জার্মানির ঐক্যের পথে প্রধান বাধাগুলি কী ছিল? |
ফরাসি বিপ্লবকালে ইটালির মতো জার্মানিও ছিল ‘ভৌগোলিক সংজ্ঞা’ মাত্র। এই সময় জার্মানি ৩০০টি ছোটো-বড়ো রাজ্যে বিভক্ত ছিল। নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ‘কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন’ গঠনের মাধ্যমে ৩০০টি রাজ্যের পরিবর্তে ৩৯টি রাজ্যে জার্মানিকে বিভক্ত করেন। কিন্তু নেপোলিয়নের পতনের পর পুনরায় জার্মান রাষ্ট্র সমবায়ের (Bund) ঐক্য শিথিল হয়ে যায়। ঐতিহাসিক ম্যারিয়ট (Marriot)-এর ভাষায়- “জার্মানিতে বহু রাষ্ট্র ছিল, কিন্তু কোনো অখণ্ড রাষ্ট্র ছিল না” (States there were in Germany but there was no state)।
ঐক্যের পক্ষে প্রধান প্রতিবন্ধকতা
জার্মানির ঐক্যের পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলি ছিল-
[1] জার্মানির ঐক্যের পথে প্রধান বাধা ছিল ভিয়েনা চুক্তি। কারণ এই ১ চুক্তির মাধ্যমে যে জার্মান রাষ্ট্র সমবায় গঠিত হয় তার বিলোপ না ঘটলে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব ছিল না।
[2] সংস্কৃতি, ভাষা ও জাতিগত ঐতিহ্য এক ধরনের হলেও বিভিন্ন জার্মান রাষ্ট্রগুলির মধ্যে নানান বিষয়ে মতপার্থক্য ও বিদ্বেষ ছিল।
[3] জার্মানির উত্তরাঞ্চলের রাজ্যগুলি ছিল প্রোটেস্ট্যান্ট এবং দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলি ছিল ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী। ফলত, এই এক দুটি অঞ্চলের মধ্যে ধর্মীয় বিরোধও ঐক্যকে বিঘ্নিত করে।
[4] জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল ছিল অস্ট্রিয়ার উপর। আর অস্ট্রিয়া ক্রমাগত এই ঐক্য প্রচেষ্টায় বাধা দিত। আবার অস্ট্রিয়া-সহ জার্মানির ঐক্যে মেটারনিখের আপত্তি ছিল। তিনি এই আদর্শকে বলতেন- ‘অপবিত্র আদর্শ’।