শিল্পকলায় রাফায়েলের ভূমিকা কী ছিল – আজকের পর্বে শিল্পকলায় রাফায়েলের ভূমিকা কী ছিল তা আলোচনা করা হল।
শিল্পকলায় রাফায়েলের ভূমিকা কী ছিল
শিল্পকলায় রাফায়েলের ভূমিকা কী ছিল |
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, মাইকেল অ্যাঞ্জেলো এবং রাফায়েল-কে একত্রে রেনেসাঁস শিল্পকলার ত্রয়ী বলা হয়। এর মধ্যে রাফায়েল ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তিনি তাঁর সুষম, সুন্দর এবং আবেগপূর্ণ শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। রাফায়েলের শিল্পকলা ছিল রেনেসাঁস শিল্পকলার চূড়ান্ত বিকাশের প্রতীক।
দ্য স্কুল অফ এথেন্স
রাফায়েল অঙ্কিত ‘দ্য স্কুল অফ এথেন্স’ (১৫১০-১৫১১) রেনেসাঁস যুগের একটি বিখ্যাত চিত্র, যেটির দৈর্ঘ্য ৭৭০ সেন্টিমিটার। প্রাচীন পৃথিবীর ইতিহাসের যেসব মহান মানুষ আধুনিক পৃথিবীর ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন, তাঁদেরকে একই ফ্রেমে আবদ্ধ করেছেন শিল্পী রাফায়েল। চিত্রটিতে প্রাচীনকালের বিখ্যাত দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, কবি সবাই একত্রে উপস্থিত হয়েছেন। চিত্রটিতে তিনি সময়কে মূর্ত করে তুলেছেন নিপুণ হাতে।
সিস্টাইন ম্যাডোনা
রেনেসাঁস যুগে রাফায়েল ম্যাডোনার অসংখ্য ছবি এঁকেছিলেন। এর মধ্যে ‘সিস্টাইন ম্যাডোনা’ (১৫১২) ছিল সবচেয়ে বিখ্যাত। ম্যাডোনা হচ্ছেন জিশু খ্রিস্টের কুমারী মাতা মেরি। এই চিত্রটিতে পবিত্রতা ও সৌন্দর্যের এক অপূর্ব সমন্বয় দেখা যায়।
লা ভেলাটা
রাফায়েলের আরেকটি বিখ্যাত চিত্রকর্ম হল ‘লা ভেলাটা’ যেটি তিনি ১৫১৪-১৫ খ্রিস্টাব্দে সম্পন্ন করেছিলেন। নিজস্ব ভাবনায় নারীর সৌন্দর্য এবং স্বাভাবিক রূপকে তুলে ধরতে রাফায়েল ছবিটি এঁকেছিলেন। রাফায়েল পূর্ববর্তী সময়ে সাধারণত চিত্রকর্মে যেভাবে নারীকে আঁকা হত, রাফায়েল সে তুলনায় এই ছবিতে ভিন্ন পথে হেঁটেছেন।
দ্য ট্রান্সফিগারেশন
১৫২০ সালে রাফায়েল তাঁর সর্বশেষ ছবি ‘দ্য ট্রান্সফিগারেশন’ এঁকেছিলেন। এই ছবিটি তিনি বাইবেলের কাহিনি অবলম্বনে অঙ্কন করেন। ছবিটির উপরের অংশে খ্রিস্টের মানব শরীরে রূপান্তর এবং নীচের অংশে খ্রিস্টের দ্বারা শয়তানের হাত থেকে এক শিশুর মুক্তি চিত্রিত হয়েছে।
উপসংহার
রাফায়েল রেনেসাঁস শিল্পকলার একজন মুখ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার শিল্পকলা রেনেসাঁস শিল্পকলার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল। মাত্র ৩৭ বছরের স্বল্প জীবনে রাফায়েলের শিল্পকর্ম আজও সৌন্দর্য, সুষমতা এবং আবেগের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। ইতালীয় লেখক ও শিল্পী জর্জিও ভাসারি বলেছেন যে, “রাফায়েল ছিলেন রেনেসাঁসের সর্বকালের সেরা শিল্পী।”