পুরুষার্থরূপে অর্থের বিষয়টি ব্যাখ্যা করো |
পুরুষার্থরূপে অর্থ
অর্থ শব্দটির দ্বারা আমরা জাগতিক সেই সমস্ত বিষয়কেই বোঝাই-যা লাভ করা যায়, যা ভোগ করা যায়, যাতে অংশগ্রহণ করা যায় এবং যা আমাদের ও পরিবারের জীবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সর্বদাই প্রয়োজন হয়। মানবজীবনে অর্থের প্রয়োজন কেবল কামনাবাসনা চরিতার্থের জন্য নয়, একে আমাদের গুণাবলির সংরক্ষণের উৎস বলেও বিবেচনা করা হয়। ধর্মাচরণের জন্যও অর্থের প্রয়োজন হয়। শাস্ত্রসম্মত আশ্রমধর্ম পালনের জন্য, সংসারধর্ম পালনের জন্য, কর্তব্যসাধনের জন্য অর্থকে কামনা করতে হয়। সে কারণেই অর্থকে মানবজীবনের অন্যতম পুরুষার্থরূপে গণ্য করা হয়। অবশ্য এ-কথা ঠিক যে, অর্থ আমাদের অন্যতম কাম্যবস্তু হলেও যে-কোনো উপায়ে অর্থ উপার্জন শাস্ত্রসম্মত নয়। অর্থ কাম্যবস্তু হলেও, তাকে সৎপথে উপার্জন করতে হবে এবং সৎপথেই তার ব্যয় করতে হবে। অসৎপথে অর্থ উপার্জন এবং অসৎপথে অর্থের ব্যয় শাস্ত্রসম্মত নয় এবং তা অবশ্যই ধর্ম ও নীতিবিরোধী। অর্থ যদি অপরকে বঞ্চনা করে উপার্জিত হয় এবং নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের প্রয়োজনে ব্যয়িত হয়, তবে তাকে কখনোই পুরুষার্থরূপে গণ্য করা যায় না। সুতরাং, ন্যায়সম্মত উপায়ে অর্থ উপার্জন করে, তা নিজের ও অপরের মঙ্গলের জন্য যদি ব্যয়িত হয়-তবে সেই অর্থকেই পুরুষার্থরূপে গণ্য করা হয়।