হেটাইরিয়া ফিলিকে সম্পর্কে কী জানো? |
ভূমিকা
প্রাচীন রোমান সভ্যতার প্রধান কেন্দ্র ছিল গ্রিস। পঞ্চদশ শতকে গ্রিসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তুর্কি শাসন। তুরস্কের অপশাসন থেকে মুক্ত হতে গ্রিসে জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটে। জন্ম নেয় একটি বিখ্যাত গুপ্ত সমিতি যার নাম হেটাইরিয়া ফিলিকে বা স্বাধীনতার অনুরাগী।
প্রতিষ্ঠা
১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে স্কুপাস নামক একজন গ্রিক ব্যবসায়ী সহ চারজন বণিকের উদ্যোগে কৃষ্ণসাগরের ওডেসা উপকূলে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
সদস্য
১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে এই গুপ্ত সমিতি চারজন সদস্য নিয়ে জয়যাত্রা শুরু করে। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে এই সমিতির সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় পৌনে দু-লক্ষ।
উদ্দেশ্য
এই গুপ্ত সমিতিটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল-
- পুরানো বাইজানটাইন সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
- বিধর্মী তুর্কি আধিপত্য তথা তুরস্কের হাত থেকে মুক্তি লাভ।
- গ্রিক জনগণকে জাতীয়তাবাদের ভাবধারায় দীক্ষিত করা।
- গ্রিসের স্বাধীনতা অর্জন করা।
- গ্রিসের প্রাচীন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা।
কার্যাবলী
হেটাইরিয়া ফিলিকের জনপ্রিয়তা দিনে দিনে ভীষণভাবে বাড়তে থাকে। সমগ্র গ্রিসে এই সমিতির ভাবধারা ছড়িয়ে পড়ে। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে হেটাইরিয়া ফিলিকের সভাপতি প্রিন্স আলেকজান্ডার ইপ্সি ল্যান্টির নেতৃত্বে মোলদাভিয়া ওয়ালাশিয়া মোরিয়া অঞ্চলে বিধর্মী তুর্কি আধিপত্য থেকে চ মুক্তি লাভের জন্য বিদ্রোহ শুরু হয়।
রাশিয়ার সাহায্য প্রার্থনা
গ্রিসের মুক্তির জন্য এই সমিতির সদস্যরা রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার কাছ থেকে গ্রিসের স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। বিদ্রোহ দমন-হেটাইরিয়া ফিলিকের উদ্যোগে বিদ্রোহ শুরু হলে মেটারনিখ্ এর তীব্র বিরোধিতা করলে রাশিয়া সাহায্য দানে আগ্রহী হলেও শেষ পর্যন্ত তা দিতে পারেনা। ফলে খুব সহজেই তুরস্কের সেনাবাহিনী এই বিদ্রোহ দমন করতে সমর্থ হয়।
উপসংহার
গ্রিক জাতীয়তাবাদের উন্মেষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল হেটাইরিয়া ফিলিকে। পরবর্তীকালে রাশিয়ার হাতে তুরস্কের পরাজয় হলে অ্যাড্রিয়ানোপোলের সন্ধির (১৮২৯) মাধ্যমে গ্রিক তুর্কি আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।