প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থানের কারণগুলি কী কী

প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থানের কারণগুলি কী কী – আজকের পর্বে প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থানের কারণগুলি কী কী তা আলোচনা করা হল।

    প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থানের কারণগুলি কী কী

    প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থানের কারণগুলি কী কী
    প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থানের কারণগুলি কী কী
    ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপে ক্যাথোলিক চার্চের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল। এই বিদ্রোহ ‘প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলন’ নামে পরিচিত। এই আন্দোলনের ফলে ক্যাথোলিক চার্চের একচেটিয়া কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ে এবং খ্রিস্টধর্মের নতুন নতুন শাখার উত্থান ঘটে। এই সময় প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের আত্মপ্রকাশের বিভিন্ন কারণ ছিল। যেমন-

    [1] ক্যাথোলিক চার্চের দুর্নীতি

    ষোড়শ শতাব্দীতে ক্যাথোলিক চার্চ দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। পোপ ও ধর্মযাজকরা বিলাসিতা ও দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন।

    [2] মুক্তির ধারণা

    প্রোটেস্ট্যান্টরা বিশ্বাস করত যে ঈশ্বরের কাছে মানুষের মুক্তি কেবল বিশ্বাসের মাধ্যমেই সম্ভব। তারা ক্যাথোলিক চার্চের ‘কর্মের মাধ্যমে মুক্তি’ ধারণার বিরোধিতা করেছিলেন।

    [3] বাইবেলের অনুবাদ

    প্রোটেস্ট্যান্টরা ল্যাটিন ভাষার পরিবর্তে স্থানীয় ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করে জনগণের কাছে ধর্মীয় জ্ঞান পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে।

    [4] পোপের কর্তৃত্ব

    প্রোটেস্ট্যান্টরা পোপের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্তৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

    [5] জাতীয়তাবাদের উত্থান

    ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপে জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। জাতীয় রাষ্ট্রগুলি ক্যাথোলিক চার্চের আন্তর্জাতিক কর্তৃত্ব থেকে মুক্তি চেয়েছিল।

    [6] রাজাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি

    রাজারা ক্যাথোলিক চার্চের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন।

    [7] ক্যাথোলিক চার্চের সম্পদের প্রতি লোভ

    ক্যাথোলিক চার্চের বিরাট সম্পদের প্রতি লোভ অনেককে প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনে যোগদান করতে প্রণোদিত করে।

    [৪] মার্চেন্টদের অসন্তোষ

    ব্যবসায়ীরা ক্যাথোলিক চার্চের অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে অসন্তুষ্ট ছিল।

    উপসংহার

    ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণগুলির সমন্বয়ে প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের উত্থান ঘটে। এই আন্দোলন খ্রিস্টধর্ম ও ইউরোপের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসে। ঐতিহাসিক উইলিয়াম ডুরান্টের মতে, “প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলন ছিল কেবল ধর্মীয় বিদ্রোহ নয়, বরং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনেরও একটি আন্দোলন।”

    Leave a Comment