১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখো

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখো

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখো
১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখো।

 

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সর্বশেষ ও সর্ববৃহৎ গণ আন্দোলন।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণসমূহ

এই আন্দোলনের কারণগুলি হল-

ক্রিপসের প্রস্তাবের ব্যর্থতা

ক্রিপস প্রস্তাবে ভারতকে স্বাধীনতা দানের কোনো উল্লেখ না থাকায় ভারতবাসী তা গ্রহণ করেনি, ফলে ক্রিপস প্রস্তাব ব্যর্থ হয়। এই প্রস্তাব ব্যর্থ হলে ভারতবাসী আরও একটি গণ আন্দোলনের জন্য উন্মুখ হয়ে ওঠে।

ব্রিটিশদের অত্যাচার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধরত দেশগুলিতে প্রবাসী ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচার ও নিপীড়নের ঘটনা ভারতবাসীর ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও খাদ্যসংকট

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হয়। এর ফলে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দেয় এবং ভারতীয়রা ব্রিটিশ শাসনের অবসান কামনা করে।

জনসাধারণের চেতনার জাগরণ

অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য আন্দোলন শহরবাসীদের পাশাপাশি গ্রামীণ মানুষের রাজনৈতিক চেতনাকেও জাগ্রত করেছিল, যার ফলস্বরূপ এক সর্বভারতীয় গণ আন্দোলনের পটভূমি তৈরি হয়েছিল।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব গ্রহণ

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে ঐতিহাসিক ভারত ছাড়ো প্রস্তাব গৃহীত হয়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের গ্রেফতারি

‘ভারত ছাড়ো’ প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর ৮ আগস্ট মধ্যরাতে গান্ধিজি, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, জওহরলাল নেহরু-সহ অন্যান্য কংগ্রেসি শীর্ষ নেতাদের পুলিশ গ্রেফতার করে। জাতীয় কংগ্রেসকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়।

স্বতঃস্ফূর্ত গণ আন্দোলন

৯ আগস্ট নেতাদের গ্রেফতারের খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে ভারতবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আগস্ট আন্দোলনে নারীসমাজ, ছাত্র, শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণি সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। বোম্বাই, কলকাতা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন প্রদেশে এই আন্দোলন বিস্তার লাভ করে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ব্যর্থতা

  • প্রবল ক্ষমতাশালী ব্রিটিশ সরকারের দমননীতি,
  • আন্দোলনের বিভিন্ন রুপের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব,
  • নেতৃত্ব ও সংগঠনের অভাব,
  • মুসলিম লিগ, হিন্দু মহাসভা প্রভৃতি দলের অনুপস্থিতি ইত্যাদি কারণে এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব

ব্যর্থতা থাকা সত্ত্বেও আন্দোলনের স্বতঃস্ফূর্ততা, সমাজের সমস্ত শ্রেণির যোগদান ইত্যাদি ব্রিটিশদের বুঝিয়ে দেয় যে ভারতে তাদের দিন শেষ। ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল ঔপনিবেশিক ভারতের সর্বশেষ সর্বভারতীয় আন্দোলন।

FAQs on – ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখো

ভারত ছাড়ো স্লোগান কে দিয়েছিল?
ইউসুফ মেহের আলী।
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধীকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছিল?
মহাত্মা গান্ধীকে পুনায় আগা খানের প্রাসাদে রাখা হয়েছিল।
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের অপর নাম কি?
আগস্ট আন্দোলন
ভারত ছাড় আন্দোলন শুরু হয় কত সালে?
1942 সালের 8ই আগস্ট মহাত্মা গান্ধী সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির (AICC) মহারাষ্ট্র সভায় ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূচনা করেন।

Leave a Comment