চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে -কাকে এ কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন মুদ্রিত হল

"চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে" -কাকে এ কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন মুদ্রিত হল
“চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে” -কাকে এ কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন মুদ্রিত হল?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় নির্যাতিত, অপমানিত আফ্রিকা সম্পর্কে এ কথা বলেছেন।

সৃষ্টিকর্তার আফ্রিকা মহাদেশ ছিল দুর্গম প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। সেখানকার মানুষের নিজস্ব একটা সংস্কৃতি থাকলেও তা ছিল না সভ্যজগতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই দীর্ঘসময় জুড়ে আফিকা ছিল ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমূহের কাছে উপেক্ষিত। ঊনবিংশ শতাব্দীতে মুনাফালোভী সভ্য জগতের নজর পড়েছিল আফ্রিকার প্রাকৃতিক (খনিজ সম্পদ) সম্পদ আর সহজলভ্য শ্রমিকের উপর।

তথাকথিত শেতাঙ্গ সভ্যজাতি নিজেদের সুখসমৃদ্ধির স্বার্থে লোহার হাতকড়া নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে আফ্রিকার বুকে। কেবল প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করেই তারা ক্ষান্ত হল না, কৃম্নাঙ্গ মানুষদেরকে তারা আবদ্ধ করল দাসত্বের শৃঙ্খলে। এই ‘মানুষ-ধরার দল’ অমানুষিক অত্যাচারে ভাষাহীন আফ্রিকাবাসীর অশ্রু আর রক্তে রঞ্জিত করেছিল আফ্রিকার ইতিহাসকে।

সেই সভ্যমানুষদের ‘বর্বর লোভ’ নিষ্পেশিত করেছিল আফ্রিকাবাসীর মাথা উঁচু করে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা। নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে তারা রক্তাক্ত করেছিল আফ্রিকার বক্ষতল। অসহায় মানুষের রক্ত আর অশ্রুতে পঙ্কিল হয়েছিল আফ্রিকার ধূলি। গর্বে উন্মত্ত সভ্য মানুষের কাঁটা মারা জুতোর তলায় পিষে গিয়েছে আফ্রিকার সাধ ও স্বপ্ন-সাধনা। তাদের সেই বীভৎস অত্যাচার ও আগ্রাসন থমকে দিল আফ্রিকার এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণাকে আর সেই স্থানে রচিত হল এক ‘অপমানিত ইতিহাস’।

Leave a Comment