কাম কীভাবে পুরুষার্থরূপে গণ্য |
পুরুষার্থরূপে কাম
কাম শব্দের সাধারণ অর্থ হল-যৌন সুখসম্ভোগ। কিন্তু ভারতীয় নীতিশাস্ত্র কাম বলতে শুধুমাত্র যৌন সুখসম্ভোগকেই বোঝায় না, জাগতিক সমস্ত বস্তুর প্রতি আকাঙ্ক্ষাকেই কাম শব্দের দ্বারা অভিহিত করা যায়। অত্যন্ত সংক্ষেপে বলা যায় যে, একটি মানুষের যা-কিছুই কামনার বিষয়রূপে গণ্য হতে পারে, তাকেই বলা হয় কাম। সাধারণভাবে কাম শব্দটি একটি নিন্দনীয় শব্দরূপে গণ্য হয়ে থাকে, কিন্তু ভারতীয় চিন্তাধারায় কাম শব্দটি কখনোই নিন্দনীয় নয়। কারণ, ভারতীয় চিন্তাধারায়, কাম শব্দটি সীমিত ও সংযত অর্থেই গ্রহণ করা হয়েছে। এরূপ সীমিত ও সংযত কামকে মনুষ্যত্বের বিকাশের পক্ষে সহায়করূপে গণ্য করা হয়েছে। সে- কারণেই এরূপ কামকে ভারতীয় দর্শন ও নীতিতত্ত্বে সমর্থন করা হয়েছে। ভোগের মাধ্যমেই ত্যাগ সম্ভব-অর্থাৎ, সংযত ইন্দ্রিয় সুখসম্ভোগ না হলে, দৈহিক সুখের প্রতি বৈরাগ্যের সঞ্চার হতে পারে না। সেকারণেই কামকে হতে হবে সংযত ও শাস্ত্রসম্মত। অসংযত, অমিতাচার কাম মানুষকে কলঙ্কিত করে। এই ধরনের কামকে তাই কখনোই পুরুষার্থের মর্যাদা দেওয়া যায় না। একমাত্র নীতিসম্মত ও শাস্ত্রসম্মত কামাচার-ই হল অন্যতম কাম্যবস্তু তথা পুরুষার্থ।