসো তার গল্প একটু ‘কারেকশান’ করে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছেপে দেবেন শুনে। তপনের মনে নতুন মেসো সম্পর্কে কৃতজ্ঞতাবোধ জেগেছিল। কৃতার্থও হয়েছিল সে।

বুদ্ধিমান

ছোটো হলেও তপনের বুদ্ধি কম ছিল না। তার গল্প ছোটোমেসো ‘কারেকশান’ করে ছেপেছেন শুনে অন্যরা তাকে অবজ্ঞা করতে শুরু করলে সেটা ধরতে পেরেছিল। বুঝতে পেরেছিল নিজের লেখা অন্যে কারেকশান করে ছাপিয়ে দিলে সেটা অপমানজনক।

দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

তপনের মধ্যে ছিল দৃঢ়চেতা এক মনোভাব। তার লেখার অপমান এবং তার নিজের অপমানকে। মাথায় রেখে সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছিল অন্যের হাত দিয়ে লেখা না পাঠাতে এবং নিজের লেখায় অন্যের লাইন। না পড়তে।

-এসব দিক বিচার করে চরিত্রটিকে বিশেষ একটি চরিত্র বলতেই হবে।

Leave a Comment