হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল -দৃশ্যটির বিবরণ দাও
“হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল।” -দৃশ্যটির বিবরণ দাও। |
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ রচিত ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উক্ত উদ্ধৃতিটি রয়েছে। রাঢ়বঙ্গের একটি গ্রামে দুর্যোগপূর্ণ শীতকালে একদিন এক থুথুড়ে বুড়ি এসে হাজির হয়। আগন্তুক বুড়ি বাজারের পাশের বটতলাতে আশ্রয় নেয়।
দুর্যোগ কেটে গেলে মানুষজন দেখল যে বুড়ি বটতলায় পড়ে রয়েছে, কোনো সাড়াশব্দ নেই। দু-একজন বুড়িকে পরীক্ষা করে দেখল যে বুড়ি মারা গেছে। গ্রামের লোকজন চৌকিদারের কথামতো বুড়িকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে গেল নদীর চড়ায়। ফিরে এসে তারা অপেক্ষা করতে লাগল কখন শকুন এসে বুড়ির শরীর খুবলে খাবে। কিন্তু পরিবর্তে এক ভিন্ন দৃশ্য তাদের চোখে পড়ে।
নদীর চড়া যেদিকে সেদিক থেকে মাঠ পেরিয়ে একটা চ্যাংদোলা আসে বাজারের দিকে। বাজারে পৌঁছোলে দেখা যায় বুড়ির মড়াটাই মুসলমান পাড়ার লোকেরা তুলে নিয়ে এসেছে। কেউ কেউ আরবি মন্ত্রও পড়ে ধর্মীয় আচার মেনে। যারা বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে এসেছিল তারা ছিল হিন্দু, তারা রেগে গিয়ে জানতে চায়- ‘কী ব্যাপার?’ অন্য পক্ষ উত্তর দেয় যে বুড়ি মুসলমান তাই মুসলিম মতেই তার অন্ত্যেষ্টি করার জন্য তারা তাকে তুলে এনেছে। উভয়পক্ষের যুক্তি প্রমাণ চলল কিন্তু সমাধান হল না, বরং বুড়ির ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি হল।