নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো

নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো – আজকের পর্বে নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

    নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো

    নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো
    নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো
    পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে ইটালিতে রেনেসাঁস বা নবজাগরণের সূচনা হয়। নবজাগরণের যুগে ইউরোপে স্থাপত্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি ঘটে। যেমন-

    ধ্রুপদি শৈলীর পুনরুজ্জীবন

    রেনেসাঁসের স্থপতিরা ধ্রুপদি রোমান ও গ্রিক স্থাপত্যশৈলীর পুনরুত্থান ঘটান। তাঁরা স্থাপত্যে স্তম্ভ নির্মাণ এবং স্থাপত্যের সম্মুখভাগের উপরিদেশে ত্রিকোণ গঠন নির্মাণের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তাঁরা ‘ডরিক’, ‘আয়নিক’ এবং ‘করিন্থিয়ান’-এর মতো প্রাচীন গ্রিক স্তম্ভ নির্মাণশৈলীর উপাদানগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেন।

    মানবতাবাদের সাথে সঙ্গতি

    ইতালীয় মানবতাবাদী আদর্শের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে রেনেসাঁসের স্থপতিরা সমন্বয়পূর্ণ এবং নান্দনিকভাবে সুন্দর অট্টালিকা তৈরির জন্য ‘গোল্ডেন রেশিও’ (একটি বিশেষ আকৃতি)-এর উপর ভিত্তি করে স্থাপত্য নির্মাণে জোর দেন।

    রৈখিক দৃষ্টিকোণের ব্যবহার

    রেনেসাঁসের স্থপতিরা স্থাপত্যের অঙ্কন বা নকশাকে উন্নত করার জন্য রৈখিক দৃষ্টিকোণের ধারণা প্রয়োগ করেন। অঙ্কনের সময় এই দৃষ্টিকোণ কাগজের মতো দ্বি-মাত্রিক পৃষ্ঠে একটি ত্রিমাত্রিক দৃশ্য উপস্থাপনের জন্য উপযোগী। এভাবে অট্টালিকার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা ও গভীরতাকে কাগজের নকশার মধ্যে প্রথমেই এঁকে নেওয়া হত।

    গম্বুজযুক্ত কাঠামো

    ফিলিপ্পো ব্রুনেলেসচি-র মতো রেনেসাঁস যুগের স্থপতিরা উদ্ভাবনী প্রকৌশল পদ্ধতি ব্যবহার করে সুবৃহৎ গম্বুজ নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ফ্লোরেন্স ক্যাথেড্রালের গম্বুজ এরূপ গম্বুজের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

    নগর পরিকল্পনা

    রেনেসাঁসের স্থপতিরা কার্যকরী এবং দৃশ্যত আকর্ষণীয় শহর গঠনের জন্য ‘অক্ষীয় পরিকল্পনা’ প্রয়োগ করেন। এই পরিকল্পনায় একটি কেন্দ্রীয় অক্ষ বা স্থানের চারপাশে সুবিন্যস্তভাবে সড়ক ও ভবনগুলি নির্মাণ করা হয়।

    অ্যাশলার গাঁথানশৈলী

    এসময় রেনেসাঁস স্থপতিরা সুবিশাল প্রাসাদ ও ভবনগুলি নির্মাণের সময় অ্যাশলার গাঁথনশৈলীর ব্যবহার করেন। এই শৈলীতে একই আকৃতির অথবা বিভিন্ন আকৃতির পাথরকে একটির উপর আরেকটি সাজিয়ে ‘অ্যাশলার মর্টার’ (চুন, বালি ও পাথরের গুঁড়োর মিশ্রণ) দিয়ে গেঁথে দেওয়াল তোলা হত।

    উপসংহার

    রেনেসাঁসের সময় ইউরোপে স্থাপত্য নির্মাণে উপর্যুক্ত প্রচুর বৈশিষ্ট্য যুক্ত হওয়ায় স্থাপত্যের ক্ষেত্রে নবজোয়ার আসে। ফলে রেনেসাঁস স্থাপত্যশৈলী ইউরোপ ছাড়াও সমগ্র বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

    Leave a Comment