বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো

বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো – আজকের পর্বে বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

    বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো

    বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো
    বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো

    বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা

    বিজ্ঞান চর্চার বিকাশ

    সূচনা: বাংলার ইতিহাসে উনিশ শতক এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। এই কালপর্বে বাংলায় কেবলমাত্র একটি সাংস্কৃতিক বা সাহিত্যগত নবজাগরণই ঘটেনি- বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রেও এক নতুন চেতনার সঞ্চার হয়েছিল। এককথায় বলা যায় যে, উনিশ শতকের বাংলায় শিক্ষা-সংস্কৃতি-জ্ঞানচর্চা- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি- সর্বক্ষেত্রেই উন্নতি ঘটেছিল এবং তা একই সঙ্গে। উনিশ শতকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে পাশ্চাত্য মনীষী ও ব্রিটিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা ছিল অনেকটাই। তখন বাংলা ছিল ব্রিটিশ প্রশাসনের প্রধান কর্মকেন্দ্র এবং এর মধ্যে দুটি জায়গা বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছিল-তা হল কলকাতা ও শ্রীরামপুর। সরকার এদেশে শিক্ষা ও প্রযুক্তির প্রসারে যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল এদেশে ব্রিটিশ প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য দেশবাসীর মধ্য থেকে কিছু দক্ষ ও উপযুক্ত কর্মী তৈরি করা।

    বোটানিক্যাল গার্ডেন (১৭৮৭ খ্রিঃ)

    এদেশে অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদ আছে এবং এগুলির বিশ্বব্যাপী বাজারও আছে, অথচ কলকাতা বন্দর বা তার সন্নিহিত অঞ্চলে এগুলি জন্মায় না। কোম্পানির জাহাজ বা জলযানগুলির জন্য উঁচুমানের সেগুন কাঠ দরকার। তাই এইসব গাছপালা ও মশলাপাতির জন্য কলকাতার কাছাকাছি কোনো স্থানে একটি নার্সারি তৈরির কথা চিন্তা করা হয়। এভাবেই ১৭৮৭ সালে তৈরি হল শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন। কোম্পানির এক ফৌজি অফিসার কর্নেল রবার্ট কিড হলেন এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম অবৈতনিক সুপার। এরপর এলেন ড. উইলিয়াম রকসবার্গ, যাঁকে বলা হয় ‘ভারতীয় উদ্ভিদবিদ্যার জনক’।

    সার্ভে অব ইন্ডিয়া (১৭৬৭ খ্রিঃ)

    ভারতের বুকে বিভিন্ন স্থানে তখন কোম্পানির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করেছে। শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য রাজস্ব। আদায়ের প্রয়োজন এবং এজন্য দরকার জমির পরিমাপ। এর সঙ্গে কোম্পানির কর্মচারীদের। স্থলপথ বা নদীপথে যাতায়াতের দিকটিও গুরুত্বপূর্ণ। তাই জমি জরিপের কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। জেমস রেনেল হলেন প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল।

    এশিয়াটিক সোসাইটি (১৭৮৪ খ্রিঃ)

    প্রাচ্যদেশ বা সমগ্র এশিয়া ভূখণ্ডের সাহিত্য, বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, ভূতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা প্রভৃতি চর্চার উদ্দেশ্যে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জানুয়ারি কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’। এর প্রাণপুরুষ ছিলেন কলকাতা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উইলিয়াম জোনস। হালহেদ, কোলব্রুক, উইলিয়ম কেরি, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রমুখ দেশি-বিদেশি পন্ডিতদের অবদানে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রাচ্য বিদ্যাচর্চার পীঠস্থানে পরিণত হয়। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম ভারতীয় সভাপতি (১৮৮৫ খ্রিঃ)।

    শ্রীরামপুর মিশন (১৮০০ খ্রিঃ)

    ইউরোপের নবজাগরণের মতো বাংলার জাগরণেও ছাপাখানার বিরাট “ভূমিকা ছিল। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর ‘ব্যাপটিস্ট মিশন’ ও ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হল। শ্রীরামপুর মিশনের পৃষ্ঠপোষকতায় পঞ্চানন কর্মকার বাংলা অক্ষর তৈরি করলেন। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হল ‘হিন্দু কলেজ’ এবং ‘স্কুল বুক সোসাইটি’। ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ তো ছিলই। এতগুলি বিদ্যাচর্চা প্রতিষ্ঠানের জন্য বড়ো মাপে কাগজের উৎপাদন শুরু হল এবং কারখানার জন্য যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া হল। উইলিয়ম কেরির বিপথগামী পুত্র ফেলিক্স কেরি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা-র মতো বাংলায় একটি বিশ্বকোষ প্রকাশের পরিকল্পনা করেন-নাম দেন বিদ্যাহারাবলী। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে এর প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। এতে তিনি ইংরেজি এ অক্ষরের শ্রেণিতে Anatomy-র অংশটুকু শেষ করেছিলেন মাত্র। এই গ্রন্থটিকে বাংলা ভাষায় প্রথম অস্থি ও শারীরবিদ্যার গ্রন্থ বলা যেতে পারে। এই সময়েই (১৮১৮ খ্রিঃ) মিশন থেকে প্রকাশিত হল ক্লার্ক সম্পাদিত প্রথম বাংলা তথা ভারতীয় ভাষায় সাময়িকপত্র ‘দিগদর্শন’। এতে ছাত্রদের উপযোগী বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইতিহাস ও ভূগোলের নানা তথ্যাদি প্রকাশিত হত। 

    স্কুল বুক সোসাইটি

    ‘স্কুল বুক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে এখান থেকে গণিত, প্রকৃতি বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র ও পদার্থবিদ্যা বিষয়ে বইপত্র প্রকাশিত হতে শুরু করে। জন ম্যাক ছিলেন রসায়নবিদ্যা-বিষয়ক বাংলা বইয়ের পথিকৃৎ। তাঁর বইয়ের নাম ‘ক্রিমিয়াবিদ্যার সার’ (Principle of Chemistry)। প্রকাশকাল ১৮৩৪। উইলিয়াম ইয়েটস্ রচনা করলেন ‘পদার্থবিদ্যাসার’ (Element of Natural Philosophy and Natural History)। প্রকাশকাল ১৮২৫। ১৮৩৩-এ প্রকাশিত হল তাঁর ‘জ্যোতির্বিদ্যা’ (Introduction to Astrology)। ইয়েটস ছিলেন ‘স্কুল বুক সোসাইটি’-র সম্পাদক। মিশনারী পিয়ার্সন লিখলেন ‘ভূগোল ও জ্যোতিষ’। ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে ‘স্কুল বুক সোসাইটি’ থেকে প্রকাশিত হতে লাগল পশ্নাবলী নামে একটি সাময়িকপত্র। এটি অ্যানিম্যাল এনসাইক্লোপিডিয়া বা প্রাণী বিশ্বকোষ জাতীয় একটি পত্রিকা। বিদ্যাহারাবলী-কে বাদ দিলে এটিই বাংলা ভাষায় প্রথম বিশ্বকোষীয় রচনা।

    রামমোহন রায় ও হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রিঃ)

    বাংলায় পাশ্চাত্য বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশে রামমোহন রায় ও হিন্দু কলেজ-এর অবদান অল্প নয়। রামমোহন রায় ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড আমহার্স্টকে লেখা এক পত্রে ভারতে পাশ্চাত্য জ্ঞান বিজ্ঞান, গণিত, রসায়ন, প্রকৃতি বিজ্ঞান ও শারীরবিজ্ঞান প্রবর্তনের দাবি জানান। বলা হয় যে, ছাত্রদের বিজ্ঞান শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বাংলায় দু-একটি বিজ্ঞান ও গণিতের বইও রচনা করেন। বলা হয় যে, ‘জ্যামিতি’ নামটি তাঁরই দেওয়া। অধ্যাপক ক্ষিতিমোহন সেন তাকে ‘ভারতে বিজ্ঞান চর্চার আদিগুরু’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

    সূচনাকালে হিন্দু কলেজের দুটি বিভাগ ছিল-স্কুল ও কলেজ। কলেজ বিভাগে ভাষা ও ইতিহাসচর্চার পাশাপাশি ক্রনোলজি বা কালনিরূপণ বিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, গণিতশাস্ত্র ও রসায়নবিদ্যাসহ বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষাদান করা হত।

    কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (১৮৬৭ খ্রিঃ)

    ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ব‍্যাপক পরিবর্তন আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলিতে বিজ্ঞানশিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপিত হয়। ১৯০২ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের রসায়নের অধ্যাপক প্রফুল্লচন্দ্র রায় (১৮৬১-১৯৪৪ খ্রিঃ) প্রকাশ করলেন হিন্দু রসায়নশাস্ত্রের ইতিহাস’ (প্রথম খণ্ড)। তিনি খাবারে ভেজাল নির্ণয়ের রাসায়নিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। তাঁর যুগান্তকারী আবিষ্কার মারকিউরাস নাইট্রাইট। এছাড়া পারদ সংক্রান্ত ১১টি মিশ্র ধাতু আবিষ্কার করে তিনি রসায়ন জগতে বিস্ময় সৃষ্টি করেন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চ রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে সেখানে রসায়ন বিভাগ চালু হয়। ১৯১৬-তে তিনি বিজ্ঞান কলেজে রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তাঁকে কেন্দ্র করে একদল তরুণ বিজ্ঞানীর জন্ম হয়। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রিয়দারঞ্জন রায়, সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত, নীলরতন ধর, জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্রচন্দ্র ঘোষ, বীরেশচন্দ্র গুহ প্রমুখ। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বালিগঞ্জ বিজ্ঞান কলেজে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ এবং ১৯১৯ খিস্টাব্দে প্রাণীবিদ্যা বিভাগ চালু হল। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর উদ্যোগে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজ থেকে প্রকাশিত হয় দেশের সর্বপ্রথম বিজ্ঞান পত্রিকা-Journal of Indian Chemical Society’ প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭ খ্রিঃ) বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ আবিষ্কার করলেন। তিনি প্রমাণ করলেন যে, উদ্ভিদের চেতনা ও প্রাণ আছে। বিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণার জন্য ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে নভেম্বর তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির’। তিনি নিজেই বলেন যে, এই প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য হল বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও জ্ঞানের প্রসার। এটি হল বিশ্বের প্রথম শ্রেণির গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম, যেখানে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের পরস্পর নিরপেক্ষ গবেষণার সঙ্গে বায়ো-ফিজিক্স বা বায়োলজি ও ফিজিক্সের মতো একের সঙ্গে অন্যের সম্পর্কযুক্ত বিষয়েরও গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর প্রথম পরিচালন সমিতির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নীলরতন সরকার, ভূপেন্দ্রনাথ বসুর মতো মানুষেরা যুক্ত ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান বহু কৃতী বিজ্ঞানী তৈরি করতে সক্ষম হয়।

    চিকিৎসা বিজ্ঞান

    চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও বাংলা পিছিয়ে ছিল না। কবিরাজি ও হেকিমি চিকিৎসাই যখন ভরসা, তখন 
    • ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ কর্তৃপক্ষ কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘জেনারেল হাসপাতাল’ (বর্তমানের এস এস কে এম হাসপাতাল)। 
    • এই হাসপাতাল চালাবার জন্য যে বিপুল পরিমাণ চিকিৎসকের প্রয়োজন ছিল, তা বিদেশ থেকে আনা সম্ভব ছিল না। তাই এ দেশীয় জনসাধারণের মধ্যে থেকে চিকিৎসক তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় ‘স্কুল ফর নেটিভ ডক্টরস’ (১৮২২ খ্রিঃ)। ডাক্তারি ছাত্রদের জন্য বইপত্র চাই। এ প্রয়োজন মেটালেন এই স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ ব্রেটন। তিনি গলায় দড়ি, সাপের কামড়, বাজপড়া-এসব অপঘাত-সংক্রান্ত চিকিৎসা সম্পর্কে বই প্রকাশ করলেন। 
    • ১৮৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হল ‘মেডিকেল কলেজ অব বেঙ্গল’ বা বর্তমান ‘কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ’। ১৮৩৬ সালে এখানে ডা: গুডিভ-এর তত্ত্বাবধানে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করলেন মধুসূদন গুপ্ত 
    • এই প্রতিষ্ঠান থেকে এম. ডি. ডিগ্রি লাভ করেন মহেন্দ্রলাল সরকার (১৮৩৩-১৯০৪ খ্রিঃ)। তিনি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক ছিলেন। অ্যানাটমি ও ফিজিওলজি-র ওপর তেমন কোনো গুরুত্ব না থাকায় তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার বিরোধী ছিলেন। বিভিন্ন প্রভাবে শেষ পর্যন্ত তিনি চিকিৎসার ধারা পাল্টা ফেলেন এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি হল ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কালটিভেশন অফ সায়েন্স’ (১৮৭৬ খ্রিঃ) নামক সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতবাসীর বিজ্ঞানচর্চার জন্য একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা। সূচনাপর্বে এখানে পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, জ্যোতির্বিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা, শরীরবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব- সব বিষয়েই শিক্ষাদান ও গবেষণা চলত। দেশের বহু গণ্য-মান্য মানুষ যথা- আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জগদীশচন্দ্র বসু, নীলরতন সরকার, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

    Leave a Comment