স্বধর্মের বিষয়টিকে গীতায় কীভাবে উল্লেখ করা হয়েছে |
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় স্বধর্মের উল্লেখ
স্বধর্মের বিষয়টি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় বহুলভাবে আলোচিত। কারণ, ভগবান শ্রীকৃয় এই স্বধর্মের বিষয়টির ওপরই সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনকে স্বধর্মের কথাই স্মরণ করিয়ে তাকে যুদ্ধে প্রোৎসাহিত করেছেন। কুরুক্ষেত্র নামক ধর্মযুদ্ধে ভগবান শ্রীকৃয় অর্জুনকে গাণ্ডীব পরিত্যাগ না করে, যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য নানাভাবে প্রোৎসাহিত করেছেন। যুক্তি হিসেবে তিনি স্বধর্মের বিষয়গুলিই এখানে বারবার উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, ক্ষত্রিয়ের স্বধর্ম হল যুদ্ধ করা, যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করা নয়। কুরুক্ষেত্র রণাঙ্গনে প্রিয়জন বধে ভীত হয়ে অর্জুন যখন তার প্রিয় গাণ্ডীব পরিত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করার বাসনা প্রকাশ করলেন, তখনই ভগবান শ্রীকৃয় অর্জুনকে স্বধর্ম পালনের উপদেশ প্রদান করলেন। তাঁর মতে, স্বধর্ম পালন করা প্রত্যেকটি মানুষেরই একান্ত কর্তব্য এবং এটিই হল তার একমাত্র ধর্ম। অর্জুন যেহেতু ক্ষত্রিয় কুলোদ্ভব, সেহেতু তাঁর ক্ষাত্রধর্ম অনুযায়ী যুদ্ধে প্রবৃত্ত হওয়াই হল একান্ত ধর্ম ও কর্তব্য। এরূপ ধর্ম ও কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হওয়া আদৌ কাম্য নয়। তিনি তাই অর্জুনকে বারবার এই উপদেশই প্রদান করেছেন যে, উত্থিত হও, যুদ্ধ করো এবং রাজ্যসুখ ভোগ করো। যুদ্ধ করতে করতে যদি মৃত্যুও হয়, তবে তা যুদ্ধ না করার চেয়ে অনেক বেশি শ্রেয়তর। স্বধর্ম পালনের জন্য যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণ করা, পরধর্মে আশ্রয় গ্রহণ করা অপেক্ষা অনেক বেশি শ্রেয়তর। সে কারণেই শ্রীকৃয় গীতায় অর্জুনকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন-
শ্রেয়াণ স্বধর্মোবিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ। স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ।।