ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ত্রুটিগুলি লেখো

ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ত্রুটিগুলি লেখো
ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ত্রুটিগুলি লেখো।

ভিয়েনা সম্মেলনের ত্রুটিসমূহ

নেপোলিয়নের পতনের পর ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির পুনর্গঠন, সীমানার পুনর্বিন্যাস এবং শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা নগরীতে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে তিনটি নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এই নীতিগুলির কার্যকারিতার বিরুদ্ধে প্রধান সমালোচনাগুলি হল-

জাতীয়তাবাদের অবমাননা

ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ন্যায্য অধিকার ও ক্ষতিপূরণ নীতি প্রয়োগ করে ফরাসি বিপ্লবপ্রসূত জাতীয়তাবাদের চরম অবমাননা করেছিলেন। যেমন জার্মানি বা ইটালির রাজ্যগুলিকে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় রাষ্ট্রে পরিণত না করে অস্ট্রিয়া বা প্রাশিয়ার অধীনে রেখে জাতীয়তাবাদের অবমাননা করা হয়েছিল।

ন্যায্য অধিকার নীতির অবমাননা

ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত ন্যায্য অধিকার নীতিকেও সর্বদা মান্য করা হয়নি। যেমন- এই নীতি অনুযায়ী ভেনিস প্রজাতান্ত্রিক শাসনের দাবি জানালে তার দাবিকে অবমাননা করা হয়েছিল।

অযৌক্তিক ব্যবস্থা

ভিয়েনা সম্মেলনে পোল্যান্ডবাসীর আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে পোল্যান্ডকে ব্যবচ্ছেদ করা হয়। আবার জাতি, ধর্ম ইত্যাদি উপেক্ষা করে বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের অধীনে আনা হয়। এই দুই ব্যবস্থাই ছিল অযৌক্তিক।

গণতন্ত্রের অবমাননা

ভিয়েনা সম্মেলনে গণতন্ত্রের অবমাননা করা হয়েছিল। এখানে নেপোলিয়নের উদারতান্ত্রিক সংবিধানকে অস্বীকার করে ইউরোপের স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থাকে স্বীকার করা হয়েছিল।

উপরোক্ত ত্রুটি সত্ত্বেও বলা যায়, ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলি একেবারে অর্থহীন ছিল না। কারণ এর ফলে একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপে বেশ কয়েক বছরের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; আবার অন্যদিকে তেমনি আন্তর্জাতিকতাবাদের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

Leave a Comment