ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর | XI 2nd Semester WBCHSE
১। “বালকদিগের সর্দার ফটিক চক্রবর্তীর মাথায় চট করিয়া একটা নূতন ভাবোদয় হইল।” কার লেখা কোন্ রচনার অংশ? বক্তা কে? ফটিকের মাথায় চট করে কী নতুন ভাবোদয় হয়েছিল?
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
আলোচ্য উক্তিটির বস্তা হলেন লেখক।
নদীর ধারে প্রকান্ড একটা শালকাঠ পড়ে ছিল। সেটি মাণ্ডুলে রূপান্তরিত হওয়ার অপেক্ষা করছিল। ঠিক হয়েছিল, সেই প্রকান্ড শালকাঠকে সবাই মিলে গড়িয়ে নিয়ে যাবে। ফটিক চক্রবর্তী ছিল বালকদলের সর্দার। তার মাথাতেই চট্ট করে এই নতুন ভাবোদয় হয়েছিল।
২। “তাহাই উপলব্ধি করিয়া বালকেরা এ প্রস্তাবে সম্পূর্ণ অনুমোদন করিল।”-বত্তা কে? কার কোন্ প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। বালকেরা কী উপলব্ধি করে কেন সেই প্রস্তাবে সম্পূর্ণ অনুমোদন করেছিল?
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে আলোচ্য উক্তিটির বস্তা লেখক।
ফটিক প্রস্তাব করেছিল নদীর ধারে পড়ে থাকা প্রকাণ্ডও শালকাঠটাকে সকলে মিলে গড়িয়ে নিয়ে যাবে।
বালকেরা উপলব্ধি করেছিল, যে ব্যপ্তির কাঠ তিনি তাঁর প্রয়োজনের সময় কাঠের এই অবস্থান দেখে প্রচণ্ড বিস্মিত হবেন। তিনি অসম্ভব বিরক্ত হবেন এবং প্রচণ্ড অসুবিধায় পড়বেন। বালকদল বয়সে একেবারে কাঁচা। তাদের কাছে এই ধরনের ঘটনা ভীষণ আনন্দ এনে দেয়। অন্য ব্যক্তির অসুবিধা তাদের কাছে বিরাট আনন্দের মজার বিষয় হয়ে ওঠে। এইসব আনন্দময় মুহূর্ত উপলব্ধি করেই বালকেরা ওই প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল।
৩। “দেখ, মার খাবি। এইবেলা ওঠ।”-বক্তা কো বক্তা কাকে কখন কথাগুলো বলেছিল। বক্তা কেন কথাগুলো বলেছিল?
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে আলোচ্য উত্তিটির বস্তা ফটিক।
বক্তা তার ভাই মাখনকে কথাগুলো বলেছিল। নদীর ধারে প্রকাণ্ড একটা শালকাঠ পড়ে ছিল। বালকদের সর্দার ফটিক চক্রবর্তী ঠিক করেছিল সেই শালকাঠটা সকলে মিলে গড়িয়ে নিয়ে যাবে। বালকরাও সেই প্রস্তাব আনন্দের সঙ্গে অনুমোদন করেছিল। বালকরা এরপর কোমরবেঁধে সেই কাজে যোগদান করার সময় দেখা গেল ফটিকের ভাই মাখনলাল সেই কাঠের গুঁড়ির ওপর বসে আছে। সে খুব একটা উদাসীন ভাব নিয়ে বসেছিল। একদল বালক এসে ভয়ে ভয়ে তাকে একটু-আধটু ঠেলেছিল। কিন্তু মাখন তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হয়নি। তখনই ফটিক মাখনকে আলোচ্য কথাগুলো বলেছিল।
বক্তা ফটিক ছিল বালকদলের সর্দার। সে একটা মজাদার খেলার আয়োজন করেছিল। বালকদল সেই খেলায় যোগদান করার পর মাখনের জন্যই বিমর্ষ হয়ে পড়ে। এই ঘটনায় ফটিক প্রচণ্ড রেগে যায়। বিশেষত তার নিজের ভাই এই ঘটনা ঘটানোয় সে ভীষণ রেগে গিয়েই আলোচ। কথাগুলো বলেছিল।
৪। “ছেলেরা তাহার এইরূপ উদার ঔদাসীন্য দেখিয়া কিছু বিমর্ষ হইয়া গেল।” প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। ছেলেরা কার কী উদাসীন্য দেখে কেন বিমর্ষ হয়েছিল?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি সংকলিত হয়েছে। বালকদলের সর্দার ফটিকের মাথায় একটা নতুন বুদ্ধি এসেছিল। নদীর ধারে একটা প্রকাণ্ড শালকাঠ পড়েছিল। ঠিক হয়েছিল, সেটা সবাই মিলে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন ফটিকের ভাই মাখনলাল খুব গম্ভীরভাবে সেই গুঁড়ির ওপর গিয়ে বসেছিল। এই ঘটনা প্রসলোই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
ছেলেরা ফটিকের ভাই মাখনলালের উদার ঔদাসীন্য দেখে কিছু বিমর্ষ হয়ে গিয়েছিল। বালকদের সর্দার ফটিক চক্রবর্তীর মাথায় হঠাৎ একটা দারুণ বুদ্ধি এসেছিল। নদীর ধারে একটা প্রকাণ্ড শালকাঠ পড়েছিল। ঠিক হয়েছিল সবাই মিলে সেটাকে গড়িয়ে নিয়ে যাবে। যে ব্যপ্তির কাঠ তিনি প্রয়োজনের সময় প্রচন্ড বিরক্ত হবেন এবং তার বিশেষ অসুবিধা হবে-একথা ভেবেই আনন্দে সকলে এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল। ইতিমধ্যে মাখনলাল গম্ভীরভাবে সেই গুঁড়ির ওপর বসেছিল। তার উদাসীনতা ছেলেদের বিমর্ষ করেছিল। তা ছাড়া, তাদের খেলার এমন উদ্যোগ ও আয়োজন মুহূর্তের মধ্যে নষ্ট হওয়াতেই তারা এমন বিমর্ষ হয়েছিল।
৫। “কিন্তু অন্যান্য পার্থিব গৌরবের ন্যায় ইহার আনুষঙ্গিক যে বিপদের সম্ভাবনাও আছে, তাহা তাহার কিংবা আর-কাহারও মনে উদয় হয় নাই।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। কোন্ বিষয়টি কেন তাদের মনে হয়নি?
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে। নদীর ধারে একটা প্রকান্ড শালকাঠ মাণ্ডুলে রূপান্তরিত হওয়ায় অপেক্ষায় পড়ে ছিল। বালকদের নেতা ফটিক চক্রবর্তী অন্যান্য বালকদের কাছে প্রস্তাব রেখেছিল সেটা সকলে মিলে গড়িয়ে নিয়ে যাবে। বালকেরা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল। ফটিকের ভাই মাখন তখন সেই গুঁড়িটার ওপর গিয়ে বসল। ফটিক তাকে মারার ভয় দেখালেও সে সেখান থেকে নামেনি। তারপর সিদ্ধান্ত হয়েছিল মাখনকে সুদ্ধ ওই কাঠ গড়ানো হবে। এই প্রসঙ্গেই লেখকের এই উক্তি।
মাখন সেই প্রকাণ্ড শালকাঠটার ওপর বসেছিল। সে ভেবেছিল তাকে সুদ্ধ কাঠটা গড়ালে তাতে বেশ গৌরব আছে। কিন্তু এইসব কাজে পার্থিব গৌরব আছে ঠিকই কিন্তু যে-কোনো মুহূর্তেই বড়ো বিপদ ঘটতে পারে। মাখনের সেই বিপদের কথা মনে হয়নি। এমনকি বালকদের কারও মনেও বিপদের সম্ভাবনা দেখা দেয়নি। প্রকৃতপক্ষে কিশোর-বালকদল বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন খেলায় অভিনব আনন্দ পাওয়ার মধ্যেই মশগুল থাকে। তারা ভবিষ্যৎ বিপদের কথা ভাবতে পারে না। বিপদ-আপদগুলোকে নিয়ে খেলাধুলো করতেই তাদের অদ্ভুত আনন্দের অনুভূতি জাগ্রত হয়। বিপদের ঝুঁকির কথা তাদের মনেই আসে না। এটাই তাদের এই বয়সের বৈশিষ্ট্য।
ক্লাস 11 সেকেন্ড সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ৫
৬। “খেলা ভাঙিয়া গেল।” কার লেখা কোন্ রচনার অংশ? কোন্ খেলার কথা এখানে বলা হয়েছে? উক্ত খেলাটি কখন ভেঙে গিয়েছিল?
বাংলা ছোটোগল্পের শ্রেষ্ঠ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ গল্পের অংশ এটি।
নদীর ধারে পড়ে থাকা প্রকাণ্ড শালকাঠটাকে সবাই মিলে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার খেলার কথাই এখানে বলা হয়েছে।
নদীর ধারে পড়ে থাকা প্রকাণ্ড শালকাঠটা গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার খেলাটা শুরু হওয়ার মুহূর্তেই বালকের দল বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল। কারণ ফটিকের ভাই মাখন সেই শালকাঠটার ওপর গিয়ে বসেছিল। ফটিক তাকে মারার ভয় দেখিয়েও সেখান থেকে নামাতে পারেনি। তখন ফটিক প্রস্তাব করেছিল মাখনকে সুদ্ধ ওই কাঠটা গড়ানো যাক। এরপরই ছেলেরা ‘মারো ঠেলা হেঁইয়ো, সাবাস জোয়ান হেঁইয়ো’ বলে কোমর বেঁধে সেই প্রকাণ্ড শালকাঠের গুঁড়িটাকে গড়াতে শুরু করল। সেই গুঁড়ি একপাক ঘুরতে না ঘুরতেই মাখন ভূমিসাৎ হয়ে গেল। মাখন তখনই মাটি থেকে উঠে ফটিকের ওপর গিয়ে পড়ল এবং অন্ধভাবে মারতে লাগল। ফটিকের নাকে মুখে আঁচড় কেটে কাঁদতে কাঁদতে মাখন বাড়ির দিকে গেল। তখনই খেলা ভেঙে গেল।
৭। “বাবুটি তখন অন্য লোকের সাহায্য অবলম্বন করিয়া চক্রবর্তীদের গৃহের সন্ধানে চলিলেন।”-‘বাবুটি’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? ‘চক্রবর্তীদের গৃহ’ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে? বাবুটিকে কখন অন্য লোকের সাহায্য নিয়ে চক্রবর্তীদের বাড়ির সন্ধানে যেতে হয়েছিল?
বাংলা ছোটোগল্পের শ্রেষ্ঠ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে ‘বাবুটি’ বলতে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফটিকের মামার কথা বলা হয়েছে।
‘চক্রবর্তীদের গৃহ’ বলতে ফটিকদের বাড়ির কথা বলা হয়েছে।
ফটিক কয়েকটা কাশ তুলে নিয়ে একটা আধডোবা নৌকার গলুইয়ের ওপর বসে চুপচাপ কাশের গোড়া চিবোতে লাগল। তখন একটা বিদেশি নৌকা ঘাটে এসে পৌঁছাল। একজন মাঝবয়সি ভদ্রলোক সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন। তিনি ফটিকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন চক্রবর্তীদের বাড়ি কোথায়। ফটিক ডাটা চিবোতে চিবোতে বলেছিল ‘ওই হোথা’। কিন্তু কোনন্দিক যে নির্দেশ করেছিল তা বোঝার সাধ্য ছিল না। তখন সেই ভদ্রলোক আবার জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘কোথা’। তখন ফটিক বলেছিল, সে জানে না। তখনই সেই ভদ্রলোকটিকে অন্য লোকের সাহায্য অবলম্বন করে চক্রবর্তীদের সন্ধানে যেতে হয়েছিল।
৮। “আবার তুই মাখনকে মেরেছিস।” বক্তা কে? বক্তা কাকে কথাগুলো বলেছিল? বস্তা কখন কেন কথাগুলো বলেছিল?
বাংলা ছোটোগল্পের শ্রেষ্ঠ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে আলোচ্য উক্তিটির বস্তা ফটিকের মা।
বক্তা ফটিককে কথাগুলো বলেছিল।
নদীর ধারে প্রকাও একটা শালকাঠ গড়ে ছিল। বালকদের সর্দার ফটিক চক্রবর্তী প্রস্তাব দিয়েছিল সেটা সকলে মিলে গড়িয়ে নিয়ে যেতে হবে। বালকের দল মহা-আনন্দে সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল। সেইসময় ফটিকের ছোটোভাই মাখন সেই গুঁড়ির ওপরে বসেছিল। ফটিক তাকে সেখান থেকে উঠে যাওয়ার কথা বললেও সে শোনেনি। তখন সবাই মিলে মাখনকে সুদ্ধ সেই কাঠ গড়াতে শুরু করেছিল। সেই গুঁড়িটা একপাক ঘুরতে না ঘুরতেই মাখন ভূমিসাৎ হয়ে গেল। তখন মাখন ফটিককে অন্ধভাবে মারতে শুরু করেছিল। তার নাকে মুখে আঁচড় কেটে মাখন বাড়ি ফিরল। এরপর ফটিক বাড়ি ফেরার পর তার মা প্রচন্ড রেগে গিয়ে ফটিককে আলোচ্য কথাগুলো বলেছিল।
৯। “কী হচ্ছে তোমাদের।”- বক্তা কে? বক্তা কাকে কথাগুলো বলেছিল। কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা কথাগুলো বলেছিল?
বাংলা ছোটোগল্পের শ্রেষ্ঠ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে আলোচ্য উক্তিটির বস্তা ফটিকের মামা।
বক্তা ফটিকের মাকে কথাগুলো বলেছিল।
নদীর ধারে পড়ে থাকা শালকাঠের গুঁড়িটাকে নিয়ে খেলার সময় ফটিকের ছোটোভাই মাখন ফটিককে অন্ধভাবে মেরেছিল। এমনকি মাখন ফটিকের নাকে মুখে আঁচড় কেটে বাড়ি ফিরেছিল। এরপর ফটিক বাড়ি ফেরার পর তার মা, প্রচন্ড রেগে গিয়ে তাকে বলেছিল ‘আবার তুই মাখনকে মেরেছিস।” ফটিক এই অভিযোগ স্বীকার করেনি। মাখনও তার মাকে জানিয়েছিল, ফটিক তাকে মেরেছে। তখন ফটিক সহ্য করতে না পেরে মাখনকে সশব্দে চড় কষিয়ে দেয়। ফটিকের মা মাখনের পক্ষ নিয়ে ফটিকের পিঠে দু-তিনটি চড় কষে দিলেন। ফটিক তার মাকে ঠেলে দিল। ফটিকের মা তার গায়ে হাত তোলার জন্য চিৎকার করে উঠেছিল। তখনই ফটিকের মামা ঘরে ঢুকে আলোচ্য কথাগুলো বলেছিল।
১০। “ফটিক আমার হাড় জ্বালাতন করিয়াছে।”-প্রসঙ্গটি লেখো। ফটিক কীভাবে হাড় জ্বালাতন করেছে?
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি সংকলিত হয়েছে। আলোচ্য গল্পে ফটিক ও মাখন দুই ভাই। তারা পিতৃহীন। মায়ের কাছে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করে। ফটিকের মামা বিশ্বস্তরবাবু বহুদিন পর তাদের বাড়িতে এসেছিলেন। কয়েকদিন বেশ আনন্দেই কেটেছিল। অবশেষে বিদায় নেওয়ার দুই-একদিন আগে ফটিকের মামা তার মায়ের কাছে ছেলেদের পড়াশোনা ও মানসিক উন্নতি সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে ফটিকের মা তখন আলোচ্য কথাগুলি বলেন।
ফটিকের মামার কাছে ফটিকের মা ফটিক সম্বন্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ফটিক ছিল অবাধ্য ও উচ্ছৃঙ্খল, পড়াশোনায় তার একেবারেই মন ছিল না। সে সবসময় নানা ধরনের খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকত। মায়ের মনে হত ফটিক সর্বদা মাখনকে মারধর করে। ফটিকের অবাধ্যতা, উচ্ছৃঙ্খলতা এবং পাঠে অমনোযোগিতার জন্য ফটিক তার মায়ের কাছে ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছিল। সে সবসময় তার মাকে জ্বালাতন করত। তার জ্বালাতন খুব বেশি ছিল এটা বোঝাতেই আলোচ্য কথাগুলি বলা হয়েছে।
একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ৫
১১। “যদিও ফটিককে বিদায় করিতে তাহার মায়ের আপত্তি ছিল না।”-কোন্ রচনার অংশ? প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। ফটিককে বিদায় করতে তার মায়ের আপত্তি ছিল না কেন?
বাংলা ছোটোগল্পের শ্রেষ্ঠ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পের অংশ এটি।
ফটিকের মামা ফটিককে পড়াশোনার জন্য কলকাতা নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। ফটিক আনন্দের সঙ্গে সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছিল। সেই প্রসলোই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
ফটিককে বিদায় দিতে তার মায়ের কোনো আপত্তি ছিল না। কারণ তাঁর মনে সবসময় একটা ভয় কাজ করত। ফটিক কোনোদিন তার ছোটো ভাই মাখনকে জলে ফেলে দেয় কিনা অথবা মাথাই ফাটিয়ে দেয় কিনা। ফটিক কখন কী দুর্ঘটনা ঘটায় এই ভাবনা তার মায়ের মনে সবসময় ছিল। কারণ ফটিক ছিল দুরন্ত, অবাধ্য, উচ্ছৃঙ্খল। সেই কারণেই ফটিককে বিদায় দিতে তার মায়ের আপত্তি ছিল না।
১২। “উৎসাহে তাহার রাত্রে নিদ্রা হয় না।”-কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? রাত্রে নিদ্রা না হওয়ার বিষয়টি লেখো।
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি সংকলিত হয়েছে। ফটিকের মামা বিশ্বস্তরবাবু ফটিককে তার কলকাতার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিক্ষা দেওয়ার কথা জানান। একথা শুনে ফটিক আনন্দে লাফিয়ে উঠেছিল। ‘কবে যাবে’, ‘কখন যাবে’ বলে ফটিক মামাকে অস্থির করে তুলেছিল। ফটিকের এই প্রবল আনন্দ ও উৎসাহ প্রসঙ্গেই আলোচ্য উদ্ভিটি করা হয়েছে।
কলকাতায় মামার বাড়ি যাওয়ার নামে ফটিক প্রবল উৎসাহ দেখিয়েছিল। মামাকে সে একেবারে অস্থির করে তুলেছিল। গ্রামের ছেলে ফটিকের মনে কলকাতা সম্বন্ধে একটা অদ্ভুত কৌতূহল ছিল। সে ভেবেছিল কলকাতা এক স্বপ্নের জগৎ। মায়ের দিনরাত কড়া শাসন এবং ছোটোভাই মাখনের প্রতি মায়ের বিশেষ দুর্বলতা যেন তাকে আরও বেশি উৎসাহী করে তুলেছিল। তা, ছাড়া নতুন কোনো জায়গায় যাওয়ার ব্যাপারে কিশোর বয়সে একটা বিশেষ উন্মাদনা থাকে। নতুন জায়গা তথা কলকাতায় যাওয়ার ব্যাপারে অতি আগ্রহী হওয়ায় রাত্রে ফটিকের ঘুম আসছিল না। কিশোর বয়সের সেই অদ্ভুত উন্মাদনাই এখানে ফুটে উঠেছে।
১৩। “বিশেষত, তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই।” উক্তিটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। উক্তিটির মধ্য দিয়ে লেখক যা বুঝিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে। আলোচ্য গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক। তার মামা বিশ্বস্তরবাবু তাকে কলকাতায় নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন শিক্ষাদানের জন্য। কিন্তু ফটিকের মামি এতে সন্তুষ্ট হননি। তেরো বছরের অপরিচিত অশিক্ষিত পাড়াগ্রামের ছেলের হঠাৎ আগমনে ফটিকের মানি বিশেষ অসন্তুষ্টই হন। ফটিকের এই উপস্থিতি প্রসঙ্গেই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
লেখকের মতে, তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলের মতো এমন বালাই পৃথিবীতে আর নেই। এদের শোভাও নেই, কোনো কাজেও লাগে না। এরা স্নেহও উদ্রেক করে না। আবার এদের সঙ্গঙ্গসুখও ভালো লাগে না। এদের মুখের আধো আধো কথা ন্যাকামি, পাকা কথা জ্যাঠামি, কথামাত্রই বেশি বকবক বলে মনে হয়। এই বয়সের ছেলেরা হঠাৎই কাপড়চোপড়ের পরিমাণ না রক্ষা করে বেমানান রূপে বেড়ে ওঠে। সমাজের লোকজন সেটাকে তার একটা কুশ্রী স্পর্ধার মতো জ্ঞান করে। শৈশবের লালিত্য থাকে না। কন্ঠস্বরের মিষ্টতা হঠাৎ চলে যায়। সকলে যেন সে কারণে তাকে মনে মনে অপরাধী করে। শৈশব ও যৌবনের অনেক দোষ ক্ষমা করা যায় কিন্তু এই সময়ের কোনো স্বভাবিক ত্রুটিও অসহ্য বোধ হয়। এইসব কারণেই লেখক আলোচ্য কথাগুলি বলেছেন।
১৪। “কিন্তু এই সময়ের কোনো স্বাভাবিক অনিবার্য ত্রুটিও যেন অসহ্য বোধ হয়।”-বক্তা কে? ‘এই সময়ের’ বলতে কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে। আলোচ্য উক্তিটির বক্তব্যবিষয় নিজের ভাষায় আলোচনা করো।
আলোচ্য উক্তিটির বস্তা ‘ছুটি’ গল্পের লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
‘এই সময়ের’ বলতে তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলেদের বয়সকালকে বোঝানো হয়েছে।
লেখকের মতে, তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নেই। এ বয়সের ছেলেদের শোভাও নেই, কোনো কাজেও লাগে না। এরা স্নেহ উদ্রেক করে না, তাদের সঙ্গঙ্গসুখও বিশেষ ভালো লাগে না। তাদের মুখের আধো-আধো কথা ন্যাকামো বলে মনে হয়, পাকা কথা জ্যাঠামির মতো, তাদের কথামাত্রই যেন প্রগল্ভতা। তাদের শৈশবের লালিত্য ও কন্ঠস্বরের মিষ্টতা হঠাৎ চলে যায়। সেজন্য লোকে মনে মনে তাদের অপরাধ দেয়। শৈশব ও যৌবনের অনেক দোষ মাপ করা যায়। কিন্তু এই সময়কার কোনো স্বাভাবিক ভুলও অসহ্য বোধ হয়। এই বয়সের সামান্য দোষত্রুটিও যেন বেশি মাত্রায় দেখা হয়। প্রকৃতপক্ষে এই বয়সটা যেন সব দিক থেকেই বেমানান।
১৫। “পৃথিবীর কোথাও সে ঠিক খাপ খাইতেছে না।”- কোন্ প্রসঙ্গে বক্তার এই উক্তি? উক্তিটির বক্তব্যবিষয় আলোচনা করো।
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি সংকলিত হয়েছে। আলোচ্য গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক তেরো বছরের বালক। লেখকের মতে, এই তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলের মতো বালাই আর পৃথিবীতে নেই। শৈশব ও যৌবনের অনেক দোষ-ত্রুটি মাপ করা গেলেও এই সময়ের কোনো স্বাভাবিক ত্রুটিও যেন অসহ্য লাগে। তাদের এই অসহায় অবস্থা বোঝানো প্রসঙ্গেই আলোচ্য উক্তিটির করা হয়েছে।
তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলে মনে মনে বুঝতে পারে পৃথিবীর কোথাও যেন সে ঠিক খাপ খাচ্ছে না। সকলের কাছেই সে যেন অসহ্য ও অবহেলার পাত্র। নিজের অস্তিত্ব নিয়ে সবসময় লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে থাকে। অথচ একটুখানি স্নেহ-ভালোবাসা পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত কাতর হয়। কেউ স্নেহ করতেও যেন সাহস করে না কারণ সেটা সাধারণ মানুষ প্রশ্রয় বলে মনে করে। কোনো স্বাভাবিক ভুলও অসহ্য ঠেকে অন্য সকলের কাছে। তাই পৃথিবীর কোথাও যেন তার স্থান নেই। সর্বত্রই সে বেমানান।
১৬। “এইটে ফটিকের সবচেয়ে বাজিত।”-উক্তিটির প্রসঙ্গ আলোচনা করো। ফটিকের মনে কী সবচেয়ে বেশি বাজত?
ছোটোগল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে। ফটিককে তার মামা কলকাতায় তাঁর নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন ভালোভাবে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। কিন্তু মামাবাড়িতে মামির কাছে সে স্নেহ-ভালোবাসা পায়নি। উপরন্তু মামির স্নেহহীন চোখে সে ছিল একান্ত অসহ্য। মামির দয়াহীন, স্নেহহীন ব্যবহার বর্ণনা প্রসঙ্গেই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
ফটিকের মতো তেরো-চোদ্দ বছরের ছেলেদের মতো বালাই পৃথিবীতে আর নেই। মামাবাড়িতে আসার পর ফটিকের অবস্থা এমন হয়েছিল যে, সেই অবস্থায় মায়ের বাড়ি ছাড়া যে-কোনো অপরিচিত স্থানই যেন নরক। চারিদিকের স্নেহহীন পরিবেশ তাকে গভীর ব্যথিত করে তুলেছিল। বিশেষত এই বয়সে নারীজাতির উপেক্ষা অনাদর খুব দুঃসহ বোধ হয়। মামি তাকে একেবারেই ভালোবাসত না। মামির চোখে সে ছিল এক অসহ্য বোঝা মাত্র। মামির দয়ামায়াহীন, স্নেহহীন ব্যবহার কিশোর ফটিকের কোমল উদার হৃদয়ে গভীর ব্যথা সৃষ্টি করত। এই বিষয়টাই ফটিকের মনে সবচেয়ে বেশি ব্যথা দিত।
Class XI Second Semester
বাংলা বিষয়ের ছুটি গল্পের ৫ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ৫
১৭। “দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়িয়া কেবলই তাহার সেই গ্রামের কথা মনে পড়িত।”-‘তাহার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? ‘দেয়ালের মধ্যে’ বলতে কোথাকার কথা বলা হয়েছে? গ্রামের কথা কী কী মনে পড়ত?
বাংলা ছোটোগল্পের শ্রেষ্ঠ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে ‘তাহার’ বলতে এখানে ফটিকের কথা বলা হয়েছে।
‘দেয়ালের মধ্যে’ বলতে এখানে কলকাতায় ফটিকের মামাবাড়ির পরিবেশের কথা বলা হয়েছে।
ফটিক ছিল গ্রামের উদার প্রকৃতির বুকে মুক্ত পাখির মতো। সেখানকার আকাশে বাতাসে মাঠে বাগানে, পুকুরধারে সে পেত জীবনের চলার পথের অনাবিল আনন্দ। গ্রামের পথে পথে, বাঁকে বাঁকে মুক্ত মনের ইশারা। কী অপূর্ব ছন্দ সেখানে। তাই কলকাতার প্রাণহীন ইট কাঠ পাথরের পরিবেশে সে হয়ে পড়েছিল নীড়হারা পথভোলা অছন্দিত কিশোর। তাই কেবলই গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশের নানা দিক তার মনে পড়ত এবং সে আকুল হয়ে উঠত শ্যামল সবুজ প্রাণখোলা পরিবেশের জন্য।
দমবন্ধ কিশোর বারংবার চাইত তার গ্রামের উদার পরিবেশে ফিরে যেতে। প্রকাণ্ড ধাউস ঘুড়ি নিয়ে বোঁ বোঁ শব্দে উড়ানোর সেই মাঠের কথা তার মনে হত। ‘তাইরে নাইরে নাইরে না’ উঁচুস্বরে বলতে বলতে অকর্মণ্যভাবে ঘুরে বেড়ানোর নদীতীরের কথা তার মনে পড়ত। দিনের মধ্যে যখন তখন ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটার ছোটো নদীটি তাকে বিশেষভাবে টানত। তা ছাড়া, তার বন্ধুবান্ধব, দলবল, নানা উপদ্রব, স্বাধীনতা সবই তার মনকে অস্থির করে তুলত। সর্বোপরি ফটিকের অত্যাচারী অবিচারিণী মায়ের জন্য তার মন বিশেষ ব্যাকুল হয়ে উঠত।
১৮। সর্বোপরি সেই অত্যাচারিণী অবিচারিণী মা অহনিশি তাহার নিরূপায় চিত্তকে আকর্ষণ করিত। কোন্ প্রসঙ্গে এই উত্তি। উদ্ধৃতাশেটির বিষয়বস্তু আলোচনা করো।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি সংকলিত হয়েছে। কলকাতায় মামার বাড়িতে পড়াশোনার জন্য ফটিককে তার মামা নিয়ে এসেছিলেন। পাড়াগ্রামের ছেলে ফটিকের কাছে কলকাতা ছিল চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকা পরিবেশ। তার তখন শুধুই গ্রামের কথা মনে পড়ত। গ্রামের কথা মনে পড়ার প্রসঙ্গেই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
কলকাতায় মামার বাড়িতে ফটিক পেত শুধু অনাদর ও উপেক্ষা। মামি তাকে একেবারেই স্নেহ করতেন না। স্নেহহীন পরিবেশে চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে পড়ে তার কেবল গ্রামের কথা মনে পড়ত। প্রকাণ্ড ধাউস ঘুড়ি উড়ানোর মাঠ, নদীতীর, যখন তখন সাঁতার কাটা, বন্ধুদের দলবল ইত্যাদি তাকে প্রচণ্ড টানত। বিশেষত তার অত্যাচারিণী অবিচারিণী মায়ের জন্য তার মন ব্যাকুল হয়ে উঠত। গ্রামের উন্মুক্ত উদার পরিবেশে বড়ো হওয়া এক কিশোরের মনের যন্ত্রণাই এখানে ফুটে উঠেছে। সহজ প্রাণের সহজ মাঠের সহজ পাঠের গ্রামের রাখাল বালক ফটিক। গোবর নিকানো উঠোন, শীতল পাটির স্নেহ বঞ্চিত কিশোর তাই বাণবিদ্ধ যন্ত্রণাকাতর পাখির মতোই দিনরাত গুমরে গুমরে মরত। তার গভীর মনোবেদনাই প্রস্ফুটিত এখানে।
১৯। তখন তাহার চিত্ত অধীর হইয়া উঠিত।-প্রসঙ্গটি লেখো। কার চিত্ত কেন অধীর হয়ে উঠত?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে। মামির স্নেহহীন ব্যবহার ফটিকের মনে বিশেষ কষ্ট দিত। ছেলেদের খেলার ছুটি হলে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে সে দূরের বাড়িগুলোর ছাদের দিকে চেয়ে থাকত। বালক ফটিকের মন ছুটে যেত বহুদুরের উদার প্রাকৃতিক পরিবেশে। তার মানসিক অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গেই এই উক্তি।
কলকাতায় মামার বাড়িতে পড়াশোনার জন্য এসে বালক ফটিক এক দুঃসহ পরিবেশের মধ্যে পড়েছিল। চারদেয়ালের মধ্যে আটকা পড়ে কেবলই তার গ্রামের কথা মনে পড়ত। গ্রামের খোলামেলা উন্মুক্ত পরিবেশে মাঠ, পুকুর, নদী, কাশফুল, চঞ্চলতা, পুলক, ভালোবাসা ছিল। স্কুলে সে ছিল একেবারে বেমানান। ছেলেদের খেলার ছুটি হলে সে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে দূরের বাড়িগুলোর ছাদের দিয়ে চেয়ে থাকত। সেই দুপুররোদে কোনো একটা ছাদে দু-একটা ছেলেমেয়েকে কিছু একটা খেলা করতে দেখত। সেই দৃশ্য দেখে তার মন একেবারে চঞ্চল অধীর হয়ে উঠত। গ্রাম্য বালক ফটিকের অসহায় তীব্র মানসিক যন্ত্রণাটাই এখানে ব্যস্ত হয়েছে।
২০। “বিধবা এ প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হইলেন।”- কোন্ প্রস্তাবের কথা এখানে বলা হয়েছে? কেন বিধবা সেই প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হয়েছিলেন?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক। বালকদলের সর্দার সে। বহুদিন পর তার মামা বিশ্বম্ভরবাবু তাদের বাড়িতে এসেছিলেন। ফটিকের মায়ের কাছে ফটিকের অবাধ্যতা, উচ্ছৃঙ্খলতা ও পড়াশোনায় অমনোযোগিতার কথা তিনি জানতে পেরেছিলেন। তখন তিনি ফটিককে কলকাতায় নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেন। এখানে এই প্রস্তাবের কথাই বলা হয়েছে।
ফটিকের মা বিধবা। তার দুই সন্তান ফটিক ও মাখন। ফটিক অবাধ্য, উচ্ছৃঙ্খল এবং পড়াশোনায় একেবারে অমনোযোগী। অন্যদিকে তার ভাই বাধ্য, সুশীল ও পড়াশোনায় মনোযোগী। তাই ফটিক অন্যায় না করেও মায়ের কাছে শাস্তি পেয়েছে। তার মা বিশ্বস্তরবাবুকে জানিয়েছিলেন যে, ফটিক তাঁর হাড় জ্বালাতন করে মারছে। ফটিকের মায়ের সবসময় ভয় ছিল কোনোদিন সে মাখনকে জলেই ফেলে দেয়, কি মাথাই ফাটিয়ে দেয়। অর্থাৎ কিছু একটা দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি শঙ্কিত ছিলেন। তাই তিনি সহজেই তার দাদার প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলেন।
ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর Class 11 // বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার // WBCHSE Second Semester
আরও পড়ুন – ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর