সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে- কোথায়, কীভাবে সব চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে গেল

"সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে।"- কোথায়, কীভাবে সব চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে গেল
“সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে।”- কোথায়, কীভাবে সব চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে গেল?
পাবলো নেরুদার ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি যুদ্ধবিরোধী মানবজীবন তথা সংস্কৃতির এক আলেখ্য। যার শুরু জীবনের এক বিষাদময় ভাবী পরিণামের ইঙ্গিতের মধ্য দিয়ে-

“আমি তাকে ছেড়ে দিলাম
অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে দরজায়
আমি চলে গেলাম দূর … দূরে।”

কবিতায় উদ্দিষ্ট বক্তা তার একান্ত প্রিয়জনকে ছেড়ে দূরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। তার দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে সময়ের গুরুভার পাথরের মতো চেপে বসেছে বক্তার প্রিয়জন তথা জনৈকা মেয়েটির জীবনে। তখনই লেগেছে যুদ্ধ, সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ- 

“তারপর যুদ্ধ এল
রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো।” 
সেই যুদ্ধের বিধ্বংসী লীলায় ধ্বংস হয়ে গেল সভ্যতা ঘরবাড়ি, উঠান থেকে উদ্যান পর্যন্ত সবকিছু। যুদ্ধের আগুনে সবকিছু পুড়ে খাক হয়ে গেল। মন্দির থেকে মসজিদ, মাদ্রাসা থেকে মক্তব, টোল থেকে চতুষ্পাঠী- মানবজীবনের যা কিছু আশাভরসার স্থল, ‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী’-র দরুন সবকিছু রসাতলে চলে যায়। যুদ্ধের নির্মম তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, সাজানো বাগান, কলকারখানার চিমনি, জলতরঙ্গ সব চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলেপুড়ে মহাশূন্য সৃষ্টি করে, যা কোনোভাবেই প্রার্থিত ছিল না। সভ্যতার বিলয় ঘটিয়ে ধ্বংসস্তূপের সাম্রাজ্য রচিত হয়েে ছ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের করাল গ্রাসে। সমাজবাদী কবি পাবলো নেরুদা সেই অকাম্য যুদ্ধের বীভৎসতা তুলে ধরেছেন ‘অসুখী একজন’ কবিতায়।

Leave a Comment