ভারতের পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলে অধিক বন্দর গড়ে উঠেছে কেন

ভারতের পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলে অধিক বন্দর গড়ে উঠেছে কেন
ভারতের পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলে অধিক বন্দর গড়ে উঠেছে কেন?
ভারতে মূল ভূখণ্ডের উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য 7517 কিমি হলেও উপকূলভাগ বিশেষ ভগ্ন না হওয়ায় তেমন বেশি সংখ্যক বন্দর গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে ভারতে 13টি প্রধান বন্দর এবং 21টি মাঝারি বন্দরসহ 187 টি ক্ষুদ্র বন্দর আছে। এর মধ্যে পশ্চিম উপকূলে বন্দরের সংখ্যা পূর্ব উপকূল অপেক্ষা বেশি। কারণ পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলের পরিবেশ বন্দর গঠনের জন্য অধিক উপযুক্ত। যেমন

অধিক ভগ্নতা: 

পশ্চিম উপকূলের অন্তর্গত কোঙ্কন ও মালাবার উপকূলভাগ খুবই ভগ্ন প্রকৃতির হওয়ায় স্বাভাবিক বন্দর ও পোতাশ্রয় গড়ে ওঠার পক্ষে আদর্শ। সে তুলনায় পূর্ব উপকূলভাগ অনেকটাই অভগ্ন প্রকৃতির।

অধিক জলের গভীরতা: 

পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলের মহীসোপান অংশ খাড়াভাবে গভীর সমুদ্রে নেমে যাওয়ায় পশ্চিম উপকূলের গভীরতা পূর্ব উপকূল অপেক্ষা বেশি।

ঝড়ঝঞ্ঝার প্রকোপ কম: 

আরব সাগরে বঙ্গোপসাগরের তুলনায় অনেক কম সংখ্যায় নিম্নচাপের কারণে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। ফলে পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলে ঝড়ঝঞ্ঝার প্রকোপ কম।

পশ্চিমের দেশসমূহের সঙ্গে দূরত্ব কম: 

পশ্চিমের দেশগুলি (ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকার দেশসমূহ) এবং মধ্যপ্রাচ্যের খনিজ তেল সমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূলের দূরত্ব কম।

শিল্পে অধিক উন্নত: 

পশ্চিম উপকূল সংলগ্ন রাজ্যগুলি যেমন গুজরাট, মহারাষ্ট্র শিল্পে অধিক উন্নত। সে তুলনায় পূর্ব উপকূল সংলগ্ন রাজ্যগুলি শিল্পে ততটা উন্নত নয়।

স্বাভাবিক পোতাশ্রয়: 

জাহাজের নিরাপত্তা, পণ্যবোঝাই ও খালাস এবং জাহাজ মেরামতের জন্য বিস্তৃত পোতাশ্রয় থাকা প্রয়োজন। পূর্ব উপকূলের তুলনায় পশ্চিম উপকূল স্বাভাবিক পোতাশ্রয় গড়ে তোলার অনুকূল হওয়ায় এখানে বেশি বন্দর গড়ে উঠেছে।

বাণিজ্যিক সুবিধা: 

পশ্চিমের উন্নত দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে কম পথ অতিক্রম করতে হয় বলে ভারতের পূর্ব উপকূল অপেক্ষায় পশ্চিম উপকূলে অধিক বন্দর গড়ে উঠেছে।

Leave a Comment