ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর Class 11 বাংলা 2nd সেমিস্টার

সূচিপত্র

ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর Class 11 বাংলা 2nd সেমিস্টার

ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর
ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর

এখানে একাদশ শ্রেণীর ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করা হলো। প্রতিটি প্রশ্নের মান: ৩ // Class 11 Second Semester Bengali Question Answer // ভাব সম্মিলন কবিতার কবি বিদ্যাপতি

১। “কি কহব রে সখি আনন্দ ওর।”-পঙ্ক্তিটির বক্তা কে? পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য লেখো।

আলোচ্য পঙ্ক্তিটির বক্তা রাধা।

শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনবাসী এবং শ্রীরাধিকাকে ছেড়ে চিরস্থায়ীভাবে মথুরা চলে গেলে কৃষ্ণ বিচ্ছেদে রাধার জীবনে নেমে আসে গভীর বিরহ। তাই বাস্তবে রাধা কৃষ্ণের সঙ্গে মিলিত হতে না পেরে, ভাবে বা কল্পনায় মিলিত হয়ে সীমাহীন আনন্দ উপভোগ করেছেন। রাধা তাঁর এই সুখানুভূতির কথা সখীকে জানিয়েছেন আলোচ্য পঙ্ক্তির মাধ্যমে।

২। “কি কহব রে সখি আনন্দ ওর।”-পদটি কার লেখা, কোন্ পর্যায়ের পদ? ওই পর্যায় সম্পর্কে আলোচনা করো।

আলোচ্য পদটি চৈতন্যপূর্ব যুগের বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য পদকর্তা বিদ্যাপতির ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন পর্যায়ের অন্তর্গত।

বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যে ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন একটি উল্লেখযোগ্য পর্যায়। বৈষ্ণব পদসাহিত্যের শ্রীকৃষ্ণ কেবলমাত্র শ্রীরাধিকার প্রেমিকই নন, তিনি ছিলেন ভক্তের ভগবান-মথুরারাজ নিষ্ঠুর কংসের হাত থেকে মর্ত্যবাসীর রক্ষাকর্তা। কংসকে বধ করার জন্য কৃষ্ণ বৃন্দাবনবাসী এবং শ্রীরাধাকে ছেড়ে মধুরা চলে যান। আর কোনোদিন ফিরে আসেননি। এর ফলে রাধার হৃদয় বিরহে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই বাস্তবে যখন মিলন সম্ভব হল না, তখন বৈয়ব কবিরা ভাব বা কল্পনার জগতে কৃষ্ণের সঙ্গে রাধার মিলন ঘটিয়ে বেশ কিছু পদ রচনা করেছেন। এই পদগুলিই ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন পর্যায়ের অন্তর্গত।


ছুটি গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর ক্লাস 11 সেকেন্ড সেমিস্টার বাংলা
প্রশ্নমান: ২

৩। ‘কি কহব রে সখি… মাধব মন্দিরে মোর।।’-পঙ্ক্তিটির উৎস নির্ণয় করে তাৎপর্য আলোচনা করো।

আলোচ্য পঙ্ক্তিটি বৈষ্ণব পদকর্তা বিদ্যাপতির ‘ভাবোল্লাস’ পদ থেকে গৃহীত হয়েছে।

কৃষ্ণ বৃন্দাবনবাসী ও রাধাকে ত্যাগ করে মথুরা চলে গেলে রাধা বিচ্ছেদ বেদনায় কাতর হয়ে ওঠেন। তাই রাধা যখন বাস্তবে কৃষ্ণের সঙ্গে মিলিত হতে পারলেন না, তখন তিনি কল্পনায় বা ভাবের জগতে মিলিত হয়ে সীমাহীন আনন্দ লাভ করেছেন। রাধা অনুভব করেছেন, তাঁর প্রাণপ্রিয় কৃষ্ণ বা মাধব তাঁর হৃদয়মন্দিরে চিরকাল বিরাজমান। এ কথা রাধা তাঁর সখীকে জানিয়েছেন।

৪। “পাপ সুধাকর… তত সুখ ভেল।।”-বক্তা কার সম্পর্কে, কাকে এ কথা বলেছেন? এই বক্তব্যের তাৎপর্য কী?

এখানে বক্তা রাধা সখীকে তাঁর প্রেমিক কৃষ্ণ সম্পর্কে এ কথা বলেছেন।

কৃষ্ণ রাধাকে ত্যাগ করে মথুরা চলে গেলে রাধা বিচ্ছেদ বেদনায় কাতর হয়ে ওঠেন। আর সেই হৃদয়বেদনা আরও বৃদ্ধি পায় চাঁদের বাঁধভাঙা হাসির জন্য। কিন্তু রাধা কল্পনা বা ভাবের জগতে কৃষ্ণকে অনুভব করে, তাঁর প্রিয়তম মুখ দর্শন করে সমস্ত দুঃখ-যন্ত্রণা ভুলে ততোধিক সুখ লাভ করেন।


ক্লাস 11 সেকেন্ড সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ২

৫। “… তব হাম পিয়া দূর দেশে না পাঠাই।।”-অংশটির তাৎপর্য লেখো।

বৈষ্ণব পদাবলিতে শ্রীকৃষ্ণকে শুধুমাত্র রাধিকার সঙ্গে প্রেমলীলা করার জন্য মর্ত্যে আগমন করানো হয়নি। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন বিষ্ণুর অবতার, ভক্তের ভগবান। তাই নিষ্ঠুর কংসের হাত থেকে মথুরাবাসীকে রক্ষা করার জন্য কৃষ্ণ রাধাকে ছেড়ে মথুরায় চলে গেলে, রাধা গভীর দুঃখে কাতর হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ বিরহের পর রাধা যখন ভাবের জগতে তাঁর প্রাণপ্রিয় কৃষ্ণকে উপলব্ধি করেন, তখন তিনি চরম সুখ লাভ করেন। তাই রাধা তাঁর সখীকে জানিয়েছেন যে, তাঁকে আঁচল ভরে মহামূল্যবান রত্ন দিলেও তার বিনিময়ে কৃষ্ণকে দূরদেশে বা তাঁর চোখের আড়াল করবেন না। রাধার নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে পঙ্ক্তিটিতে।

৬। কৃষ্ণ রাধার জীবনে যে অপরিহার্য, তা কীভাবে রাধার মুখ দিয়ে কবি তুলে ধরেছেন?

বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যে রাধা ও কৃষ্ণ একদিকে যেমন প্রেমিক- প্রেমিকা, তেমনই পাশাপাশি ভক্ত ও ভগবানের সম্পর্কে আবদ্ধ। কৃষ্ণ ছাড়া রাধা যেন মণিহারা ফণি। তাই কৃষ্ণ বিচ্ছেদে রাধার জীবন কতটা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে, তা তাঁর সখীকে জানিয়েছেন। রাধা জানিয়েছেন, তাঁর প্রিয় কৃষ্ণ তাঁর কাছে শীতের গাত্রাবরণ, গ্রীষ্মের শীতল বাতাস, বর্ষার ছাতা এবং দরিয়ার নৌকার মতোই অপরিহার্য। এ কথা বৈষুব পদাবলির কবি বিদ্যাপতি দক্ষ শিল্পীর মতো পদটিতে চিত্রিত করেছেন।


একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ২

৭। “শীতের ওঢ়নী পিয়া গীরিষির বা।/ বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না।।”-অংশটির তাৎপর্য লেখো।

কবি বিদ্যাপতি তাঁর ‘ভাবোল্লাস’ পদটিতে রাধার জীবনে কৃষ্ণর অপরিহার্যতাকে বিভিন্ন উপমা ব্যবহার করে চিত্রিত করেছেন। রাধা সখীকে জানিয়েছেন, তাঁর প্রেমিক কৃষ্ণ তাঁর জীবনে শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষার জন্য গাত্রাবরণ বা ওড়নার মতো, গ্রীষ্মের সময় প্রাণজুড়ানো বাতাসের মতো কিংবা বর্ষার সময় বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ছাতার মতো বা গভীর সমুদ্র পার হওয়ার জন্য নৌকার মতোই অপরিহার্য।

৮। “ভণয়ে বিদ্যাপতি শুন বরনারি।”-কবি ‘বরনারি’ বলতে কাকে বুঝিয়েছেন? পদটির শেষে কবি কেন নিজের নাম উল্লেখ করেছেন আলোচনা করো।


Class XI Second Semester
বাংলা বিষয়ের ছুটি গল্পের ২ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ২

কবি বিদ্যাপতি তাঁর ‘ভাবোল্লাস’ পদটিতে ‘বরনারি’ বলে সম্বোধন করেছেন শ্রীরাধাকে। ‘বরনারি’ শব্দের অর্থ নারীশ্রেষ্ঠ বা সুন্দরী নারী। পাঠ্য পদটির শেষে কবি বিদ্যাপতি নিজের নাম ভণিতায় উল্লেখ করে পদটির ইতি টেনেছেন। কারণ মধ্যযুগের সাহিত্যের রীতি ছিল কবি বা পদকর্তারা তাঁদের নাম, পরিচয় পদের মধ্যে উল্লেখ করতেন। বিদ্যাপতি যেহেতু মধ্যযুগের কবি, তাই তাঁর পদে এই রীতি অনুসৃত হয়েছে।

৯। ‘ভণয়ে বিদ্যাপতি শুন বরনারি।/সুজনক দুখ দিবস দুই-চারি।।”-অংশটির তাৎপর্য লেখো।

পাঠ্য ‘ভাবোল্লাস’ পদটি পদকর্তা বিদ্যাপতি রাধার কৃষ্ণ বিচ্ছেদের বেদনা থেকে ভাবের জগতে কৃষ্ণমিলনের চরম আনন্দ লাভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচনা করেছেন। পদটিতে কবি ভণিতায় রাধাকে সুন্দরী নারী বা নারীশ্রেষ্ঠ সম্বোধন করে জানিয়েছেন, সুজন অর্থাৎ ভালো মানুষের দুঃখের দিন ক্ষণস্থায়ী। এই দুঃখ দু-চার দিনের জন্য হয়ে থাকে। সাময়িক দুঃখের পরে জীবনে আবার সুখ বা আনন্দ বিরাজ করে।

আরও পড়ুন- ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment