আমি তাকে ছেড়ে দিলাম/অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে দরজায়/আমি চলে গেলাম দূর … দূরে।”-উক্তিটির বক্তা কে? কাকে ছেড়ে দিয়ে সে কোথায় চলে গিয়েছে আর তার চলে যাওয়ার পর কী ঘটনা ঘটল? |
পাবলো নেরুদা বিরচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতায় কথকের জবানিতেই আলোচ্যমান উক্তিটি শোনা যায়।
আলোচ্যমান কবিতায় জনৈক বক্তা নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা, সংশয় তুলে ধরেছে। স্বদেশ-স্বভূমি ও আপনজনদের ছেড়ে যেতে সে বাধ্য হয়। আর সেই চলে যাওয়ার সময় সে বাড়িতে প্রিয়জনকে (একটি মেয়েকে) রেখে যায়।
তার চলে যাওয়ার পর দিন-সপ্তাহ-মাস করে একটা বছর কেটে গেল। তার চলে যাওয়ার মুহূর্তের উপর বিস্মৃতির ঘাস জন্মাতে থাকল। আর তার চলে যাওয়ায় প্রতিটি মুহূর্ত যেন পাথরের মতো ভারী হয়ে উঠল অপেক্ষমান মেয়েটির কাছে। তার অনিশ্চিত ফিরে আসার পথের দিকে চেয়ে মেয়েটির দিন কাটতে লাগল। কিন্তু এরপর একসময় ভয়ংকর অভিশাপের মতো নেমে আসে যুদ্ধ। শেষ হয়ে যায় মানুষ, মানুষের বিশ্বাস, মানুষের আশ্রয়-
“সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে।”
গ্রাম-শহর, নগর-বন্দর, মন্দির-মসজিদ-গির্জায় তথা মানব- সভ্যতার ওপর চূড়ান্ত আঘাত নেমে আসে। হাজার বছরের সভ্যতা, সমাজ, কলকারখানা ধ্বংস হয়ে যায়। সেই ধ্বংসের তাণ্ডবের মধ্যেও আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে বসে থাকে মেয়েটি। তার প্রিয়জনের ফিরে আসার অন্তহীন অপেক্ষার ট্র্যাজিক মূর্ছনাতেই শেষ হয় কবিতাটি।